ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

সীতাকুণ্ডে বিএনপি নেতাসহ তিন খুন

প্রকাশনার সময়: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:৪৮ | আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৪:১০

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় এক রাতে তিন খুনের ঘটনা ঘটেছে।

রোববার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা থেকে উপজেলার বারৈয়াঢালা সোনাইছড়ি ও সর্বশেষ রাতে জঙ্গলছলিমপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খুনের ঘটনায় ওই তিন এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।

উপজেলার জঙ্গল সলিমপুর এলাকায় ব্যাডমিন্টন খেলাকে কেন্দ্র করে ইমরান নামে ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরকে রাত ২টায় খুন করা হয়। তার সহপাঠীরা তাকে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। তিনি জঙ্গল সলিমপুর এলাকার ৩নম্বর সমাজের সবুজের ছেলে। তাদের মুল বাড়ি কুমিল্লার দাউদকান্দি।

এর আগে রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণ সোনাইছড়ি এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন সওদাগর (৩২) দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে আহত হলে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে ভাটিয়ারী বিএসবিআরএ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয়রা জানায়, তিনি সোনাইছড়ি গামারীতল এলাকার আবুল হাসেম মাস্টার বাড়ির আফাজ উল্লাহর ছেলে ও থানির শিল্পপতি মানিকের চাচাতো ভাই।

এর সাড়ে তিন ঘণ্টা আগে সন্ধ্যা ৭টা দিকে উপজেলার বারৈয়াঢালা ইউনিয়নের পশ্চিম লালানগরের মৌলভীপাড়া এলাকায় পূর্ব শত্রুতার জেরে নুরুল মোস্তফা ওরফে বজল (৫০) নামে এক গ্রাম সর্দারকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়। নিহত বজল একই এলাকার অবসরপ্রাপ্ত সুবেদার মুজিবুল হকের ছেলে।

এদিকে কুপিয়ে হত্যা মামলায় জড়িত যুবক তৌহিদুল ইসলাম ওরফে তৌহিদ নিহত বজলের মামাতো ভাই। তার বিরুদ্ধে ডাকাতির ঘটনায় ১৮টির বেশি মামলা রয়েছে বলেও পুলিশ নিশ্চিত করেছে।

স্থানীয় পুলিশ জানায়, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে সন্ধ্যায় তৌহিদুল ইসলাম ১৫-২০ জন অনুসারী সন্ত্রাসী নিয়ে বজলের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে বজলের ডান হাত শরীর থেকে কেটে ফেলে। তারপর মৃত্যু নিশ্চিত করতে বুকে গুলি করে। ঘটনার পর চারদিক থেকে লোকজন জড়ো হলে হামলাকারী নূর মোস্তফা ও তার অনুসারীরা পালিয়ে যায়।

পুলিশ আরও জানায়, নিহত নুরুল মোস্তফার আপন মামাতো ভাই তৌহিদুল ইসলাম। দীর্ঘদিন ধরে তাদের মধ্যে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এছাড়াও তৌহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে গ্রাম্য সালিশ অনুষ্ঠিত হয়। সেই সালিশে তাকে গ্রামে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়। এতে নুরুল মোস্তফার ওপর ক্ষিপ্ত হন তৌহিদুল। সন্ধ্যায় তাকে একা পেয়ে এবং কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে।

এদিকে সীতাকুণ্ড উপজেলা বিএনপি নুরুল মোস্তফা ওরফে বজলকে তাদের দলীয় নেতা দাবি করে খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শান্তি দাবি করেছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুর উদ্দিন রাশেদ জানান, হামলার পর আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালের বিভাগে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু হাসপাতালে আনার আগেই বজলের মৃত্যু হয়। তার ডান হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এবং বুকে গুলির চিহ্ন রয়েছে।

সীতাকুণ্ড মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল উদ্দিন জানান, ঘটনাটি জানাজানি হলে উভয় স্থানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পূর্ব পারিবারিক বিরোধের জের ধরে নুরুল মোস্তফা ওরফে বজলকে হত্যা করা হয়েছে। ঘাতক তৌহিদের বিরুদ্ধে ১৮টির বেশি ডাকাতি ও হত্যা মামলা রয়েছে। বাকি দুটি হত্যার তদন্ত চলছে।

তিনি জানান, মরদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে।

নয়া শতাব্দী/এসএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ