বীরাঙ্গনা রেজিয়া বেগম (৭৭)। মুক্তিযুদ্ধের সময় হানাদার বাহিনীর পাশবিক নির্যাতনের জীবন্ত সাক্ষী এ নারী আজও স্বীকৃতি পাননি মুক্তিযোদ্ধার। শুধু তাই নয় সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সুযোগ-সুবিধাও পাননি। মানসিক ভারসাম্যহীন রেজিয়া বেগম জীবনের শেষ মুহূর্তে এসে ভিক্ষাবৃত্তি করে অনাহার-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন।
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট পৌরসভার খন্দকারটোলা গ্রামের বাসিন্দা রেজিয়া বেগম। তিনি ছাড়াও স্বাধীনতার ৫২ বছরেও স্বীকৃতি পাননি এই উপজেলার আরও ৩ জন বীরাঙ্গনা। তারা হলেন- সাহেরা বেগম, জয়নব বেগম এবং রওশনআরা। দেশের জন্য ত্যাগী এ নারীরা আজও অসহায় অবস্থায় একটু সামাজিক সম্মান আর স্বীকৃতির আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
উপজেলার সচেতনমহল বলছেন, মুক্তিযুদ্ধে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ বীরাঙ্গনারা। কিন্তু তাদের যুদ্ধটা দেশ স্বাধীনের ৫২ বছর পরেও শেষ হয়নি। স্বাধীন দেশে এই বীরাঙ্গনাদের রাষ্ট্রীয় সম্মাননা জরুরি। তাদের বাসস্থান ও স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা করা দরকার। দেশ স্বাধীনের ৫২ বছর পরেও এই বীরঙ্গনারা রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি পেলো না, স্বীকৃতির জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয়, অনুরোধ করতে হয়, কিন্তু কেন? এ সমাজের, রাষ্ট্রের কি কোনো দায়বদ্ধতা নেই?
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের ৭৩তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০২১ সালের ২৬ জুন গেজেট প্রকাশ করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এতে ৪১৬ জন বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পান। পরবর্তী সময়ে এ সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৩৮ জনে। তবে বর্তমানে এ প্রক্রিয়া কোনো অজানা কারণে এখন থমকে আছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঘোড়াঘাট উপজেলা প্রাক্তন ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মজিবর রহমান বলেন, তাদের দুরাবস্থা দেখে ঘোড়াঘাট উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করে আমরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যথাযথ কতৃপক্ষের মাধ্যমে অনেক দিন আগে মন্ত্রাণালয়ে পাঠিয়েছি এবং তাদের স্বীকৃতিসহ সরকারি সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছি।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ