জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী) আসনে তুমুল প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে চলছে শেষমুহুর্তের নির্বাচনী প্রচারণা। ভোটের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে উৎকণ্ঠা। একদিকে ভোট বর্জনের দাবিতে স্থানীয় বিএনপির মিছিল-লিফলেট বিতরণ, অন্যদিকে মাঠ দখলে রাখতে আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে ইতোমধ্যেই একাধিক সংঘর্ষ, হামলা-মামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে মাঠে তৎপরতা নেই ছোটগুলোর এমপি প্রার্থীদের।
নির্বাচন অফিসের তথ্য মতে, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে ভোটযুদ্ধে মূল আলোচনায় আছেন তিনজন।
তারা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান হেলাল এবং আওয়ামী লীগের অপর দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান (ঈগল) ও তেজগাঁও থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ মো. আবদুর রশীদ (ট্রাক)।
এ ছাড়া অন্য চারজন প্রার্থী হলেন- জাতীয় পার্টির আবুল কালাম আজাদ (লাঙ্গল), তৃণমূল বিএনপির মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম টুকন (সোনালি আঁশ), জাসদের গোলাম মোস্তফা জিন্নাহ্ (মশাল) ও বিএনএফের তারিখ মাহাদী (টেলিভিশন)।
আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র দুই প্রার্থী ছাড়া অন্য চারজনের তেমন কোনো তৎপরতা নেই মাঠে। এরমধ্যে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম টুকনের কয়েকটি স্থানে কিছু পোস্টার ও হঠাৎ মাইকিং এবং জাসদের প্রার্থী গোলাম মোস্তফা জিন্নাহর কয়েকটি স্থানে গণসংযোগ ও পোস্টার দেখা গেছে। তবে তাদের সঙ্গে কর্মীবাহিনী বা কোনো মিছিল-সমাবেশ করতে দেখা যায়নি। এ ছাড়া একেবারে মাঠে নেই জাতীয় পার্টির প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ এবং বিএনএফের তারিখ মাহাদী।
জানা গেছে, ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনটি মহাজোট থেকে জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয়া হয়েছিল। তখন এমপি হয়েছিলেন জাতীয় পার্টির সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক মামুনুর রশীদ জোয়ার্দার। দশম সংসদ নির্বাচনের ধারাবাহিকতার আশায় একাদশ ও দ্বাদশ নির্বাচনেও জাতীয় পার্টির একাধিক নেতা মহাজোটের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। শেষ পর্যন্ত উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আবুল কালাম আজাদকে এবার দল থেকে মনোনয়ন দিলেও আসনটি মহাজোটের জন্য ছেড়ে না দেয়ায় মাঠে নেই নেতাকর্মীরা।
এ ছাড়া বিগত সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী মোখলেছুর রহমান বস্তুর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে নৌকার প্রার্থী পক্ষে কাজ করায় আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে নানা সমালোচনা রয়েছে। সবমিলিয়ে এ আসনে স্বাধীনতার পর মোট দুইবার দলের এমপিত্ব পাওয়া এ আসনে জাতীয় পার্টির তৎপরতা না থাকায় হতাশ তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
এ ব্যাপারে আবুল কালাম আজাদ বলেন, আসনটি মহাজোট থেকে জাতীয় পার্টির জন্য চাওয়া হয়েছিল, কিন্তু চেষ্টা করেও লাভ হয়নি। তবে দলীয় প্রতীকের পক্ষে মাঠে তাদের প্রচারণা চলছে দাবি করে তিনি বলেন, যাদের পোস্টার লাগানোর দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল, তারা সমস্যা করেছে। কিছু পোস্টার লাগানো হয়েছিল, কিন্তু ছিঁড়ে ফেলেছে।
অপরদিকে, তৎপরতা না থাকলেও জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী তৃণমূল বিএনপি। এ দলের প্রার্থী মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম টুকন উপজেলা যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। একসময় তিনি বিএনপির ডাকসাইটের নেতা ছিলেন।
তিনি বলেন, সরিষাবাড়ীতে বিএনপির বিশাল ভোটব্যাংক রয়েছে। নৌকা প্রতীক বনাম আওয়ামী লীগের অপর দুই প্রার্থীর প্রতিযোগিতার আড়ালে তৃণমূল বিএনপির জয় লাভ করবে বলে তার দাবি।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ