ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

একটা সেতু পেলেই হাসি ফুটবে হাজার পরিবারের মুখে

প্রকাশনার সময়: ০৭ নভেম্বর ২০২৩, ১৯:৪৫

‘আমাগো কষ্ট দেহনের কেউ নাই। জীবনডা কষ্ট করেই পার করলাম।’ বেশ আক্ষেপ ও চাপা কষ্ট নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন মাঝি সুজন শেখসহ মজলিশপুর চরাঞ্চলের মানুষজন।

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের চরাঞ্চল মজলিশপুর গ্রামটি বছরের প্রায় ছয় মাস পানিতে ডুবে থাকে। এখানের বেশিরভাগ মানুষ কৃষি কাজের উপর নির্ভরশীল। কেউ পদ্মার বুকে মাছ ধরেই চালান সংসার। শহরের সাথে যোগাযোগের ভালো কোনো ব‍্যবস্থা নেই। রাস্তা-ঘাটের বেহাল দশা।

শুকনা মৌসুমে এলাকার রাস্তায় কম বেশি রিকশা, ভ্যান চলাচল করে। বর্ষা মৌসুমে তারও উপায় থাকে না। তখন খালি পায়ে হাঁটাও মুশকিল হয়ে পড়ে। শহরের সঙ্গে যোগাযোগের জন‍্য একমাত্র যে রাস্তা, বর্ষায় তাও তলিয়ে যায়। তখন পারাপারের একমাত্র উপায় হয়ে দাঁড়ায় নৌকা।

এলাকার বেশ কয়েকজন মানুষের সঙ্গে প্রতিবেদকের কথা হয়। তারা নয়া শতাব্দীকে জানান, বর্ষা মৌসুমে আমাদের অনেক কষ্ট হয়। প্রায় হাফ কিলোমিটার রাস্তা বছরের অর্ধেক মাস পানিতে ডুবে থাকে। ফসল আনা নেওয়ার ক্ষেত্রে নৌকা ছাড়া উপায় থাকে না। এই হাফ কিলোমিটার জায়গায় ছোট একটা সেতু হলে আমরা হাফ ছেড়ে বাঁচি।

সেতুর আকুতি নিয়ে স্থানীয় ইউনিয়নে যোগাযোগ করেও ফল পাননি তারা। সরেজমিনে দেখা যায়, মজলিশপুর গ্রামে প্রবেশ করতে হাফ কিলোমিটার রাস্তা নিচু থাকায় পানিতে তলিয়ে আছে। যাতায়াত করতে হয় নৌকায়। এ সময় ঝুঁকি নিয়ে শিশুদেরও নৌকা পার হতে দেখা যায়।

ভরা বর্ষায় অতিরিক্ত শ্রুত থাকে এখানে। মজলিশপুর চরে ৩১ নম্বর মজলিশপুর জয়নাল মৃধা সরকারি প্রাথমিক বিদ‍্যালয় নামে একটি স্কুল আছে। সেখানে দুই থেকে তিন'শ শিক্ষার্থী রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় শ’খানেক শিক্ষার্থীর ঝুঁকি নিয়েই নৌকায় পার হতে হয়।

৩১ নম্বর মজলিশপুর জয়নাল মৃধা সরকারি প্রাথমিক বিদ‍্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জহির রায়হান বলেন, মজলিশপুর চরের এপার ওপারে প্রায় ৮শ পরিবারের বাস। নদী পথে প্রায় দশ হাজার মানুষ পারাপার হন। স্কুলের কোমলমতি শিশুদের ঝুঁকি নিয়েই এই নদী পার হতে হয়।

তিনি আরও বলেন, ফসল উৎপাদনের সম্ভাবনাময় চর এটি। এ চরে মৌসুমীভিত্তিক সব ধরণের ফসল খুব ভালো উৎপাদন হয় কিন্তু যাতায়াতের ব‍্যবস্থা ভালো না থাকায় এখানকার কৃষকরা তাদের ফসলের সঠিক দাম পান না। তাদের ফসল উৎপাদনের জন‍্য কষ্ট করতে হয়। নৌকায় ফসল আনা নেয়ায় ভোগান্তি পোহাতে হয়। সেতুটা হলে তৃপ্তির হাসি ফুটবে চরাঞ্চলের মানুষের মুখে।

উজানচর ইউপির ৯ নং ওয়ার্ড সদস্য শেখ রাসেল আহমেদ জানান, এ অঞ্চলের মানুষের নদীর সাথে যুদ্ধ করেই বাঁচতে হয়। মজলিশপুর চরের হাফ কিলো রাস্তা বছরের প্রায় ৮/১০ মাস পানিতে তলিয়ে থাকে। নৌকা দিয়েই চলাচল করতে হয়। রাস্তাটি মেরামত এবং একটি সেতুর জন‍্য স্থানীয় প্রশাসন বরাবর বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। আশা করছি অচিরেই এঅঞ্চলের মানুষের অনেক দিনের চাওয়া পূরণ হবে।

নয়াশতাব্দী/একে/এফআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ