জামালপুরের সরিষাবাড়ী থানা হাজতে আনোয়ার হোসেন (৪৫) নামে এক আসামির মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
নিহত আনোয়ার উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের চাপারকোনা গ্রামের আব্দুস সামাদ দুলুর ছেলে।
ঘটনাটি হত্যাকাণ্ড বলে অভিযোগ করেছে নিহতের পরিবার। তবে হার্টস্ট্রোকজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। চিকিৎসক জানিয়েছেন, তাকে হাসপাতালে আনার আগেই মৃত্যু হয়েছে।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, আনোয়ার হোসেন সরিষাবাড়ী থানার এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন। মঙ্গলবার বিকেলে তাকে নিজ গ্রাম থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর তাকে থানা হাজতে রাখা হয়। মধ্যরাতে হঠাৎ তিনি রহস্যজনক কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে পুলিশ তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মেহেদি হাসান জানান, আনোয়ার হোসেনকে হাসপাতালে আনার পর অক্সিজেন দেয়া হয় এবং ইসিজি করা হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাকে জীবিত পাওয়া যায়নি। তাকে হাসপাতালে আনার আগেই মৃত্যু হয়েছে বলা যায়।
সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মুশফিকুর রহমানের বক্তব্য জানতে মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি দাবি করেন, আনোয়ারকে থানায় আনার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তারপর হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান।
আনোয়ার হোসেনের বাবা আব্দুস সামাদ ধুলু অভিযোগ করে বলেন, মারামারি সংক্রান্ত একটি মামলায় তার ছেলে আসামি ছিলেন। বিকেল ৩টার দিকে বাদীর উপস্থিতিতে চাপারকোনা বাজার থেকে তার ছেলেকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। বাদীর যোগসাজশে পুলিশ নির্যাতন করায় তার ছেলে মারা গেছেন বলে তিনি জানান।
নিহতের স্ত্রী আলপনা বেগম অভিযোগ করেন, পুলিশ সুস্থ মানুষ ধরে নিয়ে গেছে। থানার নেওয়ার পর সর্বশেষ সন্ধ্যায় তার সাথে ফোনে কথা হয়। তখনও তার স্বামী ভালো ছিলেন। রাত ১২টায় হঠাৎ খবর আসে যে, তার স্বামী স্ট্রোক করেছে।
নিহতের বোন নুরজাহান বেগম অভিযোগ করেন, তার ভাই সুস্থ ছিল, পুলিশ ধরে নিয়ে নির্যাতন করেছে, তাই তিনি মারা গেছেন। ভাই হত্যার বিচার দাবি করেন তিনি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শহিদুর রহমান জানান, দোলভিটি গ্রামের ফিরোজ মিয়ার সাথে গত ১০ ডিসেম্বর চাপারকোনা বাজারে আনোয়ার হোসেনের মধ্যে মারামারি হয়। এ ঘটনায় ফিরোজের ভাই সোহেল রানা বাদী হয়ে ২৫ ডিসেম্বর থানায় মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় আনোয়ার আসামি ছিলেন। মঙ্গলবার বিকেলে তাকে গ্রেফতার করা হয়, রাত ১২টার দিকে তিনি স্ট্রোক করেন।
পরিবারের হত্যার অভিযোগটি সঠিক নয় বলে দাবি করে তিনি বলেন, আনোয়ারকে হাসপাতালে নেয়ার সময় পরিবারের লোকজন সাথেই ছিল।
নয়া শতাব্দী/এসএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ