ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

দেশের সর্ববৃহৎ সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স চট্টগ্রাম মুসলিম ইনস্টিটিউট

প্রকাশনার সময়: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:২১ | আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:২৪

২৮১ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে চট্টগ্রাম মুসলিম ইনস্টিটিউট সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স। এটি দেশের অন্যতম বৃহৎ সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে নতুন গতি আসবে। ২৮ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্সটি উদ্বোধন করেন। চট্টগ্রাম মুসলিম ইনস্টিটিউট হল ও বিভাগীয় গণগ্রন্থাগার সংস্কার করে পরিধি বাড়ানোর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল চট্টগ্রামের সংস্কৃতি কর্মীসহ সব মহলের।

অবশেষে সেই স্বপ্ন এখন বাস্তবরূপ লাভ করছে। ২৮১ কোটি ৩৯ লাখ টাকায় সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের অধীনে আগের জরাজীর্ণ ঐতিহ্যবাহী মুসলিম হল ভেঙে করা হয়েছে আটতলা নতুন ভবন। এর সঙ্গে লাগোয়া পুরোনো গণগ্রন্থাগার (পাবলিক লাইব্রেরি) ভেঙে করা হয়েছে ১৫ তলা ভবন। দুটি স্থাপনাই এখন নগরীর অন্যতম দৃষ্টিনন্দন স্থাপনায় পরিণত হয়েছে।চট্টগ্রাম মুসলিম ইনস্টিটিউট সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স বা সাংস্কৃতিক বলয় প্রকল্প ২০১৭ সালের নভেম্বরে একনেকে পাস হয় ।

২৩২ কোটি ৫২ লাখ টাকার এ প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ার পাশাপাশি বৃদ্ধি পায় বরাদ্দও। বরাদ্দের পরিমাণ বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ২৮১ কোটি ৩৯ লাখ ৪৮ হাজার টাকায়। ইতোমধ্যে এ প্রকল্পের ব্যয় হয়েছে ২০৭ কোটি ৭১ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। আরও পড়ুনকোতোয়ালিতে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি আটকপ্রকল্পের আওতায় ১৫২১২.২৮ বর্গফুট জায়গায় ১৫ তলা বিশিষ্ট ১টি চট্টগ্রাম বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগার, ১৪৪৯৩.২২ বর্গফুট আয়তনের ১টি মাল্টিপারপাস হল ও সেমিনার হলের পাশাপাশি ৭৪১৩.৬০ বর্গফুট আয়তনের জনসমাগম স্থান তৈরি করা হচ্ছে।

এরই মধ্যে শেষ হয়েছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পুনঃসংস্কার কাজ। মূল সড়কের দুই পাশে যাতায়াতে তৈরি হয়েছে টানেল। গণগ্রন্থাগার ভবনের নিচতলায় থাকছে সার্ভিস সেকশন, যেখানে বই বাছাই, ফিউমিগেশন হবে। গ্রাউন্ড ও প্রথম ফ্লোরে থাকছে অফিস,২য় ফ্লোরে সেমিনার ও মিটিং রুম, প্রতিবন্ধীদের জন্য বরাদ্দ থাকবে তৃতীয় ফ্লোর। চতুর্থ ও পঞ্চম ফ্লোরে জেনারেল লাইব্রেরি, ষষ্ঠ ফ্লোরে চিলড্রেন লাইব্রেরি,সপ্তম ফ্লোরে পেপার লাইব্রেরি, অষ্টম ফ্লোরে রেফারেন্স লাইব্রেরি, নবম ও দশম ফ্লোরে সায়েন্স লাইব্রেরি, ১১তম ফ্লোরে ট্রেনিং ইউনিট, ১২তম ফ্লোরে আইসিটি ইউনিট, ১৩তম ফ্লোরে স্পেস ফর ফিউচার প্রোভিশন, ১৪তম ফ্লোরে গেস্ট হাউজ নির্মাণ করা হচ্ছে।এছাড়া ৪০ থেকে ৫০ আসন বিশিষ্ট সভাকক্ষ ও সেমিনার কক্ষ, ১৫০ আসন বিশিষ্ট একটি বড় সেমিনার কক্ষ নির্মাণ হবে।

আইসিটি লাইব্রেরিতে থাকবে ৩০টি কম্পিউটার। থাকবে ১টি রেস্ট হাউজ, ২টি ভিআইপি কক্ষ ও সাধারণ ডরমেটরি কক্ষ।সংশ্লিষ্টরা জানান, ১৯২৫ সালে চট্টগ্রামের কিছু সংস্কৃতি ও সমাজসেবীর উদ্যোগে চট্টগ্রাম নগরীর প্রাণকেন্দ্রে চট্টগ্রাম মুসলিম ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামের রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নানা আয়োজন হয়েছে এখানে। ১৯৫৯ সালে সরকার মুসলিম ইনস্টিটিউট অধ্যাদেশের মাধ্যমে হলটি অধিগ্রহণ করে। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, হলের অনেক পরিবর্তন হয়েছে নতুন প্রকল্পে। কাজের অগ্রগতি নিয়ে গণপূর্ত অধিদপ্তর চট্টগ্রাম-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী রাহুল গুহ বলেন, ‘সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্সের শহীদ মিনার ও টানেলের অংশের কাজ শেষ। সেটি এখন দৃশ্যমান। পাশাপাশি মুসলিম ইনস্টিটিউটের প্রধান লাইব্রেরি ভবন থেকে শুরু মূল ভবনের কাজও শেষ। ইতোমধ্যে লাইব্রেরির কার্যক্রম চালু হয়েছে। সবমিলিয়ে প্রকল্পের ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।

শুধুমাত্র কিছু কাজ বাকি। তারমধ্যে এসি, রঙ, একেস্টিকে কাজ রয়েছে। এসব বিদেশ থেকে আমদানি করতে হচ্ছে। যার জন্য একটু সময় লাগছে। যেকোন মুহূর্তেই তার কাজও শেষ হবে। তবে নতুনরূপে সজ্জিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত করা হয়েছে।’

নয়াশতাব্দী/আরজে

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ