ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে পটুয়াখালীতে কৃষি পণ্যের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জেলার বিভিন্ন স্থানে আমন ধানের বাম্পার ফলন হওয়ার পরেও প্রায় ১৯ হাজার হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অন্যদিকে, আগাম জাতের তরমুজ, খেসারি ডাল, মরিচ, সরিষা সহ বিভিন্ন শাকসবজির ব্যাপক হারে ক্ষতি সাধিত হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য মতে, রোপা আমন ১৮৮২২ হেক্টর, খেসারি ০৩ হাজার হেক্টর, শাক সবজি ৯৪০ হেক্টর, মরিচ ০৮ হেক্টর, সরিষা ১৮ হেক্টর ও তরমুজের ১৮ হেক্টর জমি সহ মোট ২২৭৬২ হেক্টর জমির ফসল আক্রান্ত হয়েছে। যা টাকার পরিমাণ ৪৭,৭৫৪০ টাকা।
সরেজমিনে দেখা গিয়েছে, পটুয়াখালী জেলার বিভিন্ন স্থানে আমন ধান মাটির সাথে শুয়ে আছে। এ ছাড়াও তরমুজ সহ বিভিন্ন ফসলগুলো পানির মধ্যে তলিয়ে আছে।
রাঙ্গাবালীর কৃষক ওসমান ফারুক বলেন, আমি প্রায় এক লাখ টাকা খরচ করে আগাম তরমুজের চাষ করেছি। কিন্তু হঠাৎ ঝড়ের কারণে পানি উঠে যায়। এতে বেশিরভাগ তরমুজের গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তরমুজ গাছের নিচে পানি থাকলে সেই গাছের শিকড় নষ্ট হয়ে যায়। এখন কতদূর পর্যন্ত টিকে থাকে আল্লাহ জানে।
দুমকির কৃষক শাহীন তালুকদার বলেন, লাউ ও মরিচের চাষ করেছি। বাতাস ও পানির চাপে আমার সব শেষ হয়ে গেছে।
পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে পটুয়াখালীর কৃষিতে ক্ষতির চিহ্ন রয়ে গেছে। সেক্ষেত্রে আমাদের মাঠের ১৯,১১১৯ হেক্টর জমির ধানের মধ্যে দশ থেকে পনেরো ভাগ আমন ধান মাটিতে শুয়ে পড়েছে ও পানিমগ্ন হয়ে আছে। যেগুলো নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যার বেশিরভাগই চিটা হবে ও অপুষ্ট ধান হবে। এটিতে উৎপাদনের ক্ষেত্রে কৃষিতে একটি বড় প্রভাব পরবে। এ ছাড়াও শাকসবজি ও আগাম জাতের তরমুজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে জেলায় প্রায় পঞ্চাশ কোটি টাকার কৃষি পণ্যের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণের চেষ্টা করছি পাশাপাশি কৃষকদের খেত থেকে পানি অপসারণের ও খেতের ধান মুষ্ঠবদ্ধ করে বেঁধে দেয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। এ ছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের চিহ্নিত করে প্রণোদনার আওতায় নিয়ে আসা হবে।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ