ঢাকা, সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ১২ কার্তিক ১৪৩১, ২৪ রবিউস সানি ১৪৪৬

পদ্মার ভাঙনে দিশেহারা মানুষ

হুমকিতে ৪টি ফেরিঘাট
প্রকাশনার সময়: ৩১ আগস্ট ২০২১, ১৮:২৮

দৌলতদিয়ায় পদ্মানদীর ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে মানুষ। পদ্মার ভয়ংকর থাবায় সবকিছু হারিয়ে বাপ-দাদার রেখে যাওয়া মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু রক্ষায় সরকারের সহায়তা চেয়েছেন ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষজন।

গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ায় নদীর ভাঙনে ৪ নং ফে‌রি ঘাট সংলগ্ন সিদ্দিক কাজীর পাড়া জামে মসজিদ ও সংলগ্ন ৫ টি বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

ভাঙন আতঙ্কে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিয়েছে আরো ২০ টি পরিবার। হুমকিতে রয়েছে ৪ টি ফেরিঘাট, ঘাটের সংযোগ সড়ক, ২ শতাধিক পরিবারসহ বহু স্থাপনা।

সরেজমিনে সকাল থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত ভাঙন এলাকায় দেখা যায় অসহায় মানুষের আর্তনাদ। তারা ভাঙনের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের অবহেলাকে দায়ী করেন।

এদিকে ভাঙন প্রতিরোধে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ জরুরিভাবে জিও ব্যাগ ডাম্পিং করতে শুরু ক‌রে‌ছে।

সিদ্দিক কাজীর পাড়া জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ জুবায়ের হোসেন বলেন, ‘সোম ও মঙ্গলবার এ ভাঙন দেখা দেয়। তিনি জানান, সকাল ৮টার দিকে খবর পাই মসজিদের পাশে ভাঙতে শুরু করেছে। দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে চোখের সামনে দেখলাম মসজিদের একাংশ নদীতে বিলীন হয়ে গেল। এ সময় এলাকার ধর্মপ্রাণ মানুষের মধ্যে কান্নাকাটি শুরু হয়ে যায়।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য আশরাফ হোসেন বলেন, ভাঙনে সিদ্দিক কাজীর পাড়ার সিদ্দিক কাজী, হান্নান কাজী, মান্নান কাজী, আরশাদ আলী ও বাচ্চু খানের বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়ে যায়। তবে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় তারা তাদের ঘরবাড়ি গুলো দ্রুত সরিয়ে নিতে সক্ষম হয়।

এছাড়া ভাঙন আতঙ্কে সেখানকার আরো ২০ টি পরিবার তাদের বসতভিটার সরঞ্জাম নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়। যারা রয়েছে তাদের মধ্যেও চরম আতংক বিরাজ করছে।

দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান ভাঙন পরিস্থিতি দেখতে এসে দূর্গতদের দুর্দশা দেখে নিজেই হাউমাউ করে কেঁদে ফেলেন।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমি নিজে, আমাদের উপজেলা চেয়ারম্যান এবং প্রশাসনের পক্ষ হতে গত কয়েকদিন ধরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ও বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষকে এখানে ভাঙনের বিষয়ে আশংকার কথা বলে আসছিলাম। কিন্তু তারা যথা সময়ে ভাঙন রোধের ব্যবস্থা নেয়নি। ভাঙন শুরু হওয়ার পর জিও ব্যাগ ফেলা শুরু হলেও তাতে খুব একটা কাজ হচ্ছে না। বরং এতে সরকারের ব্যয় বেশি হচ্ছে।

তিনি বলেন, গত কয়েক বছরের অব্যাহত ভাঙনে দৌলতদিয়ার ১,২ ও ৩ নং ওয়ার্ড নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। হাজার হাজার মানুষ সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। এ সময় তিনি ঐতিহ্যবাহী দৌলতদিয়া ঘাটকে রক্ষার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

বিআইডব্লিউটিএ'র আরিচা অঞ্চলের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মকবুল হোসেন জানান , ভাঙনের খবর পেয়ে তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ডাম্পিং করতে শুরু করেছি। এটা অব্যাহত থাকবে।

তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, দ্রুত ভাঙন রোধ করতে না পারলে এখানকার ৩, ৪, ৫ ও ৬ নং ফেরিঘাট, ঘাটের পাকাসড়ক, বহু ঘরবাড়ি ও স্থাপনা টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।

নয়া শতাব্দী/এম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ