ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

কচুর লতি চাষে ঝুঁকছে গৌরীপুরের কৃষকরা

প্রকাশনার সময়: ১২ জুলাই ২০২৩, ২০:০১ | আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৩, ২০:২৫

ফসলের মাঠজুড়ে সবুজ কচুগাছ। সেই গাছের ডগা থেকে বের হয়েছে লতি। কৃষক জমি থেকে লতি সংগ্রহের করে পানিতে পরিষ্কার করে আঁটি বেঁধে রাখছেন উঁচু সড়কের পাশে। সেখান থেকে ভ্যান কিংবা সাইকেলে বোঝাই করে লতি নেওয়া হচ্ছে স্থানীয় বাজারে।

বুধবার (১২ জুন) সকালে এমন দৃশ্যের দেখা মিললো ময়মনসিংহের গৌরীপুরে অচিন্তপুর ইউনিয়নের লংকাখোলা গ্রামে।

কৃষকরা জানান, উপজেলার মাওহা ইউনিয়নের ভুটিয়ারকোনা বাজারেই লতির পাইকারি হাট। পাইকাররা ট্রাক-পিকআপ নিয়ে এ হাটে এসে দরদাম করে লতির আঁটি কিনেন। পরে গাড়ি বোঝাই করে লতি নিয়ে যান রাজধানী ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম সহ দেশের নানা প্রান্তে।

এক সময় সড়কের পাশে, বন-জঙ্গলে, জমির আইল, বাড়ির উঠানে, খাল-বিলের পাড়ে অযত্নে অবহেলায় বড় হতো কচুগাছ। সেখান থেকেই লতি সংগ্রহ করে নিন্মবিত্ত মানুষ নিজেরা খাওয়ার পাশাপাশি বাজারে বিক্রি করতো। কিন্ত এখন বাণিজ্যিকভাবে উন্নতজাতের কচু চাষাবাদ করে লতি বিক্রি করে লাভের মুখ দেখছে কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় লতি চাষ বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। চলতি মৌসুমে গৌরীপুর উপজেলায় ১১৮ হেক্টর জমিতে কচুর লতির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

উপজেলার মাওহা, অচিন্তপুর, রামগোপালপুর ও ভাংনামারী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, লতি চাষে ব্যস্ত সময় পাড় করছে কৃষকরা। কচুর চারা জমি রোপণের পর সেচ দেয়ার পাশাপাশি জৈব ও রাসায়নিক সার সুষমভাবে ব্যবহার করলে ৪০ দিন থেকেই লতি উত্তোলন করা যায়। তাই স্বল্প সময়ে অল্প খরচে ভালো ফলন ও লাভ হওয়ায় কৃষকরা অন্যান্য সবজি চাষের পাশাপাশি কচুর লতি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে।

লংকাখোলা গ্রামের কৃষক নূরুল আমিন বলেন, আমি পৌষ মাসে ৫০ শতক জমিতে কচুর লতি চাষ করেছি। সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। ইতিমধ্যে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার লতি বিক্রি করেছি। আরো প্রায় ৩০ হাজার টাকার মতো লতি বিক্রি করতে পারেবো।

ভুটিয়ারকোনা গ্রামের কৃষক খোকন মিয়া বলেন, অন্যান্য ফসলের তুলনায় কচুর লতি চাষে শ্রম ও খরচ কম। জমিতে কচু একবার রোপণ একাধিক বার লতি উত্তোলন করা যায়। ফাল্গুন মাসে প্রতি মণ লতি ৪ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। তবে দাম কমে ২ হাজার টাকায় প্রতি মণ বিক্রি করেছি।

লতির পাইকার আলতাব হোসেন খান বলেন, বর্তমানে কচুর চেয়ে লতির চাহিদা বেশি। উপজেলার বিভিন্ন হাট থেকে আমরা লতি সংগ্রহ করে ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করি। ফাল্গুন, চৈত্র মাসে লতির দাম বেশি থাকে। তবে এখন বাজার একটু কম।

উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কৃষি অফিসার নিলুফার ইয়াসমিন জলি বলেন, কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় উপজেলায় লতি চাষ বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। লতি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন উচ্চ মূল্যের সবজি। তাই কৃষক এই সবজি চাষ করে ভালো দাম পেয়ে থাকে। কৃষি অফিসের পরামর্শে কম খরচে ভালো ফলন ও দাম পাওয়ায় কৃষক দিন দিন এ সবজি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ