মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় নির্বাচনের দিন ‘একটি গুলি করলে দশটি গুলি’ করার হুমকি দেওয়া ইউপি চেয়ারম্যান সাহিদ মোহাম্মদ লিটনকে গ্রেফতার করে অস্ত্র উদ্ধারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুক্তার হোসেন।
শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার ভবেরচর ইউনিয়নের হাসপাতাল রোড সংলগ্ন নিজ বাসভবনে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মুক্তার হোসেন বলেন, আমরা মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী হাজী ফয়সাল বিপ্লবের সমর্থক। নির্বাচন কমিশনের বেঁধে দেওয়া নিয়মের মধ্যে থেকে আমরা নির্বাচনী প্রচারণার কাজ শেষ করেছি। তবে নির্বাচনী প্রচারণার শেষ দিকে ভবেরচর ইউনিয়নের লক্ষীপুরা গ্রামে জনসভা করে প্রতিপক্ষের কেউ একটি গুলি করলে দশটি গুলি করার হুমকি দেন ভবেরচর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাহিদ মোহাম্মদ লিটন। শত শত লোকের সামনে প্রকাশ্যে কসম খেয়ে তার গুলি করার বিষয়টি এটাই প্রমাণ করে যে, তার কাছে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে এবং অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারে ইউপি চেয়ারম্যান সাহিদ মোহাম্মদ লিটনের বিরুদ্ধে অনতিবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
এর আগে নিজ বক্তব্যে ইউপি চেয়ারম্যান সাহিদ মোহাম্মদ লিটন বলেন, ‘আমি দেখে নেবো, কার গায়ে কত শক্তি। আমি দেখে নেবো বিপ্লবের কত শক্তি! একজন সন্ত্রাসকে আমরা গজারিয়া আসতে দেবো না। ৭ তারিখে ইনশাল্লাহ দেখিয়ে দেবো কার কতো ক্ষমতা আছে। আমরা অসহায় না। যদি একটা গুলি গজারিয়াবাসীর গায়ে লাগে, তাহলে একজনকেও রাখবো না। আপনারা লক্ষ্মীপুরাবাসী খোদার কসম, মসজিদের সামনে আল্লাহর কসম, কাউকে আমি ছাড় দেবো না। একটা গুলি চললে দশটা গুলি চলবে’।
একই বক্তব্যে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী ফয়সাল বিপ্লবকে সন্ত্রাসী উল্লেখ করে ইউপি চেয়ারম্যান সাহিদ মোহাম্মদ লিটন বলেন, ‘বিপ্লবের সন্ত্রাসী বাহিনী মোল্লাকান্দিতে আমাদের এক ভাইকে খুন করেছে।’
সংবাদ সম্মেলনে মুক্তার হোসেন বলেন, তদন্তাধীন একটি বিষয় নিয়ে এমন স্পর্শকাতর মন্তব্য করা দেশের প্রচলিত আইনের পরিপন্থী। পাশাপাশি একজন প্রার্থীর বিরুদ্ধে মিথ্যাচার নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন, যা ভোটের মাঠে সাধারণ ভোটারদের প্রভাবিত করতে পারে।
তিনি আরও বলেন, ভবেরচর ইউপি চেয়ারম্যান সাহিদ মোহাম্মদ লিটনের দুর্নীতি নিয়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় অসংখ্য সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। একাধিক দুর্নীতির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে তদন্ত কার্যত্রম চলমান। আমাদের ধারণা, দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ টাকা-পয়সার মালিক হয়েছেন তিনি। সেই অবৈধ টাকা ব্যবহার করে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন। এর আগেও তার ইউনিয়নে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে গিয়ে তার লোকজন কর্তৃক মারধরের শিকার হয় আমাদের দুজন কর্মী। এ সময় নির্বাচনী প্রচারণার কাজে ব্যবহৃত মাইক এবং মাইকের মেশিন ভাঙচুর করা হয়। নির্বাচনী প্রচারণার শেষ দিনে ইউপি চেয়ারম্যান সাহিদ মোহাম্মদ লিটনের গুলিবর্ষণ করার হুঙ্কার এটাই প্রমাণ করে যে, তিনি এবং তার লোকদের কাছে অনেক অস্ত্র রয়েছে, যা উদ্ধার করে তাদের আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন।
নয়া শতাব্দী/এনএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ