ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

অতঃপর নোটিশ পাওয়া সেই শিক্ষক বিয়ের পিঁড়িতে

প্রকাশনার সময়: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৩:৫২ | আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৩:৫৭

অবশেষে বিয়ে করলেন টাঙ্গাইলের গোপালপুরের সাজানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রনি প্রতাপ পাল। শুক্রবার রাত ১১টার দিকে কালিহাতী উপজেলার মগড়া গ্রামের সত্যপালের মেয়ে স্বর্না পালের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের অনুষ্ঠানে দু’পক্ষের পরিবারের লোকজন ছাড়াও রনির স্কুলের শিক্ষক ও স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

সম্প্রতি ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে বিয়ে করতে রনি প্রতাপ পালকে নোটিশ দেন প্রধান শিক্ষক। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক চাঞ্চল্যে সৃষ্টি হয়েছিল।

জানা যায়, চলতি বছরের ২৬ জুলাই সাজানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম তার প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক রনি প্রতাপ পালকে ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে বিয়ে করতে নোটিশ দেয়।

নোটিশে বলা হয়, ‘আপনি গত ৬/১১/২০১৬ তারিখ এই বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক (হিন্দু ধর্ম শিক্ষা) পদে যোগদান করেন। যোগদানের পর অবগত হলাম, আপনি অবিবাহিত রয়েছেন। পরবর্তী সময়ে আপনাকে বারবার মৌখিকভাবে তাগিদ দিয়েছি বিবাহ করার জন্য। কিন্তু অতীব দুঃখের বিষয়, যোগদানের কয়েক বছর অতিবাহিত হওয়ার পরও আপনি বিবাহ করেননি। বিদ্যালয়টিতে সহশিক্ষা চালু রয়েছে। অভিভাবকগণ অবিবাহিত শিক্ষক নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেন। সুতরাং বিদ্যালয়ের বৃহত্তর স্বার্থে নোটিশপ্রাপ্তির ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে বিবাহকার্য সম্পন্ন করে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার জন্য আপনাকে বিশেষভাবে নির্দেশ প্রদান করা হলো।’

বিষয়টি জানাজানি হলে ব্যাপক সমালোচনা ঝড় উঠে। নিয়মবহির্ভূত বিয়ের নোটিশ দেওয়ায় ও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে একাধিক সরকারি তদন্ত চলমান রয়েছে। প্রধান শিক্ষকের বহিষ্কার চেয়ে ছাত্র, ছাত্রী, অভিভাবক, সাবেক শিক্ষকরা ও স্থানীয়রা মানববন্ধন কর্মসূচিও পালন করে। গত ২২ সেপ্টেম্বর সহকারী শিক্ষক রনি ও স্বর্নার আর্শীবাদ সম্পন্ন হয়। লগ্ন অনুসারে শুক্রবার রাতে জাঁক জমকভাবে রনির বিয়ে সম্পন্ন হয়। দুই পক্ষের সম্মতিতে রনি ও স্বর্নার বিয়ে ঠিক করা হয়। তারা দুজনই খুশি। হিন্দুধর্মের ধর্মীয় রীতির অনুসরণ করে বিয়ে করতে হয়।

শিক্ষক রনির পরিবারের লোকজন জানায়, সনাতন ধর্মালম্বীদের বিয়ের ক্ষেত্রে অনেক কিছুই যাচাই-বাচাই করতে হয়। রনির বাবাও মারা গেয়েছিল। যার কারণে সব মিলিয়ে রনির বিয়ে করতে দেরি হয়েছিল। দু’পক্ষের সম্মতিতে তাদের বিয়ে দেয়া হয়েছে।

শিক্ষক রনি প্রতাপ পাল বলেন, কোনো চাপে নয় পরিবারের পছন্দেই বিয়ে করতে এসেছি। বিয়েতে কেউ হস্তক্ষেপ করতে পারে না। পারিবারিক সমস্যাসহ বিভিন্ন কারণে বিয়ে করতে দেরি হয়। মূলত প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম ঢাকতে আমাকে বিয়ে করার জন্য নোটিশ দেয়া হয়।

নোটিশ দেয়ার আগে থেকেই বিয়ের জন্য পাত্রীর সন্ধান খুঁজছিলেন পরিবারের লোকজন। আমার পছন্দ মতো পাত্রী পাচ্ছিলাম না।

শিক্ষক রনি প্রতাপ পালের স্ত্রী স্বর্না পাল বলেন, আমি রনি স্যারকে বিয়ে করে অনেক খুশি। ২০১৬ সালে সহকারী শিক্ষক পদে ওই বিদ্যালয়ে যোগ দান করেন রনি প্রতাপ পাল। সবার কাছে আর্শিবাদ চেয়েছেন এই দম্পতি।

নয়া শতাব্দী/এসএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ