নাটোর-৪ (গুরুদাসপুর-বড়াইগ্রাম) আসনের উপনির্বাচনে কে হচ্ছেন আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী, এ নিয়ে দুই উপজেলাজুড়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে শুক্রবার (১৫ সেপটেম্বর) বিকেলে প্রার্থীর নাম জানা যাবে। আগামী ১১ অক্টোবর উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
গত ৩০ আগস্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুসের মৃত্যুতে পদ শূন্য হওয়ায় নাটোর-৪ (গুরুদাসপুর-বড়াইগ্রাম) আসনে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশন। গুরুদাসপুর-বড়াইগ্রাম আসনে উপনির্বাচনে দুই উপজেলার মোট ১৭ জন প্রার্থী আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নপত্র কিনে জমাও দিয়েছেন।
আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে যে সকল আওয়ামী লীগ নেতা দলীয় মনোনয়ন পেতে জোর তদবির ও প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছিলেন তারাই এই উপনির্বাচনে মনোনয়ন পেতে দলের শীর্ষ পর্যায়ের কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন।
৫ বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস জীবিত থাকতে তিনি নিজেই আশাবাদী ছিলেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা তাকেই মনোনয়ন দেবেন। কিন্তু তার মৃত্যুর পর অনুসারীরা বলছেন, এই আসনে যোগ্য পিতার স্থানটি পাবেন তার একমাত্র মেয়ে অ্যাডভোকেট কোহেলী কুদ্দুস মুক্তি। মুক্তি বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য।
তিনি পিতার নিষ্ঠাবান সহচর ছিলেন এবং মাঠের রাজনীতিতে সার্বক্ষণিক সক্রিয় ছিলেন। গুরুদাসপুর ও বড়াইগ্রাম উপজেলায় তার মানবিক সেবার সুনাম রয়েছে। দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে অ্যাডভোকেট কোহেলী কুদ্দুস মুক্তি বলেন, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড দলের প্রতি শতভাগ আনুগত্য রেখে ত্যাগ স্বীকার করে এখন পর্যন্ত কাজ করে যাচ্ছি। ছাত্রজীবন থেকে ‘রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার কারণে দল থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছি। আশা করছি দল এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে নিরাশ করবেন না। তার পরও দলের হাইকমান্ড যার প্রতি আস্থা রাখবে তার হয়েই আমি কাজ করে যাব।
তিনি আরও বলেন, আমি মনোনয়ন পেলে গৌরবের প্রতীক নৌকা মার্কা নিয়ে নির্বাচিত হয়ে জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করে নারী নেতৃত্ব যে দুর্বল নয় সেটি প্রমাণ করে দেব ইনশাআল্লাহ। একই সাথে আমার প্রয়াত বাবা ৫ বারের এমপি এবং নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের দুইবারের সভাপতি ও উত্তর জনপদের নেতার স্বপ্ন পুরণে অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করে তার নির্মল ও আদর্শের রাজনীতির স্মৃতিকে ধরে রাখার চেষ্টা করবো।
এক বিশেষ সূত্রে জানা গেছে, গুরুত্বপূর্ণ এই আসনের উপনির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে এগিয়ে রয়েছেন বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য অ্যাডভোকেট কোহেলী কুদ্দুস মুক্তি। এছাড়াও রয়েছেন গুরুদাসপুর পৌরসভার তিনবারের মেয়র উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শাহনেওয়াজ আলী মোল্লা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগের সভাপতি ও বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আহম্মদ আলী মোল্লা, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম, বড়াইগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যন ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটওয়ারী, বনপাড়া পৌর আ. লীগের সভাপতি কেএম জাকির হোসেন।
গুরুদাসপুর পৌর সভার মেয়র শাহনেওয়াজ আলী মোল্লা মনে করেন, এলাকার উন্নয়ন ও যোগ্যতার বিবেচনায় দল তাকেই মনোনয়ন দেবে। আওয়ামী লীগের ত্যাগী কোনো নেতাকে দলের মনোনয়ন দেয়া উচিত।
উপনির্বাচনে আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ধার্য করা হয়েছে। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হবে ১৮ সেপ্টেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের ১৯ থেকে ২১ সেপ্টেম্বর। আপিল নিষ্পত্তি ২৩ সেপ্টেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৪ সেপ্টেম্বর, ২৫ সেপ্টেম্বর প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ এবং ১১ অক্টোবর ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
নয়া শতাব্দী/এসএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ