ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

গরম ইস্ত্রি চেপে গৃহকর্মীকে নির্যাতন করতেন ডিবি কর্মকর্তার স্ত্রী

প্রকাশনার সময়: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৪:২৮

ঢাকায় কর্মরত গোয়েন্দা পুলিশের এক এসআইয়ের স্ত্রীর বিরুদ্ধে গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় নাটোরে মামলা দায়েরের পর আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাতে গৃহকর্মীকে নিয়ে তার বাবার বাড়িতে গেলে আসামি ও তার মাকে আটক করেন স্থানীয়রা। পরে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। মধ্যরাতে ওই আসামির বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগীর মা। নির্যাতনের শিকার গৃহকর্মী (১৩) পাইকেরদল গ্রামের বাসিন্দা।

আসামি সুমী খাতুন সদর উপজেলার ছাতনী ইউনিয়নের ভাবনি গ্রামের আসাদুলের মেয়ে এবং ঢাকায় কর্মরত গোয়েন্দা পুলিশের এসআই খন্দকার আতিকুর রহমানের স্ত্রী। সদর থানার ওসি মনসুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নির্যাতনের শিকার কিশোরীর চাচাতো ভাই জানান, তিন বছর আগে সদর হাসপাতালের সামনে আসামির সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে আসামির বাসায় মাসিক ১২শ’ টাকা মজুরিতে চাচাতো বোনকে গৃহকর্মীর কাজে দেন। গৃহকর্মীর মজুরি বাবদ এক হাজার টাকা করে আট মাস দেওয়া হলেও আর কোনও টাকা পায়নি কিশোরীর পরিবার। বার বার বলার পরেও ওই কিশোরীকে বাড়ি আসতে দেওয়া হয়নি। এমনকি তার দাদা মারা গেলেও তাকে আসতে দেওয়া হয়নি। অবশেষে তার মা বার বার ফোন করলে বুধবার রাতে তাকে বাড়ি নিয়ে আসে আসামি ও তার মা।

কিশোরীর ভাবি বলেন, আমার ননদ বাড়ি পৌঁছার পর তাকে স্বজনদের কাছে আসতে বাধা দিচ্ছিলো আসামি। এসময় সন্দেহ হলে ভালোভাবে লক্ষ্য করে দেখি তার মুখ ও হাতে আঘাতের দাগ। ১০ মিনিট যেতে না যেতেই আসামি তাকে নিয়ে চলে যেতে চান। এসময় ননদের সঙ্গে কথা বললে সে জানায়, করোনাকালে তারা আসামির বাবার বাড়ি ভাবনি গ্রামে অবস্থান করছে। সেখানে বিভিন্ন অজুহাতে তার ওপর নির্যাতন করে আসামি সুমী।

ওই গৃহকর্মী অভিযোগ করেন, আসামি তাকে দিয়ে গরু-ছাগলের ঘাস কেটে নেওয়াসহ নানা কাজ করাতো। সামান্য দোষেই তাকে হাতা ও লোহার প্লাস দিয়ে আঘাত করা হতো, গরম ইস্ত্রি চেপে ধরেও নির্যাতন করতো আসামি সুমী।

স্থানীয় বাসিন্দা সাজেদুল বলেন, গৃহকর্মীর পরিবার অতি দরিদ্র। তাই তাকে কাজে দিয়েছিল। অথচ স্বামী আইনের লোক হলেও আসামি গৃহকর্মীর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছে। তার মানবাধিকারও লঙ্ঘন করেছে। এমনকি তার ন্যায্য পাওনা টাকাও দেয়নি। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত, আসামির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ভুক্তভোগীর ক্ষতিপূরণ দাবি করেন তিনি।

সদর থানার ওসি মনসুর রহমান বলেন, মামলা দায়েরের পর আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

নয়া শতাব্দী/এসএম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ