ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লক্ষ্মীপুরের ১০ হাজার নদীভাঙা মানুষ পাচ্ছে গণকবর ও মসজিদ

প্রকাশনার সময়: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২০:৩২

লক্ষ্মীপুরের নদীভাঙা ১০ হাজার মানুষকে গণকবর ও মসজিদ দিচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ। পুলিশের মহাপরিদর্শক আইজিপি ডা. বেনজীর আহমেদ সরকারি অর্থায়নে এ কার্যক্রম হাতে নিয়েছে বলে জানা গেছে।

এ ছাড়া লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশের সহযোগিতায় নদীভাঙা ১০ হাজার একটি গণকবর ও মসজিদের সুফলভোগী বলে জানানো হয়। শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মোঃ আনোয়ার হোসেন লক্ষ্মীপুর এসে ওই গণকবরের চলতি কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।

পরিদর্শনে এসে পুলিশের ডিআইজি জানান, চলতি মাসে পুলিশের সর্বোচ্চ কর্মকর্তার উপস্থিতিতে গণকবরটি স্থানীয়দের মাঝে হস্তান্তর করা হবে।

এসময় লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ সুপার ড. মোঃ কামরুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিমতানুর রহমান, জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আজিজুর রহমান, সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জসীম উদ্দিনসহ জেলা পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের কর্মকর্তারাসহ, ভবাণিগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম রনি, লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোরের সাংবাদিকরাসহ স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন।

“মৃতদের কবর দেয়া নিয়ে দশহাজার নদীভাঙা মানুষ দুঃচিন্তায়” এমন শিরোনামে গণমাধ্যমে একটি ভিডিও সংবাদ প্রচার করা হয়। সংবাদটি নজরে আসে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক -আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদের। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তীতে পুলিশের আইজিপির নির্দেশে লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ খোঁজ খবর নিয়ে ওই ভাগ্যহত মানুষের জন্য কবরের জমি কেনাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ।

এর কয়েক দিনের মধ্যে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের চর মনসা গ্রামে সাড়ে উনত্রিশ শতক জমি কেনা হয়। এরপর ওই জমিতে মাটি ভরাট এবং বাউন্ডারি দেয়াল তুলে দেয়া হয়। কবরের পাশে তৈরি করা হয়েছে মসজিদ, লাশ ধোয়ার ঘর, স্থাপন করা হয়েছে নলকূপ। কবরে আসার কাঁচা পথটিও ইটের সলিং করে দেয়া হয়েছে। কবর দেখা শোনার জন্য স্থানীয়দের মধ্যে একটি পরিচালনা কমিটিও তৈরি করা হয়েছে। চলতি মাসে পুলিশের সর্বোচ্চ কর্মকর্তার উপস্থিতিতে গণকবরটি স্থানীয়দের মাঝে হস্তান্তর করা হবে।

স্থানীয়ভাবে জানা যায়, লক্ষ্মীপুরে মেঘনা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে রামগতি এবং কমলনগর উপজেলার প্রায় অর্ধেক অংশ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। নতুন করে আরও বহু এলাকায় নদী ভাঙছে। নদীতে ভিটে মাটি হারানো অন্তত দুই হাজার পরিবারের দশ হাজার অসহায় মানুষ রামগতি-লক্ষ্মীপুর সড়কের ভবানীগঞ্জ থেকে তোরাবগঞ্জ এলাকা পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার এলাকায় রাস্তার পাশে ঘর তুলে কোনোমতে আশ্রয় নিয়েছে।

এইসব পরিবারের কেউ মারা গেলে কবর দেওয়ার জন্য কোনো কবরস্থান নেই। তাই তারা যেখানে-সেখানে লাশ দাফন করছেন। পরিবারের কোনো সদস্যের মৃত্যু হলে কবর দেওয়া নিয়ে সবসময় দুঃচিন্তায় ভুগতে হচ্ছিল তাদের। পরিজনকে হারিয়ে শোকের পরিবর্তে উল্টো কবর দেওয়ার দুর্ভাবনা পোহাতে হতো তাদের। তাদের এ খবরটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে সেখানে পুলিশের আইজিপির পক্ষ থেকে একটি গণকবর ও মসজিদ তৈরি করে দেওয়া হয়েছে।

পুলিশের এ মহতী উদ্যোগের জন্য বাংলাদেশে পুলিশের আইজিপিসহ লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন জেলার সর্বজন। এতে ব্যাপক সমাদৃত হয়েছেন পুলিশ বাহিনী।

নয়া শতাব্দী/এম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ