ঢাকা, সোমবার, ৬ জানুয়ারি ২০২৫, ২২ পৌষ ১৪৩১, ৫ রজব ১৪৪৬

অস্তিত্ব সংকটে লক্ষ্মীপুরের অর্ধশতাধিক নদী-খাল 

প্রকাশনার সময়: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২৩:০৬

লক্ষ্মীপুরের রহমতখালী, ডাকাতিয়াসহ দূষণ-দখলে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে অর্ধশতাধিক নদী-খাল। শহরের অধিকাংশ খাল দখল আর বর্জ্যে ভরাট হয়ে গেছে। এতে সামান্য বৃষ্টিতে ও জলাবদ্ধতা দেখা দেয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুর সদর, রায়পুর, রামগতি, কমলনগর ও রামগঞ্জ উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া রহমতখালী খাল এবং ডাকাতিয়া ও মেঘনা নদীর প্রায় ১০০ কিলোমিটারজুড়ে ছিল। কিন্তু ইট-বালু আর মাটি দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে নদী ও খালের দুই পাড়। একই অবস্থায় ভুলুয়া, জারিদোনা ও চরঠিকা খালসহ ছোট-বড় অর্ধশতাধিক খাল।

অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তির, পাউবোর কিছু কর্মকর্তা ও প্রশাসনের অসৎ কিছু লোকের যোগসাজশে হরহামেশাই এই দখলদারিত্ব চালিয়ে আসছেন। এতে দিন দিন ছোট হয়ে যাচ্ছে খালগুলো। এ ছাড়া খালে ময়লা-আবর্জনার স্তূপের কারণে বৃষ্টির পানি সহজে সরছে না। ফলে অল্প বৃষ্টিতে এসব এলাকায় দেখা দেয় জলাবদ্ধতা।

এদিকে খালের ওপর নির্মাণ করা অবৈধ স্থাপনা কিছু কিছু সময় উচ্ছেদ করা হলেও পরে আবার দখল হয়ে যায় স্থানগুলো। উচ্ছেদ অভিযান স্থায়ীত্ব না হওয়ায় স্থানীয়দের দাবি, কর্তা ব্যক্তিদের খালি পকেট ভারি করার সুবিধার্থে ভাঙা-গড়ার নিয়ম চলমান থাকায় উচ্ছেদের পর নির্বিঘ্নে ঠিক আবার তা দখল হয়ে যায়। তাই স্থায়ী উচ্ছেদের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

পৌর শহরের বাসিন্দারা জানান, নদী ও খাল দিয়ে একসময়ে বড় বড় পালতোলা নৌকা, মালবাহী ট্রলার চলাচল করত। এ ছাড়া ভোলা-বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ধান-চাল-গমসহ নানা পণ্য নিয়ে আসা-যাওয়া করতেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু খালগুলো সরু হয়ে যাওয়ায় এখন আর নৌযান চলাচল করতে পারছে না। এসব খালের পানি সেচ দিয়ে খালপাড়ে সবজির আবাদ করতেন চাষিরা। কিন্তু এখন বেশির ভাগ খাল মৃতপ্রায়। তাই আর সেচ দেওয়া সম্ভব হয় না। রাজনৈতিক ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ছত্রচ্ছায়ায় অবৈধভাবে এসব খাল দখল করে গড়ে উঠেছে বহুতল ভবন। যার মধ্যে দখলে সদর উপজেলার মজুচৌধুরীর হাট মাছঘাট ও লক্ষ্মীপুর-ভোলা-বরিশাল ফেরিঘাট এলাকায় পাউবোর বেড়িবাঁধসহ প্রচুর জায়গা রয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, এসব জায়গা দখল করছেন স্থানীয় প্রভাবশালী এক ব্যক্তি ও তার আত্মীয়-স্বজন। চররমনি মোহন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইউসুফ হোসেন জাবেদ, গফুর, আবদুল বারেকের ভাই জাহাঙ্গীর, জসিম, মরণসহ প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এসব স্থানে পাকা দোকানঘর নির্মাণ করে ভাড়া দিচ্ছেন।

তবে জানতে চাইলে জাবেদ ও গফুর বলেন, ‘পাউবো থেকে লিজ নিয়েছি। ওই সম্পত্তিতে আমরা দোকান করেছি। এটি আমাদের জায়গা।’

লক্ষ্মীপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফারুক আহমেদ বলেন, ‘এসব অবৈধ দখলদার উচ্ছেদে কাজ করা হচ্ছে। সার্ভে করা হচ্ছে। অবৈধ দখলদারদের তালিকার কাজও এগিয়ে যাচ্ছে। এসব খাল খননের কাজ প্রক্রিয়াধীন। খাল খনন হলে ইরিগেশন থেকে শুরু করে ব্যাপক উন্নয়নের পাশাপাশি খাল বা নদীর অস্তিত্ব ফিরে পাবে এই অঞ্চলের মানুষ।’

নয়াশতাব্দী/এসএ/এমটি

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ