ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রামে অজ্ঞান পার্টির মূলহোতাসহ গ্রেফতার দুই

প্রকাশনার সময়: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২০:৩৬

চট্টগ্রামে গণপরিবহনে অজ্ঞান পার্টি চক্রের মূলহোতা আবদুস সাত্তারসহ (৬৩) তার সহযোগী মো. ইসমাইলকে (৩৩) গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে পৃথক অভিযানে নগরীর পাহাড়তলী ও খুলশী থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ঘটনায় ভিকটিমদের কাছ থেকে নেয়া ১৩টি মোবাইল উদ্ধার এবং অজ্ঞান কাজে ব্যবহৃত ওষুধও উদ্ধার করা হয়। এসব বিষয় নিশ্চিত করেছেন পিবিআইয়ের চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান। পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার উপ-পুলিশ পরিদর্শক মো. শাহাদাত হোসেন জানান, ২০২২ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর সীতাকুণ্ড থেকে চট্টগ্রাম শহরের ফিশারি ঘাটে মাছ কিনতে আসা আবু ছৈয়দ (৫৪) নামে এক ব্যবসায়ী বাসে অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়ে। পরে তাকে সীতাকুণ্ডের বড় দারোগার হাট বাজারে বাসের মধ্যে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯ দিনের মাথায় মারা যায় আবু ছৈয়দ। এই ঘটনা তার ছেলে বাদী হয়ে সীতাকুণ্ড থানায় মামলা দায়ের করলে মামলাটি তদন্তে দায়িত্ব পায় পিবিআই। পরে চলতি বছরের জানুয়ারিতে এই ঘটনায় জড়িত মহিন উদ্দিন (৩০), মো. আনোয়ার হোসেন (৪২), মো. রফিকুল ইসলাম (৪২) তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। গতকাল এই ঘটনায় জড়িত আবদুস সাত্তারকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী ইসমাঈলকেও গ্রেফতার করা হয়।

তিনি আরও জানান, পাঁচ দিন আগে গত ৩১ আগস্ট কোতোয়ালী এলাকার বাসিন্দা জনৈক বিশ্বজিৎ দাশ (৩৭) সীতাকুণ্ড থানাধীন ভাটিয়ারীতে ফার্নিচার ক্রয় করার উদ্দেশ্যে নিউ মার্কেট মোড় হতে ভাটিয়ারীগামী ৪নং লোকাল বাসযোগে রওনা করেন। তাকে অনুসরণ করে কয়েকজন ব্যক্তি সেই লোকাল বাসে উঠে তার পাশের সিটে একজন বসে, সামনের সিটে একজন এবং পেছনের সিটে একজন বসে। বিশ্বজিতের পাশের সিটে বসা আবদুস সাত্তার নামের ব্যক্তি তাকে কয়েকটা লিফলেট দেয় এবং নিজেকে হামদর্দ কোম্পানির সেলসম্যান হিসাবে পরিচয় দেয়। সে বিশ্বজিৎ দাশকে হামদর্দ কোম্পানির যৌন দূর্বলতা দূর করা, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণসহ আয়ুবর্ধক কাজের বিশেষ ওষুধ বলে একধরনের হালুয়া সেবন করতে দেয়। বিশ্বাস অর্জনের জন্য তার পেছনে ও সামনের সিটে থাকা লোককে স্যাম্পল খেতে দিলে সে তা সেবন করে এবং সামনের সিটে বসা লোককে দিলে সেও সেবন করে। পরবর্তীতে তারা সেবন করে অনেক প্রশংসা করে।

ভাটিয়ারী বিএম গেইটের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পৌঁছালে বিশ্বজিৎ সরল বিশ্বাসে উক্ত হালুয়া সেবন করেন। হালুয়ায় চেতনানাশক থাকায় সেবন করার পর পরই তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। এরপর অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা তার পকেটে থাকা নগদ ২২ হাজার টাকাসহ একটি মোবাইল চুরি করে নিয়ে যায়। পরে একজন সিএনজি চালক ভিকটিমকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে ফিশারিঘাট নিয়ে গেলে স্থানীয় লোকজন চিনতে পেরে ভিকটিমকে দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করায়।

পরে গতকাল ভিকটিম বিশ্বজিৎকে তার মোবাইল উদ্ধার হয়েছে বলে কল দিলে তিনি এসে আবদুস সাত্তারকে চিনতে পারেন এবং এই ঘটনায় তিনি সীতাকুণ্ড থানায় আবদুস সাত্তার ও তার সহযোগী মো. ইসমাইলসহ অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

নয়াশতাব্দী/এমটি

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ