ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

বগুড়া- ৩ আসনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আবারও হতাশ!

প্রকাশনার সময়: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৯:২২

বারবার চেয়েও কখনও নৌকার প্রার্থী পায়নি বগুড়া- ৩ আসনের আওয়ামী লীগ সমর্থকরা। অনেক জল্পনা কল্পনার পর এবার আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা প্রতীক দেওয়া হয়েছিল সিরাজুল ইসলাম খান রাজুকে। তিনি আদমদীঘি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার হাতে নৌকার বৈঠা রাখেন আওয়ামী লীগ। আর এতেই হতাশ হয়েছেন তার সমর্থকরা।

জানা যায়, আদমদীঘি-দুপচাঁচিয়া দুটি উপজেলা নিয়ে সংসদীয় আসন ৩৮, বগুড়া-৩। এই আসনে দীর্ঘ দিন থেকে আওয়ামী লীগের কোনো এমপি নেই। বারবার চেয়েও বঞ্চিত হয়েছেন এলাকাবাসী। সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী চেয়েছিলেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ। এরই প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড সিরাজুল ইসলাম খান রাজুকে দলের মনোনয়ন দেয়। আর এই জন্য তাকে আদমদীঘি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদটি ছেড়ে দিতে হয়েছে। রাজু খানকে নৌকার মনোনয়ন দেওয়ায় স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে আশার আলো দেখা দেয়। কিন্তু এবারও আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। জোটগত ভাবে নির্বাচনের জন্য গত রোববার আসনটি জাতীয় পার্টির অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম তালুকদারকে জোটের প্রার্থী করা হয়েছে।

দলের সিদ্ধান্তে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিতে হয়েছে সিরাজুল ইসলাম খান রাজুকে। ফলে আবারও হাতছাড়া হয়ে গেল নৌকার এমপি প্রার্থী। আর এতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০১ সালে নির্বাচনে নৌকার দলীয় মনোনয়ন পেয়েও এই আসনে আওয়ামী লীগ নেতা আনসার আলীর মৃধার মনোনয়ন বাতিল করে প্রতীক বরাদ্দের এক দিন আগে বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদানকারি মেজর জেনারেল (অব.) গোলাম মওলাকে দলীয় মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসন থেকে মহাজোটের প্রার্থী ছিলেন, আ্যড. নুরুল ইসলাম তালুকদার। এই আসনে জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক অবস্থা ভালো না থাকায় ২০১৮ সালের নির্বাচনে জোট প্রার্থী হওয়ার কারণে স্থানীয় আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টির প্রার্থী নুরুল ইসলামের পক্ষে কাজ করে তাকে জয়ী করেন। এবারের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেতে সিরাজুল ইসলাম খান রাজু ছাড়াও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অজয় সরকার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য নাহিদ সুলতানা তৃপ্তি, অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন, অ্যাডভোকেট তবিবর রহমান তবি, ফেরদৌস স্বাধীন ফিরোজসহ অনেকেই দলের কাছে আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড সিরাজুল ইসলাম খান রাজুকে নৌকা মাকার মনোনয়ন দেয়।

উল্লেখ, এই আসনে একাধিক স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচন করবেন। এদের মধ্যে খান সাইফুল্লাহ আল মেহেদী বাঁধন, অজয় সরকার। এছাড়া অন্যান্যদের মধ্যে জাসদের আব্দুল মালেক, তৃনমুল বিএনপির অ্যাড, আব্দুল মোত্তালেব, অফজাল হোসেন, ফেরদৌস স্বাধীন ফিরোজ, আরফিন পারভিন, তাজ উদ্দীন মন্ডল, নজরুল ইসলাম প্রার্থী।

আদমদীঘি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান চম্পা বলেন, আমাদের নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যা ভালো মনে করেছেন, সেটাই করেছেন। তবে আমরা আশাবাদী ছিলাম এই আসনে নৌকা প্রতীক থাকলে আমরাই জয়ই হতাম।

আদমদীঘি উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য রোকনুজ্জামান রুকু বলেন, আমরা আওয়ামী লীগ করি। অথচ বারবার জাতীয় পার্টি প্রার্থীর পক্ষে কাজ করে তাকে জয়ী করতে হয়। এটা আমাদের একটা দুর্ভাগ্যের বিষয়। প্রয়োজনে আমরা দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করে যাবো।

আদমদীঘি উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান পিন্টু বলেন, আসনটি আবারও শরিক দলকে ছেড়ে দেওয়ায় আমরা হতাশ। বিএনপির শাসনামলে এখানকার আওয়ামী লীগকে যে নির্যাতন সহ্য করেছে সারা দেশের আওয়ামী লীগকে সেই অত্যাচার সহ্য করতে হয়নি। অথচ বার বার আমাদের জনগণের কাছে অগ্রহণযোগ্য ব্যক্তির জন্য কাজ করে তাকে জয়ী করতে হয়।

নয়াশতাব্দী/জেডএম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ