ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬
উৎপাদিত গুড় বিক্রি হবে ৩৭ কোটি ৫০ লাখ টাকায়

চুয়াডাঙ্গায় শীতের আগমনে খেজুর গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত গাছিরা

প্রকাশনার সময়: ০৮ নভেম্বর ২০২৩, ২২:৪৩

ঋতুচক্রে এখন চলছে হেমন্তকাল। পঞ্জিকার পাতায় আজ কার্তিক মাসের ২৩ তারিখ। সামনে পড়ে আছে পুরো অগ্রহায়ণ মাস। এরপর আসবে শীতকাল (পৌষ-মাঘ)। কিন্তু শীতকালের আগেই প্রকৃতিতে শীত শীত ভাব। এমন পরিবেশ বুঝে চুয়াডাঙ্গার গাছিরা আগাম খেজুর গাছ পরিচর্যা শুরু করেছেন।

যারা খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের কাজ করেন তাদেরকে গাছি বলে। আগাম রস পেতে গাছিরা পুরোদমে খেজুর গাছ পরিচর্যা শুরু করেছেন। গাছ তোলা, ঠিলে ধোয়া, রস জ্বালানোর চুলা তৈরিসহ নানা কাজে ব্যস্ত চুয়াডাঙ্গার খেজুর গাছিরা।

বুধবার (৮ নভেম্বর) সকালে জেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার ঐতিহ্য খেজুরের গুড়-পাটালি। এ জেলার উৎপন্ন গুড়-পাটালি স্বাদ বেশ পরিচিত। তাই খেজুর গুড়ের প্রসঙ্গ উঠে আসলে সবার আগে চুয়াডাঙ্গা কথা উঠে আসে। এ জেলায় গুড় ও পাটালি জেলার চাহিদা মিটিয়ে সারা দেশের বিভিন্নস্থানে সরবরাহ করা হয়।

সদর উপজেলার দীননাথ গ্রামের আজিম নামে এক গাছি বলেন, প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০টি গাছ কেটে প্রস্তুত করছি। দৈনিক পারিশ্রমিক পাচ্ছি ৮০০ টাকা। এতে কিছুই হচ্ছে না। সব জিনিসের মূল্য বৃদ্ধির কারণে চাহিদামতো পারিশ্রমিক মিলছে না। গাছ কাটার যন্ত্রের দাম বেড়েছে। গাছ কাটার পারিশ্রমিক মূল্য আরো বাড়ালে ভালো হতো।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা বেলগাছি গ্রামের গাছি আরিফ হোসেন জানান, জেলায় শীতের আমেজ শুরু হয়েছে। তাই রস সংগ্রহের জন্য ঝুঁকি নিয়ে গাছ কাটা হয়। খেজুর গাছ থেকে রস বের করা এবং ভোরে গাছ থেকে রস নামানো খুব কঠিন কাজ।

দামুড়হুদা উপজেলার বাঘাডাঙ্গা গ্রামের খেজুর গাছ মালিক শাহাদত হোসেন জানান, চলতি মৌসুমে ২০০ গাছ থেকে খেজুরের রস আহরণ করা হবে। খেজুর গাছের রস, গুড়-পাটালি বিক্রয় করে খরচ বাদে প্রায় ১ লাখ টাকা লাভের আশা করছি।

চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবার রস সংগ্রহের জন্য ২ লাখ ৭১ হাজার ৯৬০টি গাছ প্রস্তুত করা হচ্ছে। গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন। আর বিক্রয়মূল্য ধরা হয়েছে প্রতি কেজি ১৫০ টাকা হিসেবে ৩৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। প্রতিবার এই গাছ প্রস্তুতে প্রায় ৩০ হাজার কৃষকের কর্মসংস্থান হয়।

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, জেলাজুড়ে খেজুরের রস আহরণের জন্য গাছিরা আগাম খেজুর গাছ প্রস্তুত করছেন। সঠিক পদ্ধতিতে, স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে যেন রস-গুড় উৎপাদন করে বাজারে বিক্রয় করে কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হয় এ জন্য কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে।

নয়া শতাব্দী/এফআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ