ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের নিগুয়ারি নগরপাড়ার উচ্চশিক্ষিত গৃহবধূ সালমা আক্তার চাকরির পেছনে না ছুটে অদম্য পরিশ্রম আর সাহসিকতার সঙ্গে ডেইরি ফার্ম গড়ে নিজেকে সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন। বর্তমানে দেশের বহু নারী শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও সৃষ্টিশীলতা কাজে লাগিয়ে নিজেদের সফল উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলেছেন। তেমনি একজন সালমা আক্তার।
খামার করতে সালমা টাকা নেন শ্বশুর ও নিজের পিতার কাছ থেকে। এতেই বাজিমাত করেন। গেল ঈদে ২৫টি ষাঁড় বিক্রি করে দুই লাখের বেশি মুনাফা অর্জন করেন তিনি। এবার তার খামারে রয়েছে অর্ধশত ষাঁড়। এগুলো বিক্রি করলে খরচ বাদে পাঁচ লাখ টাকারও বেশি মুনাফা হবে বলে জানান সালমা।
এসএসসি পাশের পর টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার ছাতিহাটি গ্রামের আব্দুল করিম শাহর মেয়ে সালমার বিয়ে হয় গফরগাঁও উপজেলার নিগুয়ারী মধ্যপাড়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য পরিদর্শক বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামের পুত্র প্রকৌশলী মাহমুদুল ইসলামের সঙ্গে। সালমা আক্তার শিক্ষাজীবন সমাপ্তি না ঘটিয়ে ঢাকা ইডেন কলেজ থেকে সমাজকল্যাণ বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করেন। অনেকের মতো চাকরির পেছনে না ছুটে তিনি গ্রামের শ্বশুরালয়ে ফিরে একজন উদ্যোক্তা হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। দীর্ঘদিন ধরে অবহেলায় পড়ে থাকা শ^শুরের জমির ওপর গড়ে তোলেন জান্নাত-নুসরাত ডেইরি ফার্ম। যাতে গরু ও মৎস্য খামার শুরু করেন। চাকরি থেকে অবসরপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা শ^শুরের কাছ থেকে চার লাখ টাকা ও প্রবাসী পিতার কাছ থেকে ২ লাখ টাকাসহ মোট ৬ লাখ টাকার সহায়তা ২০১০ সালে চারটি গরু কিনে খামার শুরু করেন। মাত্র কয়েক বছরে খামারটি বেশ উন্নত হয়েছে। খামারটিতে বর্তমান ৩২টি উন্নত জাতের গরু রয়েছে। স্বাধীনচেতা উদ্যোক্তা নারী সালমা আক্তারের এই খামারটিতে এখন এলাকার দরিদ্র মানুষ কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে। সালমার খামারটির চারপাশ ঘিরে রয়েছে রকমারি ফল ও ফুলের বাগান, যা দেখে অনেকেই উৎসাহী হচ্ছেন।
গফরগাঁও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. আরিফুল ইসলাম জানান, তিনি নিজের ভাগ্যবদলের পাশাপাশি অন্যদের খামার গড়ার পরামর্শ দিয়ে দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে অবদান রাখছেন।
নয়া শতাব্দী/এমআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ