কিশোরগঞ্জ-১,(কিশোরগঞ্জ-হোসেনপুর) আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন জমা দিয়েছেন একই পরিবারের তিন প্রার্থী। তারা বাংলাদেশের অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট সৈয়দ নজরুল ইসলামের পরিবারের সদস্য।
আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী স্বাধীন বাংলাদেশের অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট সৈয়দ নজরুল ইসলামের কন্যা ডা. জাকিয়া নূর লিপি বুধবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে জেলা রির্টার্নিং কর্মকর্তার নিকট মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তাকে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মনে করেন তারই আপন ভাই প্রধানমন্ত্রীর সাবেক সামরিক সচিব মেজর (অব.) সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলাম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এই আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। তারপক্ষে বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে বড় ছেলে সৈয়দ নাফিস নজরুল রাইয়ান মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। এ আসন থেকে তিনিও আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র কিনলেও অবশেষে বাবার পক্ষে তিনি জমা দিয়েছেন।
এছাড়াও এ আসন থেকে ডা. জাকিয়া নূর লিপির চাচাতো ভাই জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটুও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৭০ সালে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে সৈয়দ নজরুল ইসলাম বিজয়ী হয়েছিলেন। ১৯৮৬ সালে আওয়ামী লীগ প্রার্থী অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান বিজয়ী হয়েছিলেন। এরপর ১৯৮৮ সালে এরশাদের শাসনামলে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আলমগীর হোসেন বিজয়ী হয়েছিলেন। ১৯৯১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী আতাউর রহমান আওয়ামী লীগ প্রার্থী (বর্তমানে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা) অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমানকে হারিয়ে এ আসনে বিজয়ী হয়েছিলেন। ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এ আসন থেকে বিজয়ী হয়েছেন। রাজনীতির শুদ্ধতম পুরুষ হিসেবে সারা বাংলায় পরিচিত সৈয়দ আশরাফ ২০১৯ সালে মৃত্যুবরণ করায় তার আসনটি শুন্য হয়। ফলে ২০১৯ সালে তারই সহোদর বোন আওয়ামী লীগের টিকিটে ডা. ডাকিয়া নূর লিপি বিজয়ী হন।
অদ্যাবধি এ আসনটি সৈয়দ পরিবারের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একই পরিবারে তিনজন প্রার্থী হিসেবে আবিভূত হওয়ায় আওয়ামী লীগের কর্মীরা পড়েছে বিপাকে। এরই মধ্যে নির্বাচনের আগ মুহূর্তে তাদের প্রত্যেকের নির্বাচনী প্রস্তুতি বিভিন্ন সভা-সমাবেশে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে স্পষ্টত দ্বিধাবিভক্তি দেখা গেছে। শেষ পর্যন্ত তিনজন ভোটের মাঠে থাকলে ভোটারদের মাঝে সৈয়দ পরিবারের প্রতি একটা বিরক্তিভাব চলে আসতে পারে মনে করেছেন অনেকে। তাই এ আসনের আওয়ামী লীগ কর্মীরা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
নয়া শতাব্দী/এসএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ