নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, শুধু বাংলাদেশের ওপর পশ্চিমাদের চাপ নয়, বাংলাদেশেরও চাপ আছে পশ্চিমাদের ওপর। আমরা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি, আলোচনার টেবিলে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়নি। এই দেশ অন্য দেশের কথায় চলবে না, জনগণের কথায় এবং সংবিধানের নিয়মে চলবে।
বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) কুড়িগ্রামের চিলমারী-রৌমারী রুটে ফেরি চলাচলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিআইডব্লিউটিসির ‘কুঞ্জলতা’ দিয়ে চিলমারী-রৌমারী রুটে ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। এখানে ভাড়া কমানোর একটা দাবি রেখেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন। সর্ব সাধারণের সুবিধার জন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে প্রস্তাবিত ভাড়া থেকে কমিয়ে সিএনজিচালিত বেবিট্যাক্সি/অটোরিকশা ৬৬০ টাকা থেকে কমিয়ে ৩০০ টাকা, মোটরসাইকেল ২২০ টাকা থেকে কমিয়ে ১০০ টাকা, বাইসাইকেল ১২০ টাকা থেকে কমিয়ে ৫০ টাকা, জনসাধারণের জন্য প্রস্তাবিত ৮০ টাকা কমিয়ে ৫০ টাকা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধা ও অ্যাম্বুলেন্সের কোনো ভাড়া লাগবে না। এ ছাড়া অন্যান্য যানের ক্ষেত্রে ভাড়া শতকরা পনেরো ভাগ কমানো হয়েছে।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ফেরি চলাচলের কারণে ব্রহ্মপুত্র নদ বিধৌত রৌমারী-রাজীবপুর উপজেলার মানুষদের জেলা শহরে যাতায়াতে ভোগান্তি কমে আসবে। চিলমারী-রৌমারী রাজিবপুর নয়, কুড়িগ্রামের সাথে ঢাকার যোগাযোগ অনেক সহজ হবে, যাতায়াত খরচও কমে যাবে। পরবর্তীতে আরও একটি ফেরি এ রুটে যুক্ত হবে। ওই ফেরি রুটের নাব্যতা বজায় রাখার জন্য দুটি ড্রেজার থাকবে। ফেরি সার্ভিস চলাচলের মধ্য দিয়ে নদীপথে যোগ হলো যোগাযোগের নতুন মাত্রা। ব্রহ্মপুত্র নদ জেলার রৌমারী-রাজীবপুর এ দুই উপজেলাকে আলাদা করে রেখেছে। এ দুই উপজেলার হাজার হাজার মানুষকে জেলা শহরে যাতায়াত করতে একমাত্র নৌকার ওপর ভরসা করতে হয়। বর্ষা মৌসুমে অনেক ঝুঁকি নিয়ে তারা জেলা শহরে আসেন নৌপথে। অন্যদিকে শুষ্ক মৌসুমে চরাঞ্চলে আটকে যায় নৌকা। ফলে দুর্ভোগের সীমা থাকে না তাদের। ফেরি চলাচল করলে কমে আসবে ভোগান্তি।
বিআইডব্লিউটির চিলমারী নৌবন্দরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ব্রহ্মপুত্র নদের বুকে চিলমারী-রৌমারী রুটে নৌপথের দৈর্ঘ্য ২১ কিলোমিটার। তবে নদের ড্রেজিং করা হলে এ পথের দৈর্ঘ্য কমে হবে ১৩ থেকে ১৪ কিলোমিটার। কুড়িগ্রাম জেলার ৯টি উপজেলার মধ্যে দুটি উপজেলা রৌমারী ও চর রাজীবপুর ব্রহ্মপুত্র নদ দিয়ে বিচ্ছিন্ন। এ দুটি উপজেলার মানুষকে নৌকায় করে ঝুঁকি নিয়ে কুড়িগ্রাম জেলা শহরে যেতে হয়। এখন ফেরি চলাচল শুরু হওয়ার পর তারা নিরাপদে ভ্রমণ করতে পারবেন।
বিআইডাব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমোডর আরিফ আহমেদ মোস্তফার সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন, অতিরিক্ত সচিব বিআইডব্লিওটিসির চেয়ারম্যান এস এম ফেরদৌস আলম, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ, জেলা পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন প্রমুখ।
নয়া শতাব্দী/এসএ/আরআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ