ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

টিউশনি করে জিপিএ-৫ পেয়েও ভর্তিতে অনিশ্চয়তা

প্রকাশনার সময়: ১০ আগস্ট ২০২৩, ১২:১২ | আপডেট: ১০ আগস্ট ২০২৩, ১৩:২০

টিউশনি পড়িয়ে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেলেও অর্থের অভাবে কলেজে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছেন রাত্রী সরকার। উচ্চশিক্ষার জন্য ভর্তি ও পড়ালেখার খরচের চিন্তায় বাবা-মায়ের চোখমুখেও শুধু হতাশার ছাপ। রাত্রী সরকার নেত্রকোণার পৌর সদরের আশকিপাড়া এলাকার দিনমজুর স্বপন সরকারের মেয়ে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মদন পৌর সদরের ৭ নং ওয়ার্ডের আশকিপাড়া এলাকার দিনমজুর দুই সন্তানের জনক স্বপন সরকারের মেয়ে রাত্রী সরকার। তার বাবা খুবই হতদরিদ্র পড়ালেখার খরচ চালাতে যখন হিমশিম খাচ্ছিল সেই সময়ে পড়ালেখার পাশাপাশি নিজ খরচ মেটাতে অন্য শিশুদের টিউশনি পড়ানো শুরু করেন রাত্রী সরকার। ভিটাবাড়ি ছাড়া আর কিছুই নেই তাদের। থাকার মতো আছে একটি টিনের চাপড়া ঘর। অন্যের জমিতে কৃষি কাজ ও বাজারে তরকারি বিক্রি করে সংসার চালান তার বাবা।

অভাবের এ সংসারে কষ্ট করে পড়াশোনা করেছে রাত্রী সরকার। মদন শহীদ স্মরণিকা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০২৩ সালে এসএসসিতে মানবিক শাখায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন তিনি।

রাত্রী সরকার জানান, ‘এতদিন নিজে টিউশনি পড়িয়ে পড়ালেখার খরচ জুগিয়েছি। বাবার বই কিনে দেওয়ার সামর্থ্যও ছিল না। স্যারেরা আমাকে বই দিয়ে ফ্রিতে প্রাইভেট পড়ার সুযোগ দিয়ে অনেক সাহায্য সহযোগিতা করেছেন। আমার ইচ্ছা একটি ভালো কলেজে ভর্তি হতে। তবে ভালো কোনো কলেজে ভর্তি এবং পড়ালেখার খরচ চালানো আমার বাবার পক্ষে সম্ভব নয়। অর্থের অভাবে আমার ভালো কলেজে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ভবিষ্যতে একজন ইউএনও হয়ে দেশ ও অসহায় মানুষের সেবা করতে চাই। জানি না সেই স্বপ্ন পূরণ হবে কি না।

রাত্রীর মা দীপ্তি সরকার বলেন, অভাব-অনাটনের মধ্যেও মেয়েটি অন্য বাচ্চাদের প্রাইভেট পড়িয়ে ভালো ফলাফল করেছে। ভালো ফলাফল শুনে খুশি হইছিলাম ঠিকই, কিন্তু মেয়েটি ভালো কলেজে পড়ার জন্য কান্নাকাটি করতেছে। কেমনে ভর্তি করবো? এমনেই তার বাবা দিন মজুরের কাজ করে এবং মাঝে মধ্যে সবজি ব্যবসা করে কোনো মতে সংসার চলে। কোনো রকম খেয়ে না খেয়ে বেঁচে আছি। ভালো কলেজে ভর্তি করার সামর্থ্য আমাদের নাই। সমাজের বিত্তশালী আর সরকার যদি সহযোগিতা করেন তাহলে হয়তো মেয়েটা ভালো কলেজে ভর্তি করানো সম্ভব হবে।

বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক আক্কাস উদ্দিন বলেন, মেয়েটি খুবই কষ্ট করে প্রাইভেট পড়িয়ে ভালো ফলাফল করেছে। স্কুল থেকে তার কোনো পরীক্ষার ফি সহ কোনো টাকা নেওয়া হতো না। গরিব পরিবারের সন্তান হয়েও ভালো রেজাল্ট করে এখন অর্থের অভাবে ভালো কলেজে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে তার। সমাজের বিত্তশালী, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এগিয়ে এলে মেয়েটির শিক্ষার পথ সুগম হবে বলে আমার বিশ্বাস।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ