দালালের মাধ্যমে লিবিয়া হয়ে সমুদ্র হয়ে ইতালি যাওয়ার পথে ট্রলার ডুবিতে আব্দুল নবী (৩০) নামে নরসিংদীর একজনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত ১৩ জন।

বৃহস্পতিবার (২২ জুন) দিবাগত রাতে ট্রলার ডুবিতে আব্দুল নবীর মৃত্যু ও অন‍্যদের নিখোঁজের খবর পান স্বজনরা।

নিহত আব্দুল নবী রায়পুরা উপজেলার উত্তর বাখরনগর ইউনিয়নের বড়চর গ্রামের মৃত হযরত আলীর ছেলে।

পরিচয় পাওয়া নিখোঁজ ৬ যুবক হলেন, বেলাব উপজেলার টান লক্ষ্মীপুর ও চর লক্ষ্মীপুর এলাকার বিল্লাল মিয়ার ছেলে সৈকত (২০), রহিম মিয়ার ছেলে আবু তাহের (২৭), রতন মিয়ার ছেলে জহিরুল ইসলাম (১৯), আউয়াল মিয়ার ছেলে উজ্জল (১৮), ওবায়দুল্লাহর ছেলে রহমত উল্লাহ (২০), মোক্তার হোসেন এর ছেলে জিহাদ (১৯) এবং কুলিয়ারচর উপজেলার বড় ছয়সুতি এলাকার বাছেদ মিয়ার ছেলে স্বপন (২৭)। বাকিরা জেলার অন্যান্য উপজেলার বাসিন্দা বলে জানা গেছে।

জানা যায়, নিহত নবীসহ নিখোঁজ যুবকেরা ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা খরচ করে দালাল চক্রের মাধ্যমে অবৈধভাবে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে দেশ ছেড়েছিল।

শুক্রবার (২৩ জুন) সকালে নিহত আব্দুল নবীর বাড়িতে গেলে তার ভাই ও মা জানায়, আব্দুল নবী এর আগে ৫ বছর সৌদি আরবে ছিল। সৌদি থেকে দেশে ফিরে চার মাস আগে সে দালাল চক্রের মাধ্যমে লিবিয়া হয়ে ইতালি পাড়ি দেওয়ার উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়ে। এক মাস আগে পরিবারের সাথে ফোনে শেষ কথা হয়েছিল আব্দুল নবীর। এরপর তার সাথে আর কোনো যোগাযোগ হয়নি। বৃহস্পতিবার ২২ জুন রাতে খবর আসে আব্দুল নবীর মরদেহ পাওয়া গেছে।

বেলাব উপজেলার টান লক্ষ্মীপুর ও চরলক্ষ্মীপুর গ্রামে গিয়ে নিখোঁজ যুবকদের পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা যায়, নিখোঁজ এক যুবকের সাথে বাবা-মায়ের শেষ কথা হয় প্রায় ১ মাস আগে। তখন তারা পরিবারকে জানিয়েছিল, লিবিয়া থেকে সমুদ্র পথে ইতালি যাওয়ার জন‍্য তাদেরকে গেম ঘরে নেওয়া হচ্ছে। এরপর অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করেও কথা বলতে পারেনি। তাদের সন্তান জীবিত আছে নাকি মারা গেছে, এ নিয়ে বাবা-মা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

এদিকে বেলাব উপজেলার টান লক্ষ্মীপুর গ্রামের মনা মিয়ার ছেলে দালাল আলমের বাড়িতে উপস্থিত হয়ে আহাজারি করতে দেখা যায় নিখোঁজ যুবকদের পরিবারের লোকজনদের।

নিহত আব্দুল নবীর বড় ভাই মাহ আলম বলেন, এর আগেও তারা ইতালি যাওয়ার পথে ৮/১০ কি. মি. যেতে না যেতেই বোট ফেটে যাওয়ায় তারা ভয়ে ফিরে আসে। পরে দালালের অভিভাবকদের সাথে গ্রাম্যসালিসে বসে আমাদের পাসপোর্ট ফেরত দিতে বলি, কিন্তু সে দেয়নি। জোড় করে সে লোকগুলো নিয়ে যায়।

এ ব‍্যাপারে পর্যায়ক্রমে নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) অনিবার্ণ চৌধুরী, রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজিজুর রহমান ও বেলাব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীর আহমেদের সাথে যোগাযোগ করলে বিষয়টি তারা কেউ অবগত নন বলে জানান।

নয়া শতাব্দী/আরআর