ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারতীয় গরু আতঙ্কে রাত জেগে খেত পাহারায় কৃষক

প্রকাশনার সময়: ১২ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৩:২৬

সন্ধা থেকে ভোর পযর্ন্ত ভারতীয় গরু বাংলাদেশে পাচার করে নিয়ে আসছে উভয় দেশের পাচারকারীরা। তারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে নিয়ে আসার সময় সীমান্ত ঘেষা ফসলি জমিগুলোর ব্যাপক হারে ক্ষতি করছেন বলে অভিযোগ স্থানীয় কৃষকদের।

পাচারকারীরা সড়কপথ ব্যবহার না করে ফসলের খেত দিয়ে এসব গরু পাচার করেন। এতে ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। কৃষকরা সীমান্ত এলাকায় ধান, সবজি, ভুট্টা ও তামাকের চাষ করেন। ডাঙ্গোয়ালদের (পাচারকারী) কারণে সীমান্ত এলাকার কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত, বিশেষ করে শীতকালে ডাঙ্গোয়ালদের আতঙ্কে থাকতে হয় সীমান্ত এলাকার কৃষকদের। তাই ডাঙ্গোয়ালদের হাত থেকে ফসল রক্ষার জন্য রাত জেগে খেত পাহারা দিচ্ছেন কৃষকরা। এ ব্যাপারে কৃষকরা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কাছে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুর্গাপুর সীমান্তে ডাঙ্গোয়াল সিন্ডিকেটের এক সদস্য জানান, শুধু দুর্গাপুর সীমান্ত নয়, লালমনিরহাট জেলার প্রায় ২২টি সীমান্ত রুটে প্রতিরাতে ভারতীয় গরু বাংলাদেশে আসছে। ভারতীয় গরু পাচার করার সময় বিএসএফের ভয়ে কোনটি ফসলের খেত আর কোনটি সড়ক সেটা তাদের খেয়াল থাকে না।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক নজরুল ইসলাম জাানান, ডাঙ্গোয়ালরা ভারতীয় গরু পাচারের কারণে গত এক সপ্তাহে এক বিঘা জমির ফসল নষ্ট করেছে। গভীর রাতে ডাঙ্গোয়ালরা ভারতীয় গরু নিয়ে ফসলের খেত দিয়ে দিকবিদিক ছুটাছুটি করে। ‘সীমান্তে আমার আরও ৫ বিঘা জমির ফসল নিয়ে চিন্তায় রয়েছি। তাই রাতে এসে ফসলের খেত পাহারায় থাকতে হচ্ছে।

কৃষক রমজান আলী জানান, তিনি সীমান্তে দুই বিঘা জমিতে তামাক চাষ করেছেন। ডাঙ্গোয়ালদের কারণে প্রায় এক বিঘা জমির ফসল প্রায় নষ্ট হয়েছে। বাকি এক বিঘা জমির ফসল নিয়ে চিন্তিত রয়েছেন তিনি। এ ব্যাপারে তারা বিজিবির কাছে অভিযোগ করেছেন, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। ডাঙ্গোয়ালরা দুর্ধর্ষ, এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে প্রতিবাদও করতে পারছেন না বলেও অভিযোগ তাদের।

দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মেহেরুল ইসলাম জানান, তিনি ডাঙ্গোয়ালকে ফসলের খেত দিয়ে গরু নিতে নিষেধ করেছেন কিন্তু তারা শুনছে না। বিজিবি ক্যাম্পেও বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। তবে ক্যাম্প কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে প্রতিকার ব্যবস্থা নিতে কৃষকদের আশ্বস্ত করেছেন।

লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের দুর্গাপুর বিওপি ক্যাম্পের কমান্ডার নায়েক সুবেদার মশিউর রহমান জানান, কৃষকরা ক্যাম্পে অভিযোগ করেছেন। জনবল সংকট থাকায় সবসময় সবদিকে টহল ব্যবস্থা জোরদার সম্ভব হচ্ছে না। ডাঙ্গোয়ালরা খুবই দুঃসাহসী ও চালাক-চতুর। বিজিবির নজরদারি ফাঁকি দিয়ে তারা ভারতীয় গরু পাচার করেন। কৃষকদের ফসল যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে জন্য চিহ্নিত রুটগুলোতে টহল ব্যবস্থা বৃদ্ধি করা হবে বলেও জানান তিনি।

নয়া শতাব্দী/এসএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ