শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১

ফ্রিল্যান্সিংয়ের ১৫ লাখ টাকায় কাঠের বাড়ি করলেন ফারুক

প্রকাশনার সময়: ১৯ নভেম্বর ২০২৩, ১৬:৪০ | আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২৩, ১৭:৪৪

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ওমর ফারুক (২৮) নামের এক যুবক ফ্রিল্যান্সিং করে প্রায় ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ডুপ্লেক্স কাঠের বাড়ি তৈরি করেছেন। নান্দনিক ডিজাইনের কাঠের বাড়ি দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছে স্থানীয়রা।

ওমর ফারুক উপজেলার কুমিরা ইউনিয়নের কাজী পাড়া গ্রামের নুরুল আবছার ছেলে। তিনি ২০১৮ সালে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইকোনমিক্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন।

জানা যায়, সীতাকুণ্ড উপজেলায় ফ্রিল্যান্সিং করে ডুপ্লেক্স বাড়ি করেছেন ওমর ফারুক। কাঠের তৈরি এ আকর্ষণীয় বাড়ির সৌন্দর্যে মুগ্ধ স্থানীয়রা। ওমর ফারুক মুন্সিগঞ্জ জেলায় বেড়াতে গিয়ে সেখান কাঠের তৈরি বিভিন্ন ডিজাইনের বাড়ি দেখতে পান। পরে বড় ভাই হারুন অর রশিদের সাথে পরামর্শ করে কাঠের ঘর তৈরির সিদ্ধান্ত নেন।

এরপর ইউটিউবে কাঠের ঘরের ভিডিও দেখে তিনি আরও বেশি আগ্রহী হয়ে ওঠেন। এরপর বড় ভাইয়ের সাথে মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজংয়ে যান এবং সেখানে বিভিন্ন বাড়ি দেখে এলাকায় ফিরে আসেন। এরপর রেডিমেড বাড়ি অর্ডারের ৫ দিনের মধ্যে মুন্সিগঞ্জ থেকে ট্রাকে করে সীতাকুণ্ডের কুমিরায় আনা হয়।

বাড়ির প্রতিটি অংশ আলাদা এবং এটি মুন্সিগঞ্জ জেলার অভিজ্ঞ কাঠমিস্ত্রি দ্বারা নির্মিত হয়েছে। বাড়ির প্রতিটি দরজা নিপুণভাবে কারুকাজ করা হয়েছে। এটিতে ২৯টির মতো জানালা এবং ৬টির বেশি দরজা রয়েছে। এরমধ্যে ৬ টি রুম, তারমধ্যে ৩ টি বেড রুম, একটি ড্রাইনিং ও একটি ড্রয়িং রুম রয়েছে।

রান্নাঘর ছাড়াও নিচে তিনটি ড্রয়িং রুম এবং দ্বিতীয় তলায় দুটি ড্রয়িং রুম রয়েছে। এই বাড়ির বেলকনি সৌন্দর্যের নতুন মাত্রা যোগ করে। বর্তমানে ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধির কাজ চলছে। ওমর ফারুক নান্দনিক কাঠের ঘর তৈরি করে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন।

ফ্রিল্যান্সার ওমর ফারুক জানান, ২০১৮ সালে তিনি এনজিও কোম্পানি টিএমএসএস (tmss) আয়োজিত তিন মাসের কোর্সের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সারের কাজ শিখেছেন। সমস্ত সুযোগ-সুবিধা এনজিও সংস্থা দ্বারা সরবরাহ করা হয়। কোর্স সম্পন্ন করে থেকে আমি একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ শুরু করি। আমি গত ৫ বছর ধরে কাজ করছি। সেই আয়ে একটি কাঠের শখের বাড়ি তৈরি করেছি। বর্তমানে বেরিং ল্যাব নামক কোরিয়ান কোম্পানির মার্কেটিং ও ভেন্ডর ম্যানেজমেন্ট কো-অর্ডিনেটর হিসেবে কাজ করছি। বর্তমানে মাসিক আয় ৫০ হাজারেরও বেশি।

তিনি আরও বলেন, ইউটিউবে কাঠের ঘরের ভিডিও দেখে আগ্রহ নিয়ে ভিন্ন কিছু করার সিদ্ধান্ত নেয়। আসলে বাড়িটি মূলত শখ হিসাবে তৈরি করা হয়েছে। পরিবহন খরচসহ এর নির্মাণ ব্যয় ১৩ লাখ টাকা এবং এটির সম্পন্ন করতে ১৫ লাখ টাকার মতো খরচ হবে। বাড়িটি নির্মাণে বড় ভাইয়ের অবদানের কথাও বলেন এই সফল ফ্রিল্যান্সার।

এ বাড়ি নিয়ে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকে বলেন কেন দালান বা সেমিপাকা ঘরের বদলে কাঠের তৈরি বাড়ি নির্মাণ করলেন ওমর ফারুক।

এদিকে, কাঠের তৈরি এমন সুন্দর বাড়ি দেখে উচ্ছ্বসিত স্থানীয়রা। জীবনে অনেক বাড়ি দেখেছি, তবে কাঠের তৈরি বাড়ি দেখিনি। সত্যিই আমরা মুগ্ধ। ডুপ্লেক্স কাঠের বাড়ির নকশা ঘরের সৌন্দর্য দ্বিগুণ। বাড়ি তৈরির পর শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষ জড়ো হচ্ছেন বাড়িটি এক নজর দেখতে।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ