শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ৩১ কার্তিক ১৪৩১
উপবৃত্তি পাইয়ে দিতে ঘুষ

টাকা ফেরত চাওয়ায় রেজিস্ট্রেশন বাতিলের হুমকি

প্রকাশনার সময়: ১৫ জুলাই ২০২৩, ২০:০৭ | আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২৩, ২০:২৯

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে এক মাদরাসার অফিস সহকারীর (কেরানি) বিরুদ্ধে উপবৃত্তি পাইয়ে দিতে এক হাজার টাকা করে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এদিকে, ঘুষ দেওয়া শিক্ষার্থীদের নাম উপবৃত্তির তালিকায় না থাকায় টাকা ফেরত চাইলে ওই কেরানি উল্টো শিক্ষার্থীদের রেজিস্টেশন বাতিল করে দেয়ার হুমকি দেন।

উপজেলার ডিএস কামিল মাদরাসায় এ ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থী ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবে কর্মরত সংবাদকর্মীদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ঈশ্বরগঞ্জ ডিএস কামিল মাদরাসার ফাজিল প্রথম বর্ষের ৪৪ শিক্ষার্থী উপবৃত্তির জন্য আবেদন করেন। তখন অফিস সহকারী ফয়জুর রহমান শিক্ষার্থীদের বলেন তাকে হাজার টাকা করে দিলে সবাইকে উপবৃত্তি পাইয়ে দিবে। ফলে উপবৃত্তি পাওয়ার বেশিরভাগ শিক্ষার্থী তাকে ১ হাজার টাকা

করে দেন। তবে উপবৃত্তির তালিকায় নাম আসে মাত্র ১০-১২ জনের। এ অবস্থায় তালিকায় নাম না থাকায় টাকা ফেরত চাইলে অফিস অফিস সহকারী ফয়জুর রহমান শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন বাতিলের হুমকি দেন। পাশাপাশি গালাগাল করেন।

রেজিস্টেশন বাতিলের ভয়ে অধিকাংশ শিক্ষার্থী চুপ হয়ে গেলেও জেসমিন আক্তার ও মারজিনা আক্তার নামের দুই শিক্ষার্থী প্রতিবাদ করেন।

তারা বলেন, আমরা দরিদ্র পরিবারের সন্তান। কেরানি ফয়জুর রহমান উপবৃত্তি পাইয়ে দেয়ার কথা বলে আমাদের কাছ থেকে ১ হাজার টাকা এবং উপবৃত্তির ফরম বাবদ আরও ২শ টাকা নেন। কিন্তু তালিকায় না আসায় টাকা ফেরত চাইতে গেলে সে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। একপর্যায়ে বলতে থাকেন বেশি বাড়াবাড়ি করলে তোদের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে দিব।

ফাজিল প্রথম বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী সাইদুলের অভিযোগ, কেরানি তার কাছ থেকেও উপবৃত্তি পাইয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে হাজার টাকা দাবি করেন। পরে আমি তাকে উপবৃত্তি বাবদ ৭০০ টাকা এবং আবেদনের জন্য ২০০ টাকা দেই। কিন্তু তালিকায় আমার নাম না থাকায় টাকা ফেরত চাইলে গেলে হুমক ধমকি দেন।

তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেন অভিযুক্ত অফিস সহকারী ফয়জুর রহমান বলেন, আমাকে জড়িয়ে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে সবই ভিত্তিহীন, বানোয়াট মিথ্যা।

এ বিষয়ে ঈশ্বরগঞ্জ ডিএস কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মো. শহীদুল্লাহ বলেন, উপবৃত্তির তালিকা তো আর আমরা করি না। শিক্ষার্থীদের এই বিষয়টা বার বার অবগত করার পরও কেন তারা কেরানিকে টাকা দিবে। যেহেতু অভিযোগ উঠেছে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে'।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোসা. হাফিজা জেসমিন বলেন, উপবৃত্তি পেতে টাকা দিতে হবে কেন? শিক্ষার্থীদের অভিযোগের সত্যতা মিললে ওই কেরানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এবং ঈশ্বরগঞ্জ ডিএস কামিল মাদরাসার গভর্নিং বডির সভাপতি মো. মেহেদী হাসান বলেন, সরকার যেখানে বিনামূল্যে উপবৃত্তি দিচ্ছে, সেখানে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার দুঃসাহস সে পায় কি করে। তদন্ত সাপেক্ষে সত্যতা পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ