ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভোটের মাঠে বাবা-মেয়ে

প্রকাশনার সময়: ২২ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৬:৩৭

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ময়মনসিংহ-৬ ফুলবাড়িয়া আসনে সকলের চোখ এখন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী টানা ৫ বারের এমপি মো. মোসলেম উদ্দিনের দিকে। এর বাইরে আছেন আরও ৬ জন প্রার্থী। এর মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন একমাত্র নারী সেলিমা বেগম সালমা। তিনি নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ৫ বারের এমপি মো. মোসলেম উদ্দিনের মেয়ে। সালমার প্রতীক ঈগল।

বাবা-মেয়ে একই দলের রাজনীতি করলেও এখন মনোনয়ন ইস্যুতে ভোটের মাঠে একে অপরের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। বাবা ও মেয়ে প্রতিদ্বন্দিতা করায় জেলায় আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রূপ নিয়েছে।

এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী প্রবীণ রাজনীতিক মো. মোসলেম উদ্দিন নৌকা প্রতীক নিয়ে টানা ৫ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তার কন্যা স্বতন্ত্র প্রার্থী সেলিমা বেগম সালমা নব্বইয়ের দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামছুন নাহার হলের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

জানা গেছে, এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য প্রবীণ রাজনীতিবিদ মো. মোসলেম উদ্দিন, তার ছেলে এবং মেয়েসহ একই পরিবার থেকে তিনজন আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চান। শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন পান পিতা মোসলেম উদ্দিন। ছেলে বাবার পক্ষে অবস্থান নিলেও কন্যা সেলিমা বেগম সালমা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঈগল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামেন।

বাবার বিপরীতে কেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন এমন প্রশ্নে সেলিমা বেগম সালমা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে ফুলবাড়িয়ার সাধারণ মানুষের সেবা দিয়ে আসছি। এবার আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নের জন্য আবেদন করেছিলাম। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। তবে এই নিয়ে বাবার সঙ্গে কোনও সমস্যা হচ্ছে না। ভোটারদের আকৃষ্ট করতে ভোটের মাঠে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছি। দলীয় নেতাকর্মী ও ভোটারদের মনোযোগ আকর্ষণে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে এ বিষয়ে চেষ্টা করেও নৌকার প্রার্থী ৫ বারের এমপি মো. মোসলেম উদ্দিনের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে যে ৬ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করছেন তারা হলেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মো. মোসলেম উদ্দিন এমপি (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী সেলিমা বেগম সালমা (ঈগল), সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. আব্দুল মালেক সরকার (ট্রাক), জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহফুজুর রহমান বাবুল (লাঙ্গল), জাতীয় পার্টি নেতা (রওশন এরশাদ পন্থি) ডা. খন্দকার রফিকুল ইসলাম (কেটলী), কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রার্থী প্রিন্সিপাল আব্দুর রশিদ (গামছা)।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় অনেক নেতা-কর্মী জানান, বাবা-মেয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় বেকায়দার মধ্যে রয়েছে দলীয় নেতাকর্মীরা। উপজেলাজুড়েই এ আলোচনা চলছে, ভোট চাইতে গিয়ে ভোটারদের প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মালেক সরকার বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সারাদেশে ব্যাপক উন্নয়ন হলেও আমাদের উপজেলায় দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন হয়নি বর্তমান দলীয় সংসদ সদস্যের সময়ে। তিনি দলীয় ও পারিবারিক কোন্দলে জর্জরিত। তার কাছে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা সবসময় অবমূল্যায়িত হয়েছে, যে কারণেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে হয়েছে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইমদাদুল হক সেলিম বলেন, নির্বাচনে সবারই অধিকার আছে অংশ নেওয়ার। দলীয় মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করার সুযোগ আওয়ামী লীগ সভাপতি করে দিয়েছেন। তবে যার জনপ্রিয়তা বেশি সেই নির্বাচনে জয়লাভ করবেন।

নয় শতাব্দী/এসএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ