ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রশ্নফাঁসসহ দুর্নীতির অভিযোগ

প্রকাশনার সময়: ২৭ নভেম্বর ২০২৩, ১৭:৫০ | আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২৩, ১৭:৫২

ফরিদপুরের সালথায় গট্টি ইউনিয়নের ৬১নম্বর কাঠিয়ার গট্টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খাদিজা আক্তার রিনার বিরুদ্ধে চলতি বছরের বার্ষিক পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

খাদিজা আক্তার স্থানীয় মিয়ার গট্টি এলাকার আব্দুল হালিম খানের মেয়ে এবং জেলার সদর উপজেলার শোভারামপুর এলাকার বাসিন্দা।

জানা যায়, প্রধান শিক্ষক খাদিজা আক্তার রিনা ১/১০/১৯৯৬ তারিখে স্কুলে যোগদান করেন। বিদ্যালয়ের কাছাকাছি বাড়ি ও স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় বিদ্যালয় সরকারিকরণের পর থেকেই নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। এ নিয়ে কয়েক দফা সালিশ বৈঠক ও তদন্ত হয়েছে। কিছুদিন চুপচাপ থেকে আবারও দুর্নীতি ও অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। স্কুলের শিক্ষক, অভিভাবক ও পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা জানলেও অনিয়মের কোনো প্রতিবাদ করেন না। নিজের কাজের সুবিধার্থে দুই একজন শিক্ষককে নিয়ে গড়ে তুলেছেন শক্তিশালী বলয়।

সম্প্রতি বার্ষিক পরীক্ষা চলমান, উপজেলার প্রতিটি বিদ্যালয়ের প্রশ্নপত্র একই। পরীক্ষার বেশ কয়েকদিন আগেই প্রশ্নপত্র প্রতিটি বিদ্যালয়ে পৌঁছে যায়। প্রশ্নপত্র প্রধান শিক্ষক তার নিজ দায়িত্বে গোপনে সংরক্ষণ করেন। তবে খাদিজা আক্তার রিনা পরীক্ষা আগেই প্রশ্নপত্র তার পছন্দের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে দিয়ে দেন। বিষয়টি জানাজানি হলে দায় এড়াতে পরবর্তীতে ব্লাকবোর্ডে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির পশ্নপত্র লিখে দেন যা শিক্ষার্থীরা খাতায় লিখে নেয়। এই বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হওয়ায় নিজের সুবিধামতো স্কুলে আসেন। স্কুলের চাবি তার কাছেই রাখেন। স্কুলে আসতে দেরি হলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বাইরে দাড়িয়ে অপেক্ষা করতে থাকে। স্কুলে ক্লাস চলাকালে তিনি লুডু খেলেন ও মোবাইলে সময় ব্যয় করেন আবার কখনও চেয়ারে বসেই ঘুমিয়ে পড়েন। শিক্ষার্থীদের দিয়ে নিজের থালা-বাসন পরিষ্কার এমনিক টয়লেট পরিষ্কারও করান। শিক্ষার্থীদের ইচ্ছা না থাকলেও এই সকল কাজ করতে বাধ্য করেন। বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণে প্রায় তিন বছরের অধিক সময় লাগে। এই সময়ে রুটিন ও স্লিপের টাকা সঠিকভাবে খরচ না করে আত্মসাৎ করেন তিনি। তাছাড়া পুরাতন ভবনের বিভিন্ন মালামাল ও স্কুলের বই গোপনে বিক্রি করেছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া যায়। এর আগে সনদের কথা বলে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ গ্রহণ করেন বলে জানা যায়।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির এক নেতা বলেন, ওনার পূর্বে অনেক অনিয়ম আছে, আমরা অনেকবার সর্তক করেছি। সহকর্মী ও শিক্ষার্থীদের সাথে অনেক সময় খারাপ ব্যবহার করেন। আগে অনেক অনিয়মের সালিশ মীমাংসা হয়েছে। বিদ্যালয়ের সভাপতি জাকির হোসেন চান মিয়া ও এলাকায় সবাই জানে। আমরা চাই স্বচ্ছতার জন্য তাকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা উচিৎ।

বিদ্যালয়ের সভাপতি জাকির হোসেন চান মিয়া বলেন, এমন কোনো বিষয় হলে অবশ্যই ওনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষিক খাদিজা আক্তার রিনা বলেন, প্রশ্নফাঁসের বিষয়টি অসম্ভব। তবে আমার আসতে দেরি হলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা দাঁড়িয়ে থাকে। আপনি আমার ছোট ভাইয়ের মতো। বড়বোনের বিরুদ্ধে নিউজ করলে বিষয়টি লজ্জাস্কর। এ সময় তিনি ব্যাংকে আছেন বলে জানান এবং সামনাসামনি কথা বলার কথা বলেন।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার আতিকুর রহমান বলেন, পূর্বের বিষয়গুলো যাচাই-বাছাই করা হবে এবং বর্তমান বিষয়গুলো তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নয়া শতাব্দী/এসএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ