বানিয়াচং স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবা বর্তমানে অনেকাংশে বন্দি হয়ে পড়েছে দালালদের শক্তিশালী সিন্ডিকেটের হাতে। সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগীদের বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়াই তাদের মূল কাজ।
সরেজমিনে দেখা যায়, সেখানে পদে পদে রোগী আর তাদের স্বজনদের ভোগান্তির মুখে ফেলছে দালালরা। দূরদুরান্ত থেকে আসা রোগীদের নানাভাবে বুঝিয়ে নিজেদের নিয়ন্ত্রিত ক্লিনিকে নিয়ে যাচ্ছে তারা। এতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন প্রান্তিক অঞ্চলের সাধারণ মানুষ।
হাসপাতাল সূত্র ও রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দালালদের উৎপাত নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। এখানে এলেই তারা রোগীর প্রেসক্রিপশন নিয়ে টানাহেঁচড়া শুরু করে। স্থানীয় স্বাস্থ্য প্রশাসন বিষয়টি সম্পর্কে জানলেও কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। অথচ উন্নত চিকিৎসা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার অজুহাতে বেসরকারি ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিকে নিয়ে গেলেও এসব রোগীকে ভর্তি দেখানো হচ্ছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই। এতে অনেকেই মনে করেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে এসব দালালের।
বানিয়াচং উপজেলা সদরের ২ নম্বর উত্তর-পশ্চিম ইউনিয়নের রোগীর এক স্বজন সালমান জামান সৈকত জানান, কয়েকদিন আগে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত এক রোগীকে নিয়ে গিয়েছিলেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। জরুরি বিভাগ থেকে চিকিৎসা নেওয়ার পর এক দালাল প্রেসক্রিপশন দেখতে চায়।
রোগীর স্বজন সাইদুর রহমান জানান, বুকে ব্যথার জন্য তার চাচাতো ভাইকে নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে আসার পর সেখানকার দায়িত্বরত চিকিৎসক ইসিজিসহ কয়েকটি টেস্ট দেন। পরে এক দালাল সেটা দেখে রীতিমতো জোর শুরু করে তার নির্ধারিত সেন্টারে নিয়ে যাওয়ার জন্য। একজন রোগী ও তার স্বজনদের জন্য এটি বড় সমস্যা।
এদিকে দালাল, স্থানীয় প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর মধ্যে যোগসূত্র থাকায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও কমিশনের লোভে একশ্রেণির সরকারি চিকিৎসক রোগীদের বিভিন্ন ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠিয়ে দিচ্ছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শামীমা আক্তার জানান, অনেক চিকিৎসকের রোস্টার অনুযায়ী ডিউটি দেওয়া থাকে।
নয়া শতাব্দী/এসএ/এফআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ