স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর এলজিইডি’র পিরোজপুর জেলা কার্যালয়ের উচ্চমান সহকারী মৃণাল কান্তি দাসের বিরুদ্ধে স্ত্রীর লাইন্সেসে কোটি টাকার কাজ পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
সম্প্রতি আইআরআইডিপি প্রকল্পের প্রায় এক কোটি ১৬ লাখ টাকার একটি রাস্তার কাজ পায় ‘রায় কনস্ট্রাকশন’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। রায় কনস্ট্রাকশনের লাইসেন্সটির প্রোপ্রাইটর ঘাটলে দেখা যায় এলজিইডি এর কর্মকর্তা মৃণাল কান্তি দাসের স্ত্রী রিনা রানী মন্ডলের নাম এবং লাইসেন্সটির প্রোপ্রাইটরে যে মোবাইল নম্বরটি দেওয়া হয়েছে সেটি মৃণাল কান্তির নিজেরই নম্বর। শুধু তাই নয় এ কাজের টেন্ডারের লটারি নিয়েও রয়েছে এলজিইডি এর পেশাদার ঠিকাদারদের বিভিন্ন অভিযোগ।
তেমনই একজন পরিচিত ঠিকাদার মো. আব্দুল আলিম জানান, গত ১২ সেপ্টেম্বর দুপুরে এলজিইডি’র জেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ে টেন্ডারের লটারি হয়। যা আমরা কেউ জানি না বা কোনো ঠিকাদার উপস্থিত ছিল না। একজন সহকারী প্রকৌশলী তার অফিসে কোনো ঠিকাদারের উপস্থিতি ছাড়াই লটারি করেছেন এবং সেই সময় উচ্চমান সহকারী মৃণাল কান্তি দাসও উপস্থিত ছিলেন। তাহলে তো এখানে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে টেন্ডারে অনিয়ম হয়েছে। পিরোজপুর এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী একজন দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা। তার আমলেই যতসব দুর্নীতি ও অনিয়ম হচ্ছে। এলজিইডি’র কার্যালয় ঘিরে অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে।
আরেক ঠিকাদার মো. মুরাদ বলেন, এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুস সাত্তারের কাছে আমরা ঠিকাদাররা অসহায়। তিনি যত অনিয়মের মূলহোতা। এলজিইডিতে চাকরি করে এমন কর্মকর্তা কিভাবে ঠিকাদারি লাইসেন্স করল এবং সে কোটি টাকার কাজ পেল। নিশ্চয় এখানে নির্বাহী প্রকৌশলীর হাত আছে। আমরা এই আইআরআইডিপি প্রকল্পের টেন্ডারটি বাতিল করে নতুনভাবে করার দাবি জানাচ্ছি এবং এই দুর্নীতিগ্রস্ত প্রকৌশলীর পদত্যাগ ও বদলি দাবি করছি।
এলজিইডি’র পিরোজপুর জেলা কর্যালয়ের উচ্চমান সহকারী মৃণাল কান্তি দাস বলেন, এ বিষয় আমি কিছু জানি না, অনলাইনে লটারিতে ‘রায় কনস্ট্রাকশন’ নাম উঠছে আমি কি করব, আমার হাতে কিছু আছে?
এছাড়া মৃণাল কান্তি দাসের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরটি ০১৭১২২৩৯০০৭ ‘রায় কনস্ট্রাকশন’ এর ডকুমেন্টে থাকার বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিভাবে নম্বর গেছে তাও আমি জানি না।
এদিকে সরকারি কর্মকর্তা ঠিকাদারি কাজ পাওয়ার বিষয়ে এলজিইডি’র সহকারী প্রকৌশলী ফজলে রাব্বি জানান, টেন্ডারের লটারিতে কোনো অনিয়ম হয়নি। লটারির সময় আমরা ঠিকাদারদের ডাকছিলাম, তারা কেউ আসেনি।
আর এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুস সাত্তার এ বিষয়ে বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানের কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীর ঠিকাদারি লাইসেন্স তা আমার জানা নেই। যদি এমনটা হয়ে থাকে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখব।
তিনি আরও বলেন, কার্যালয়ের উচ্চমান সহকারী মৃণাল কান্তি দাস পিআরএল এ আছে। তার এ বছরের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত চাকরির মেয়াদ আছে। যদি আইআরআইডিপি প্রকল্পের কাজ পেয়ে থাকে সেটি আমরা তদন্ত করে টেন্ডার বালিত করব। ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি কোনো ঠিকাদারি কাজের সাথে যুক্ত হতে পারবেন না।
নয়া শতাব্দী/এসএ/এমটি
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ