ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

গুরুদাসপুরে গাছে গাছে পেরেক ঠুকে টাঙানো হচ্ছে ব্যানার-ফেস্টুন

প্রকাশনার সময়: ২৯ অক্টোবর ২০২৩, ১৭:২৭

নাটোরের গুরুদাসপুর পৌর শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন সড়কের পাশের গাছে গাছে পেরেক ঠুকে টাঙানো হয়েছে ব্যানার, ফেস্টুন, মনোনয়ন প্রত্যাশীর পোস্টারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন। এতে সড়কের গাছগুলো মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

গাছ পরিবেশ রক্ষা ও মানুষের পরম বন্ধু হলেও মানুষের নিষ্ঠুরতার হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। গাছ আমাদের সমস্ত প্রাণিকুলকে ছাঁয়া, ফল, অক্সিজেন আর জ্বালানি দিয়ে বাঁচিয়ে রাখে। ফুল দিয়ে সৌন্দর্য বৃদ্ধি। সর্বোপরি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। সেই গাছে পেরেক ঠুকে ব্যানার টাঙানো নিষ্ঠুরতার শামিল বলে মনে করছেন পরিবেশ কর্মীরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, গুরুদাসপুর পৌর শহর থেকে শুরু করে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পর্যায়েও গাছে গাছে পেরেক ঠুকে লাগানো হচ্ছে পোস্টার, ব্যানার, সাইনবোর্ড ও ফেস্টুন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে মনোনয়ন প্রত্যাশীসহ বিভিন্ন কোচিং সেন্টার, চিকিৎসক, এনজিও প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন প্রকাশ্যেই গাছে পেরেক ঠুকে টাঙানো হলেও প্রশাসনের নেই কোনো মাথা ব্যথা।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ অবস্থা তৈরি হয়েছে আট-নয় বছর আগে থেকে। এর আগে হাতে গোনা দু-চারটা ছাড়া খুব বেশি সাইনবোর্ড চোখে পড়তো না। সম্প্রতি গাছে সাইনবোর্ড বেশি চোখে পড়ছে। এর মধ্যে বিভিন্ন সময়ের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতিবিদদের সাইনবোর্ডের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে।

গুরুদাসপুরের পরিবেশ কর্মী নাজমুল হাসান নাহিদ বলেন, গাছেরও যে প্রাণ আছে, তা মানুষ ভুলে যায় অবলীলায়। তাই প্রচারণার পেরেক ঠুকিয়ে ক্ষত-বিক্ষত করছে গাছের দেহ। গুরুদাসপুরের বিভিন্ন এলাকায় কোনোমতে বেঁচে থাকা গাছগুলোর দিকে তাকালেই চোখে পড়ে এমন দৃশ্য।

সূত্রমতে, গাছে পেরেক বিদ্ধ করে সাইনবোর্ড না লাগাতে ২০০২ সালের ৭ জুলাই জাতীয় সংসদে আইন পাস হয়। কিন্তু বাস্তবে সে আইন কার্যকর হচ্ছে না। সাইনবোর্ড লাগানো আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ হলেও মানা হচ্ছে না।

গুরুদাসপুর পৌর মেয়র মো. শাহনেওয়াজ আলী মোল্লা বলেন, গুরুদাসপর পৌরসভা সাজানো গোছানো একটি শহর। পৌরসভাকে পরিবেশবান্ধব রাখতে গাছের বিকল্প নেই। গাছের ক্ষতিকারক সকল প্রকার বিলর্বোড, ব্যানার ও পোস্টার অতিদ্রুত অপসারণ করার জন্য মাইকিং করে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

গুরুদাসপুর রোজী মোজাম্মেল মহিলা কলেজের জীব বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ছায়েমা চৌধরী বলেন, গাছে পেরেক লাগানোর কারণে গাছের গায়ে যে ছিদ্র হয়, তা দিয়ে পানি ও এর সঙ্গে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া এবং অণুজীব ঢুকে। এতে গাছের ওই জায়গায় দ্রুত পচন ধরে। ফলে খাদ্য ও পানি শোষণ প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। পরবর্তীতে গাছ মারাও যেতে পারে।

গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্রাবণী রায় বলেন, গাছে পেরেক ঠুকে সাইনবোর্ড লাগানোর বিষয়ে শুনেছি। খুব দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নয়া শতাব্দী/এসএ/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ