টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে লোকমান ফকির মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ হাসান আলীর বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এতে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ এবং একই সাথে ৬ মাসের বাধ্যতামূলক ছুটি দিয়েছে কলেজ পরিচালনা কমিটি।
সোমবার (১ জানুয়ারি) দুপুরে কলেজের উপাধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যক্ষ গোলাম রব্বানী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত ৩১ ডিসেম্বর কলেজের সভাপতি খন্দকার মশিউজ্জামান রোমেল স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে অধ্যক্ষ হাসান আলীকে এই কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) ও ৬ মাসের ছুটির আদেশ প্রদান করেন। নোটিশ প্রাপ্তির আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তাকে কলেজের সভাপতি বরাবর লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়েছে, নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ৩০ ডিসেম্বর কলেজের গর্ভনিং বডির এক সভায় ২নং সিদ্ধান্ত মোতাবকে অধ্যক্ষ মো. হাসান আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়। গঠিত ৩ সদস্য তদন্ত কমিটি প্রতিবেদনে তার অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।
উল্লেখযোগ্য অনিয়মের মধ্যে ২০২৩ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণ ও ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী ভর্তিতে সরকার নির্ধারিত ফি বহির্ভুত অতিরিক্ত অর্থ আদায়, গেল বছরের আগস্টে রেজুলেশন মোতাবেক ৬টি মেহেগনি এবং ১টি আকাশমনি গাছ কেটে কলেজে কাজ করার কথা উল্লেখ থাকলেও সেই গাছগুলো ১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা বিক্রি করে মাত্র ৪৫ হাজার টাকা কলেজ তাহবিলে জমা দিয়ে বাকি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। যা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত বেসরকারি কলেজ শিক্ষকদের চাকরির শর্তাবলী রেজুলেশন (সংশোধিত) ২০১৯- এর ১৭ ধারায় অথবা নৈতিক ঙ্খন বিষয়ক ৫, ৬ ও ৭ এর আওয়াভুক্ত শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ সব বিষয়ে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থ নেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে নোটিশ দেওয়া হয়।
এ ছাড়া বিনা ছুটিতে কলেজের কোনো শিক্ষককে দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিয়ে গত ১৭ ডিসেম্বর তিনি ভারত ভ্রমণে যান। পরবর্তীতে তিনি গত ২৭ ডিসেম্বর কলেজে যোগদান করেন। এ সব ঘটনায় ১০ কর্মদিবসের মধ্যে তাকে লিখিতভাবে জবাব দিতে বলা হয়েছে। এর আগে অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তের জন্য ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল কলেজ পরিচালনা কমিটি। সেই তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৮ ডিসেম্বর জরুরি সভায় কলেজ গভর্নিং সভায় তার নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির জন্য এমন সিদান্ত নেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।
এ সব অভিযোগে বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ হাছান আলী বলেন, ‘অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন। বাধ্যতামূলক ছুটি বলতে কিছু নেই। একটি মহল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। কারণ দর্শানোর নোটিশ ও ছুটির চিঠি পেয়েছি। উল্লেখিত কার্যদিবসের মধ্যে যথাযথ জবাব দেওয়া হবে।’
এ ব্যাপারে কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি খন্দকার মশিউজ্জামান রোমেল বলেন, ‘অধ্যক্ষ হাছান আলীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ উঠায় ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত ২৮ ডিসেম্বর জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভাতে অধ্যক্ষকে ৬ মাসের জন্য বাধ্যতামূলক ছুটি প্রদান করা হয়েছে। সেই সাথে ১০ কর্মদিবসের মধ্যে অধ্যক্ষকে জবাব দিতে বলা হয়েছে।’
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ