রাজশাহীতে বই উৎসবের উদ্বোধন করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের (রাসিক) মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।
সোমবার (১ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় নগরীর শহীদ মামুন মাহমুদ পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজে বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে এ বই উৎসবের উদ্বোধন করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার। এতে কলেজটির অধ্যক্ষ মো. গোলাম মাওলাসহ আরএমপির উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেন রাসিক মেয়র। বই পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে শিক্ষার্থীরা।
নতুন বই হাতে নিয়ে সিরাজুম মুনিরা নামে এক শিক্ষার্থী বলে, বই পেলাম, ডায়েরি পেলাম। অনেক ভালো লাগছে। পড়ালেখা করবো। তৃতীয় শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী বলে, বই পেয়ে ভালো লাগছে।
অভিভাবকরা জানান, নতুন বই পেয়ে পড়ালেখায় মনোযোগী হবে তাদের সন্তানরা। সুশিক্ষা নিয়ে দেশপ্রেম ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে এ শিক্ষার্থীরা কাজ করবে বলেও প্রত্যাশা করছেন অভিভাবকরা।
এর আগে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদানকালে শুরুতেই সকলকে ইংরেজি নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানান, রাসিক মেয়র ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী বিশ্বের মধ্যে একটা অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। দেশের নাগরিকদের আগামী দিনে দেশ পরিচালনা করবে, দেশকে আরও উপরে নিয়ে যাবে, সেই সমস্ত শিশুদের মধ্যে নতুন বই বিতরণ; সে যেখানেই থাকুক, পার্বত্য চট্টগ্রামই হোক, স্বন্দিপ-হাতিয়া, ভোলা দ্বীপ এলাকায় হোক অথবা আমাদের সমতল ভূমিতে হোক, সর্বত্রই কিন্তু এ দিনটিতে বই পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।’
রাসিক মেয়র বলেন, ‘এই উদাহরণ কোথাও কোনো দেশে আছে বলে আমি জানি না, নেই বলেই আমি জানি। সেই কাজটি তিনি করেছেন এবং তিনি প্রমাণ করেছেন। যেটি বলা হত, বাংলাদেশ দরিদ্র দেশ, বাংলাদেশ কী পারবে, অনেকে নানারকম সংশয় প্রকাশ করেছিলেন- এটা অতিরিক্ত খরচ, অহেতুক সরকার করে ইত্যাদি নানা নেগেটিভ কথা যারা সবসময় বলেন, নেতিবাচক কথা তারা বলেছিলেন। কিন্তু তাদের এখন সেই মুখটা বন্ধ হয়ে গেছে। কারণ দুর্যোগে হোক, দুঃসময়ে হোক, কিছু সময় হোক, সরকার কিন্তু বছরের প্রথম দিনই এই পাঠ্যপুস্তুকগুলি বাচ্চাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে নানারকম বাধা সত্ত্বেও। আশা করি, এই বইগুলি যারা পাচ্ছে, সেই আমাদের সন্তানের মতো যারা এখানে আছে, তারা এই বইগুলো পেয়ে আনন্দে তাদের মনটা ভরে যাবে।’
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘তোমাদের ভাগ্য কত ভালো যে, নতুন নতুন বই যার পাতা উল্টালেই এক ধরণের গন্ধ পাওয়া যায়। এই গন্ধটা অদ্ভুতভাবে মানুষকে আকৃষ্ট করে। সেটা আমরা যদিও পাইনি, তোমরা পাচ্ছো। তোমরা ভালো কিছু পাও, সেই আশা আমরা করি। সরকার তোমাদের জন্য এই খরচগুলো করছে; এটা কিন্তু তোমাদের বাবা, তোমাদের দাদা ও যারা দেশের ট্যাক্স দেন, তাদের অর্থে কিন্তু এগুলো করা হচ্ছে। এটা করা হচ্ছে এই কারণে যে, তোমরা পড়াশোনা করে মানুষের মতো মানুষ হও।’
সর্বশেষ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উদ্দেশে খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘শুধু জিপিএ ফাইভ বা যেটাকে গোল্ডেন এ প্লাস বলি আমরা, এই গোল্ডেন পাওয়ার জন্যই লড়াই করতে হবে- আমি এটা কখনো বিশ্বাস করি না। অনেক অভিভাবক হয়ত আমার সঙ্গে আমার বোনোরা যারা আছেন এখানে, হয়ত একমত হবেন না; কিন্তু আমি মনে করি, এ প্লাস পাওয়ার চাইতেও যদি প্রকৃত অর্থে সে শিক্ষাটা পায় যে, এই সমাজের জন্য, মানুষের জন্য প্রত্যেকটি প্রাণির জন্য আমাদের কী করণীয়- সেটাই কিন্তু আসল শিক্ষা।’
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ