মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সাহেবনগর গ্রামের হেফজখানার খাদেম ছৈরুদ্দীন হত্যা মামলায় দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, একই উপজেলার সাহেবনগর দক্ষিণপাড়া গ্রামের মৃত আলী হোসেনের ছেলে ইমাদুল হক (৫৮) ও একই গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে খোকন আলী (৪৩)।
মঙ্গলবার দুপুরে জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক শহিদুল্লাহ এ দণ্ডাদেশ প্রদান করেন। এছাড়াও আসামিদের ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ছৈরুদ্দিন সাহেবনগর দিক্ষপাড়াস্থ কবরস্থানম হেফজখানা ও ঈদগাহ মাঠের খাদেম ছিলেন। এজন্য কমিটির কাছ থেকে কোন টাকা পয়সা নিতেন না তিনি। প্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্র করে আসামি ইমাদুল ও শুকুর আলীর সাথে তার বিরোধ বাধে। ২০২০ সালের ২ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টার দিকে খাদেম ছৈইরুদ্দিন তার হেফজখানার ছাত্র পলাশকে নিয়ে হেফজখানায় দানকৃত তিনটি ছাগলের জন্য কাঁঠালের পাতা আনতে বের হয়। তারা কবরস্থানের জঙ্গলের মধ্যে পৌঁছালে সেখানে পূর্বপরিকল্পিতভাবে বসে থাকা আসামি দুইজন ধারালো দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ছৈইরুদ্দিনের উপর হামলা চালায়। এলোপাতাড়ি কুপিয়ে তাকে হত্যা করে।
এ ঘটনায় ৩ সেপ্টেম্বর নিহতের ছেলে আখের আলী দুইজনকে আসামি করে গাংনী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তভার পড়ে গাংনী থানার তৎকালীন ওসি তদন্ত সাজেদুল ইসলামের উপর। ঐ বছরেই তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পুলিশ হেডকোয়র্টারের মাধ্যমে তদন্তভার কুষ্টিয়া পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তরের জন্য আবেদন করেন। মামলার তদন্তভার পড়ে কুষ্টিয়া পিবিআইয়ের এসআই শরিফুল ইসলামের উপর। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ৪ নভেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তিনি। এ মামলায় স্বাকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় দুই আসামি। ২৩ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য শেষে আদালত এ রায় প্রদান করেন।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাড. পল্লব ভট্টাচার্য, আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাড. আতাউল হক ও অ্যাড. কামরুল হাসান।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী। আর উচ্চ আদালত যাবার কথা বলেছেন আসামি পক্ষের আইনজীবীরা।
নয়াশতাব্দী/জেডএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ