চলমান এইচএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ে ভুল প্রশ্নপত্র বিতরণ করায় পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে চরম বিপাকে ৪২ শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) শরীয়তপুর সদর উপজেলার ডোমসার জগৎচন্দ্র ইনস্টিটিউশন অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।
শিক্ষকদের ভুলের কারণে শিক্ষার্থীদের হতে হয়েছে এমন পরিস্থিতির শিকার। উপায়ান্তর না পেয়ে শিক্ষার্থীরা হলের অনিয়মের অভিযোগ এনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত আবেদন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রুটিন অনুযায়ী মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) এইচএসসি পরীক্ষার মানবিক বিভাগের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃত বিষয়ের পরীক্ষা ছিল। সে মতেই ডিগ্রি ইসমাইল হোসেন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৪২ শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে যান সদর উপজেলার ডোমসার জগৎচন্দ্র ইনস্টিটিউশন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে। যথাসময়ে শুরু হয় পরীক্ষা। শিক্ষার্থীরা প্রশ্নপত্র পাওয়ার ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট লেখার পরে হল সুপার পরীক্ষার হলে প্রবেশ করে ভুল প্রশ্ন দেওয়া হয়েছে এমন কথা বলে শিক্ষার্থীদের দেন নতুন প্রশ্ন। তখন শিক্ষার্থীরা পড়ে যান চরম বিপাকে। নতুন প্রশ্ন হাতে পেয়ে অনেকেরই প্রশ্নের উত্তর জানা থাকলেও সময়ের অভাবে পুরো প্রশ্নের উত্তর লিখতে পারবে না বলে হল সুপারকে বলেন। হল সুপার অতিরিক্ত সময় দেয়া হবে বলে শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করেন।
তবে পরীক্ষা শেষ হবার ঘণ্টা পড়ার সাথে সাথেই জোরপূর্বক উত্তরপত্র তুলে নেন শিক্ষক। এতেই হয় বিপত্তি। শিক্ষার্থীরা পড়ে যান পরীক্ষায় ফেল করার আশঙ্কায়। হল সুপার কে বারবার বললেও দেওয়া হয়নি তাদের অতিরিক্ত সময়। ফলে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার ফলাফলে অকৃতকার্য হতে পারে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষকদের এমন কার্যকলাপে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। শিক্ষকদের এমন ভুলের কারণে শিক্ষার্থীদের উপরে পড়বে খারাপ প্রভাব। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হওয়ার ব্যাপারে তারা চরমভাবে ক্ষতি হবে। তিন ঘণ্টা পরীক্ষা দেওয়া থেকে শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত করা হয়েছে বলে ব্যবস্থা নেয়া উচিত মনে করেছেন সচেতন শিক্ষকরা।
শিক্ষার্থীরা আক্ষেপ করে বলেন, পরীক্ষার ফল খারাপ হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য প্রয়োজনীয় নম্বর পাব কিনা তা নিয়ে সন্দিহান।
সজল হোসেন বলে, পরীক্ষার হলে কোনো ম্যাজিস্ট্রেট আসেননি। হলে চুপ থাকতে বাধ্য করা হয়েছে। আশা ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবো, কিন্তু ভর্তির ন্যূনতম পয়েন্ট পেতে কষ্ট হবে।
ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রভাষক জিএম সামিউল ইসলাম বলেন, যাদের অসতর্কতার কারণে এমন ভুল হয়েছে, তাদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে।
এ ব্যাপারে শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, ২নং সেটের স্থানে ৪নং সেট প্রশ্ন প্রদান করেছেন। পরে আবার তারা সেটি পরিবর্তন করে দেয়। তবে এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কারো সাথে কথা বলেনি হল সুপার। শিক্ষার্থীরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে বিষয়ে শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করছেন এবং যারা এ কর্মকাণ্ড করেছেন তাদের বিষয়েও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নয়া শতাব্দী/আরআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ