ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভুল চিকিৎসায় মা ও নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ

প্রকাশনার সময়: ১৮ জুলাই ২০২৩, ১৫:০০ | আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২৩, ১৫:০৭

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে আল ফারুক নামের একটি প্রাইভেট হসপিটালের গাফিলতি ও চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় নাজমা খাতুন (৩৫) নামের এক প্রসূতি ও নবজাতক কন্যা শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। স্বজনদের দাবি ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার কারণে তাদের মৃত্য হয়েছে।

এ ঘটনায় সোমবার রাতে নিহতের স্বজনরা হসপিটাল ঘেরাও করে চিকিৎসক ফারজানা তালুকদার ন্যান্সির শাস্তি দাবি করেন।

নাজমা খাতুন রামগঞ্জ পৌর জগৎপুর গ্রামের কোয়াজি বাড়ির প্রবাসী আসাদ উল্যার স্ত্রী ও তিন সন্তানের জননী।

নাজমা খাতুনের বড় মেয়ে জ্যোতি আক্তার (যুথি) জানান, গত ৩০ জুন তার মা নাজমা খাতুন রামগঞ্জ আল ফারুক হসপিটালের চিকিৎসক ফারজানা তালুকদার ন্যান্সির কাছে নিয়মিত চেকআপ করাতে আসেন। এ সময় তিনি চিকিৎসককে তার স্বাস্থ্যগত সমস্যার কথা জানালে ন্যান্সি ইনজেকশন দিয়ে ব্যথা কমিয়ে দেয়ার পর শারিরীক সমস্যা আরও বাড়তে থাকে। চলতি মাসের ২ তারিখে তীব্র ব্যাথা নিয়ে আবারও হসপিটালে আসলে ঐ চিকিৎসক তাকে দ্বিতীয়বারের মতো ইনজেকশন দিয়ে বাসায় চলে যেতে বলেন। তিন তারিখেও আমার মা হসপিটালে আসলে চিকিৎসক জানান, কোনো সমস্যা নাই।

পরদিন থেকে গর্ভের বাচ্চার নড়াচড়া না হওয়ায় আমরা চতুর্থবারের মতো মাকে হসপিটালে আনলে চিকিৎসক জানান, বাচ্চার হার্টবিট নেই-বাচ্চা গর্ভে মারা গেছে। দ্রুত সিজার করিয়ে আমার মায়ের শারিরীক অবস্থা বেশি ভালো না বলে ঢাকায় নিয়ে যেতে বলে।

উপায়ন্তর না দেখে আমার মাকে ঢাকার আদ্ব-দ্বীন মেডিকেল কলেজ হসপিটালে নিয়ে গেলে সেখানকার চিকিৎসক জানান, নাজমা খাতুন ভুল চিকিৎসকের শিকার হয়েছেন। প্রায় ১২/১৩ দিন সেখানে চিকিৎসা করিয়ে লাখ লাখ টাকা খরচ করলেও মাকে বাঁচাতে পারিনি। আমরা উক্ত চিকিৎসকের শাস্তি দাবি করছি। এখন তারা আমাদের টাকা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে চাপ প্রয়োগ করছে।

নাজমা খাতুনের ঝা মীনা বেগম জানান, মাত্র ৫/৭ মিনিটে আমার ঝা’এর সিজার করেই তাড়াহুড়ো উক্ত চিকিৎসক ঢাকায় নিয়ে যেতে বলেন। আমরা ঢাকায় নিয়ে গেলে ঐখানকার চিকিৎসক জানান, নাজমা খাতুন ভুল চিকিৎসার শিকার হয়েছেন। সোমবার সকালে আমার ঝা আদ্ব-দ্বীন হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। আমরা মরদেহ নিয়ে রামগঞ্জে আসতে সন্ধা হয়ে যায়। খবর পেয়ে আমাদের আত্মীয়-স্বজনরা হসপিটাল ঘেরাও করে উক্ত চিকিৎসকের শাস্তি দাবি করেন।

স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করেন, রামগঞ্জ উপজেলার বেশিরভাগ প্রাইভেট হসপিটালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সেবা প্রদান করলেও অধিকাংশ চিকিৎসকের কোনো কাগজপত্র নেই। এ ব্যপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তদারকি করা প্রয়োজন।

সোমবার অভিযুক্ত চিকিৎসক ফারজানা তালুকদার ন্যান্সির ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে বার বার কল দেয়া হলেও বন্ধ পাওয়া যায়। আজ মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) দুপুরে উনার ব্যক্তিগত আরেকটি মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে কল দিলে তিনি জানান, সাংবাদিকদের সাথে এ ব্যপারে কথার বলার প্রয়োজন নাই। যাদের সাথে কথা বলার দরকার তাদের সাথে কথা হয়েছে।

হসপিটাল মালিক আল ফারুক জানান, আপনারা তো অনেকেই নিউজ করেছেন-ফেসবুকে ভাইরাল করেছেন। অন্য কোনো হসপিটাল মনে হয় এমন চিকিৎসা করেন না। সব ভুল আমাদেরই, এখন আর কি করা।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. গুনময় পোদ্দার মোবাইলে প্রথমে বিষয়টি না জানার কথা বললেও পরে জানান, শুনেছি আমি হালকা হালকা, আচ্ছা আমি খোঁজ নিই। আমি ঢাকার বাহিরে আছি-তো। পুরো বিষয়টি বলতে পারবো না।

নয়াশতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ