ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভাঙা সেতুতে দুর্ভোগের সঙ্গে বেড়েছে ভাড়াও

প্রকাশনার সময়: ২৫ আগস্ট ২০২৩, ১৮:৫৭

সুনামগঞ্জ-জগন্নাথপুর-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কের কাটাগাঙ্গের সেতু ভেঙে যাওয়ায় গত তিনদিন ধরে ঢাকার সঙ্গে সরাসরি যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে জনদুভোর্গের পাশাপাশি অতিরিক্ত ভাড়াও গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের।

শুক্রবার (২৫ আগস্ট) সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ক্ষতিগ্রস্ত সেতুর উত্তরপাড় থেকে দক্ষিণপাড়ে ইঞ্জিন চালিত খেয়া নৌকার মাধ্যমে যাতায়াত করছে জনসাধারণ। জনপ্রতি ১০ টাকা করে নৌকার ভাড়া দিতে হচ্ছে।

যাত্রীরা জানান, ঝুঁকিপূর্ণ জোড়াতালির সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে জনসাধারণ। এর মধ্যে যাতায়াতে অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হচ্ছে। জগন্নাথপুর উপজেলা সদর থেকে আগে (সেতু ভাঙার পূর্বে) রানীগঞ্জ বাজারে যাতায়াত করতে সিএনজির ভাড়া ছিল ৩০ টাকা। এখন এ সড়কে যাতায়াতে খরচ হচ্ছে ৪৫ টাকা। এছাড়া ইজিবাইকে (টমটম) ৪০ টাকা ভাড়া নিচ্ছে।

নারিকেলতলা গ্রামের রাহুল আমীন বলেন, সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছি আমরা। সেই সাথে যাতায়াতে অতিরিক্ত টাকা গুনতে হচ্ছে। সেতু ভাঙার আগে রানীগঞ্জ বাজার থেকে উপজেলা সদরে ভাড়া ছিল ৩০ টাকা। এখন রানীগঞ্জ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত সেতুর এলাকা পর্যন্ত জনপ্রতি ভাড়া ১৫ টাকা। এরপর ১০ টাকা দিয়ে খেয়া পার হয়ে উত্তরপাড়। সেখান থেকে আবার ২০ টাকা ভাড়া দিয়ে সিএনজি যোগে উপজেলা সদরে যেতে হয়।

রানীগঞ্জের সালেহ আহমদ জানান, দুভোর্গের পাশাপাশি যাতায়াত ভাড়া বেড়েছে। আগে জগন্নাথপুরে যেতে সিএনজিতে জনপ্রতি খরচ হতো ৬০ টাকা। এখন খেয়া নৌকার ভাড়া মিলে ৯০ টাকা গুনতে হচ্ছে।

রানীগঞ্জ সড়কের সিএনজিচালক তানভীর আহমদ বলেন, সেতু ভেঙে যাওয়ায় যাত্রী কমেছে। সে অনুয়ায়ী ভাড়া বাড়েনি। নৌকায় পারাপারের ভাড়াটাই শুধু বাড়তি।

আব্দুল খালিক নামের এক খেয়া নৌকার মাঝি জানান, নৌকা পারাপারে আমরা ন্যায্য ভাড়াই নিচ্ছি।

রানীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছদরুল ইসলাম বলেন, জগন্নাথপুরের আট ইউনিয়নের মধ্যে সবচেয়ে বৃহৎ ইউনিয়ন হচ্ছে রানীগঞ্জ। এখানকার লোকজনকে জগন্নাথপুর-রানীগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক দিয়েই সদরে যাতায়াত করতে হয়। কাটাগাঙ্গের সেতুটি ভেঙে পড়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন লোকজন। এর মধ্যে যাতায়াত খরচও বেড়েছে।

জানা যায়, গত মঙ্গলবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ থেকে ৫০০ বস্তা সিমেন্টসহ একটি ট্রাক জগন্নাথপুরে আসার সময় জগন্নাথপুর-রানীগঞ্জ-আউশকান্দি আঞ্চলিক মহাসড়কের ইছগাঁও এলাকায় কাটাগাঙ্গের স্টিলের বেইলি সেতুতে উঠতেই সেতু ভেঙে ট্রাকটি নদীর পানিতে তলিয়ে যায়। এ ঘটনায় চালকসহ ট্রাকে থাকা দুইজনই ডুবে যায়। দুই ঘণ্টাব্যাপী উদ্ধার অভিযানের পর সন্ধ্যায় ট্রাক চালক ভোলাগঞ্জের ফারুক মিয়া (৪০) ও সিলেটের ধোপাতল এলাকার চালকের সহকারী জাকির মিয়ার (৩৫) মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

অতিরিক্ত মালবোঝাই ট্রাক উঠে বেইলি সেতু ভেঙেছে এমন অভিযোগে মঙ্গলবার রাতে জগন্নাথপুর থানায় গাড়ির মালিক ও চালকের বিরুদ্ধে তিন কোটি টাকার মামলা করেছেন পাগলা-ছাতক সড়ক উপবিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী আশিকুর রহমান।

এদিকে সেতু ভেঙে যাওয়ায় রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এই সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে জগন্নাথপুর তথা সুনামগঞ্জবাসীর দুর্ভোগ বেড়েছে।

সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল ইসলাম জানান, ক্ষতিগ্রস্ত সেতু পুনঃস্থাপনের কাজ চলছে।

নয়া শতাব্দী/এসএ/আরআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ