ঢাকা, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শীতের প্রকোপে বিপর্যস্ত কচুয়াবাসী

প্রকাশনার সময়: ১২ জানুয়ারি ২০২৪, ১৭:৫৬

শীতের প্রকোপ বাড়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ। এতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে পুরো চাঁদপুরের কচুয়াবাসী। পৌষ ও মাঘ দুমাস শীতকাল। পৌষ মাস শেষ হতে আর মাত্র দুদিন বাকি। পুরো মাঘ মাসও রয়ে গেছে, শীতের তীব্রতা দীর্ঘায়িত হওয়ার শঙ্কা জাগাচ্ছে। হঠাৎ কনকনে শীত অনুভব হওয়ায় সবচেয়ে বেশি দুভোর্গে পড়েছে ছিন্নমূল, অসহায় ও খেটে খাওয়া মানুষ। খড়-কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন তারা।

বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) রাতে পৌর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শিশু ও বৃদ্ধ পুরুষ- মহিলা খড়, গাছের ডাল পাতা পুড়িয়ে আগুন পোহাচ্ছে। বয়োবৃদ্ধ অলি উল্যাহ, জমির উদ্দিন ও জিসান আহমেদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কয়েকদিন ধরে শীত বাড়ায় ও ঘন কুয়াশার সাথে বাতাস থাকায় শরীরের হাড় কাঁপুনি দিয়ে উঠে, তাই আগুন জ্বালিয়ে শরীর গরম করছি।

চায়ের দোকানদার শহীদ মিয়া জানান, শীত বাড়ায় লোকজন ঘর থেকে বের হতে চায় না, তাই বেচাকেনাও কম। আগে প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা বিক্রি করতাম। আজ ৩-৪ দিন ধরে শীত বেড়ে যাওয়ায় ২ হাজার টাকা বিক্রি করতে হিমশিম খাচ্ছি।

দিনমজুর গৌতম সরকার জানান, ‘গত কয়েকদিন ধরে অতিরিক্ত শীত পড়ার কারণে জ্বর-সর্দি ও কাশি হয়েছে। কাজকাম করতে পারছি না। এমনিতে কাজকাম নেই। বৌ-পোলাপান নিয়ে কিভাবে সংসার চলবো সেই চিন্তায় আছি। ১ হাজার টাকা ধার নিয়ে ঔষধ কিনে এনেছি ‘

কৃষক শহিদুল ইসলাম বলেন, শীতের সাথে ঘন কুয়াশার কারণে ধানের চারা মরে যাচ্ছে। তার পাশাপাশি সবজি মাঠের ফসল ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হচ্ছে। পোকার উপদ্রব বেড়ে যাচ্ছে। জমি বর্গা নিয়েছি। ধানের চারা মরে গেলে কিভাবে ধান চাষ করবো খুব চিন্তায় আছি। কয়েক দিন ধরে সকাল থেকে সূর্যের মুখ দেখা যাচ্ছে না। শীত পড়ার কারণে ঘরের ছেলে মেয়েদের জ্বর ও সর্দি, কি করবো ভেবে পাচ্ছি না।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঘুরে দেখা যায়, শীত বাড়ার কারণে শিশুরাই বেশি বিপাকে পড়েছে। ঠান্ডাজনিত কারণে তাদের শ্বাস কষ্ট, জ্বর, রোগীর সংখ্যাই বেশি। তার পাশাপাশি বয়োবৃদ্ধরা শ্বাসকষ্টজনিত কারণে হাসপাতালে আসছে চিকিৎসা নিতে।

উপজেলা আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. মো. সোহেল রানা জানান, হঠাৎ করে শৈত্যপ্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় শিশু ও বয়োবৃদ্ধরা বিপাকে পড়েছে। হাসপাতালে আসা রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা দিয়ে নেবুলাইজার ব্যবহার করার পরামর্শ, শীতের ভারী পোশাক পরিধান ও প্রয়োজন ছাড়া ঠান্ডায় ঘর থেকে না বাহির হওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মেজবাহউদ্দিন জানান, অতিরিক্ত ঠান্ডা ও ঘন কুয়াশার কারণে ধানের চারা নষ্ট না হওয়ার প্রতিরোধে প্রতিদিন সকালে চারার উপর লাঠি অথবা দড়ি টেনে কুয়াশা সরিয়ে দিতে হবে। তার পাশাপাশি জমিতে পানি ধরে রাখতে হবে। একদিন পরপর সে পানি সরিয়ে ফেলে নতুন পানি দিতে হবে সাথে ছত্রাকনাশক ওষুধ স্প্রে করতে হবে।

নয়া শতাব্দী/এসএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ