কয়েকদিন ধরে হিমেল হাওয়া ও ঘন কুয়াশায় লালমনিরহাটসহ উত্তরাঞ্চলে শীতের প্রকোপ বেড়ে বেড়েছে। এতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গত দুইদিন দুপুর পর্যন্ত সূর্যের দেখা মিলছে না। হিমেল বাতাস আর ঘন কুয়াশায় হাড় কাপাঁনো শীতে জবুথবু হয়ে পড়েছে হতদরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষ। শিশু ও বৃদ্ধদের ঠান্ডাজনিত রোগ সর্দি, কাশি ও হাঁপানিজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। শ্রমজীবী পরিবারের মধ্য বয়সী ও বৃদ্ধরা কর্মহীন হয়ে পড়েছে।
জেলার বিভিন্নস্থান ঘুরে দেখা যায়, চরাঞ্চলসহ নদী তীরবর্তী এলাকাজুড়ে নেমে এসেছে কনকনে শৈত্যপ্রবাহ, একই সঙ্গে ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে উত্তর জনপদ। ঘন কুয়াশার কারণে যানবাহনগুলোকে দুপুর পর্যন্ত হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে। ফলে তীব্র শীত আর এক টানা ঘন কুয়াশার কারণে সাধারণ মানুষের জীবনযাপন একরকম অচল হয়ে পড়েছে।
লালমনিরহাটের খুনিয়াগাছ চর এলাকার মোসলেম মিয়া জানান, আমরা খেটে খাওয়া মানুষ। প্রতিদিন কাজ না করলে আমাদের সংসার চলে না। গত কয়েকদিন যাবত ঘন কুয়াশা ও প্রচণ্ড ঠান্ডা বাতাসের কারণে আমরা কাজে যেতে পারছি না। কাজে গেলেও ঘন কুয়াশা ও ঠান্ডার কারণে হাত পা অবশ হয়ে আসছে। এ অবস্থায় কিভাবে যে সংসার চালাবো বুঝতে পারছি না।
রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, মঙ্গলবার সকাল ৮টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সোমবার যা ছিল ১০ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ অবস্থায় দিনের বেলা সূর্যের দেখা না মেলায় সন্ধ্যায় তাপমাত্রা আরো কমে যাচ্ছে। ফলে সন্ধ্যার পরে আরো বেশি শীত অনুভূত হয়।
লালমনিরহাট সিভিল সার্জন নির্মলেন্দু রায় জানান, ঘন কুয়াশা তীব্র শীতের কারণে গত কয়েকদিন ধরে সর্দি, কাশি ও হাপানিজনিত রোগের রোগী বেশি আসছে। আগের তুলনায় হাসপাতালেও রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগ ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ জানান, লালমনিরহাট জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ চলমান রয়েছে। এ ছাড়াও নতুন করে আরো কম্বলের বরাদ্দের চিঠি পাওয়া গেছে। এগুলো হাতে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শীতার্ত মানুষের মাঝে বিতরণ করা হবে।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ