আমার পোড়া কপাল। টাকার অভাবে পূজায় পরিবারের সদস্যদের একটা নতুন কাপড় দিতে পারছি না। ছোট শিশুটার জন্যও কিছু কিনতে পারিনি। আমার অসুস্থতার জন্যই এই অবস্থা। ঘরের একমুঠো খাবার জুটাতেই বর্তমান বাজারে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এভাবে আকুতি প্রকাশ করেন পাবনার ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া ইউনিয়নের নওদাপাড়া গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা দীপক ঠাকুর (৪৫)।
সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা। এই উৎসবকে ঘিরে প্রতিটি পরিবারে চলে উৎসবের আমেজ। চারদিকে আনন্দ উৎসবের আমেজ এলেও পূজায় নতুন কাপড় কিনতে না পারায় চরম হতাশা প্রকাশ করেন দীপক ঠাকুর ও পরিবারের সদস্যরা। চার সন্তান ও স্ত্রী নিয়েই দীপক ঠাকুরের সংসার। তার স্ত্রী ছোট বাচ্চাদের রেখেও কোনো কাজ করতে যেতে পারেন না। সংসারের একমাত্র উপার্জনশীল ব্যক্তি দীপক ঠাকুর। রাতভর ভ্যান চালিয়ে পরিবারে খাদ্যের যোগান দেন। পাশাপাশি আছে কিস্তির বোঝাও। কিস্তি দিয়ে খাবার কিনতেই তাকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
এখানেই শেষ নয়। কীভাবে তার সংসার চলবে? এ দুশ্চিন্তার যেন শেষ নেই। এ যেন 'অভাগা যেদিকে তাকায় সাগর শুকিয়ে যাওয়ার' অবস্থা। অবুঝ শিশুদের নিয়ে খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তাদের সম্বল বলতে ঋণ করে কেনা এ ভ্যান আর সরকারের ঘর। এ ছাড়া আর কিছুই নেই। গুচ্ছগ্রামেই একটি ঘরে অতিকষ্টে টিকে আছেন তারা।
এদিকে, গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা হয়েও ইউনিয়ন থেকে কোনো সুবিধা বা কার্ড পান না দীপক ঠাকুর। তিনি বলেন, আইডি কার্ডের অনেক ফটোকপি জমা দিই ইউনিয়নের লোকজনের কাছে। পরে কোনো কিছুই আর পাই না, তাই আর যাই না।
কিন্তু দ্রব্যমূল্যের এই আগুন বাজারে কেমন করে চলবে তাদের সংসার? বয়সের ভাঁড়ে প্রতিদিন কাজেও যেতে পারেন না। কোনোদিন একবেলা দু-মুঠো খেয়ে কোনোদিন না খেয়ে বেঁচে আছেন। এসব করুণ জীবনের গল্প শোনার আজ যেন কেউ নেই।
ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুবীর কুমার দাশ বলেন, দুর্গাপূজা উৎসবকে ঘিরে উপজেলার প্রতিটি মন্দিরে অনুদান বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে কাউকে কিছু দেয়া হয়নি।
নয়া শতাব্দী/এসএ/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ