ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভৈরবে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা, নিহত বেড়ে ২৫

প্রকাশনার সময়: ২৩ অক্টোবর ২০২৩, ১৯:০২ | আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০২৩, ১৯:২৮
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা। ছবি- নয়া শতাব্দী

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ২৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। একই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অর্ধশতাধিক। দুর্ঘটনার ফলে ভৈরব স্টেশনে আটকা পড়েছেন কয়েক হাজার যাত্রী।

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ভৈরব ফায়ার সার্ভিস, রেলওয়ে পুলিশ, ভৈরব থানা পুলিশ ও কিশোরগঞ্জ ডিবি পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজ শুরু করেছেন। ঘটনার সাড়ে তিন ঘণ্টা পর ছিটকে পড়া ট্রেনটি উদ্ধার করতে সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে আখাউড়া থেকে একটি রিলিফ ট্রেন ঘটনাস্থালে এসে পৌঁছেছে।

ভয়াবহ এ ট্রেন দুর্ঘটনায় ঢাকা চট্রগ্রাম, সিলেট, কিশোরগঞ্জ লাইনে রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। দুর্ঘটনার পর ভৈরব রেলওয়ে স্টেশন মাস্টারসহ দায়িত্বপ্রাপ্তরা গা ঢাকা দিয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কিশোরগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা আন্তঃনগর এগারোসিন্ধুর এক্সপ্রেস ট্রেনটি ৩ নম্বর প্লাটফর্মে যাত্রা বিরতি শেষে ঢাকার উদ্দেশ্যে স্টেশন ত্যাগ করে জগ্ননাথপুর আউটার সিগনালের সামনে থেকে ২ নম্বর লাইন ক্রস করে ১ নম্বর লাইনে ঢুকার মুহুর্তে একই লাইনে ঢাকা থেকে আসা মালবাহী ট্রেনটি এগারোসিন্ধুর ট্রেনের পিছনের দুটি বগিকে ধাক্কা দেয়। এ সময় যাত্রীবাহী ট্রেনের দুটি বগি দুমড়ে মুচড়ে উল্টে যায় এবং রেললাইন থেকে ছিটকে পড়ে। এ ঘটনায় নারী পুরুষ ও শিশুসহ অন্তত ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও ৫০ জন যাত্রী আহত হয়েছে বলে জানান মরদেহ উদ্ধারকারী ডোম জিল্লুর রহমান।

জানা গেছে, ট্রেন দুর্ঘটনায় আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেসহ বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেয়া হয়েছে। ট্রেনের নিচে অনেকে যাত্রী চাপা পড়ে থাকায় নিহত ও আহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করছেন উদ্ধারকারীরা। সরকারি হিসেব মতে, ১৭ জন যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানান কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ নিশ্চিত করেন।

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে কিশোরগঞ্জ-৬, ভৈরব কুলিয়ারচর আসনের সংসদ সদস্য ও বিসিবি সভাপতি আলহাজ্ব নাজমুল হাসান পাপন, কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম, কিশোরগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ, ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজ ও রেলওয়ে ঢাকার কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

এছাড়াও ঘটনার খবর পেয়ে কয়েক হাজার নারী পুরুষ ও উৎসুক জনতা ঘটনাস্থলে ভিড় করছেন। মানুষের ভিড়ের কারণে উদ্ধার কাজ অনেকটা ব্যাহত হচ্ছে।

জানতে চাইলে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, এটা খুবই একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। এ পর্যন্ত দুর্ঘটনায় ১৭ জন মারা গেছে। আহত হয়েছেন আরও অর্ধশতাধিক। প্রত্যেক নিহতদের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৫ হাজার টাকা করে বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। আহতদের জন্য চিকিৎসার জন্য সর্বাত্মক ব্যবস্থা করা হবে।

কিশোরগঞ্জ-৬, ভৈরব কুলিয়ারচর আসনের সাংসদ আলহাজ্ব নাজমুল হাসান পাপন ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে বলেন, ভৈরবের ইতিহাসে এটা একটা মর্মান্তিক ঘটনা। নিহত ও আহতদের জন্য সরকারিভাবে অচিরেই বরাদ্ধ ঘোষণ করা হবে। নিহতদের পরিচয় শনাক্ত করে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করাসহ আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নয়াশতাব্দী/এমটি

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ