ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

দেশের অর্থনৈতিক সংকট কেটে যাওয়ার কোনো লক্ষণ নেই : ডা. শাহাদাত

প্রকাশনার সময়: ১৬ জুন ২০২৩, ১৯:০০ | আপডেট: ১৬ জুন ২০২৩, ১৯:১৫

দেশের অর্থনৈতিক সংকট কেটে যাওয়ার কোনো লক্ষণ নেই বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডাক্তার শাহাদাত হোসেন।

অসহনীয় লোডশেডিং ও বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতির প্রতিবাদে শুক্রবার (১৬ জুন) চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির উদ্যোগে পথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। নাসিম ভবন দলীয় কার্যালয় থেকে শুরু করে পথযাত্রাটি এনায়েত বাজার হয়ে পুরাতন রেলস্টেশনে গিয়ে শেষ হয়।

এর আগে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডাক্তার শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘এ সরকার জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ভোটাধিকার প্রয়োগ ভোটকে মিউজিয়ামের তুলে রেখেছে। দেশের গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠিয়েছে। মহান স্বাধীনতার মূলমন্ত্র গণতন্ত্র, সাম্য, মানবিক ও মৌলিক অধিকার আজ সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে এ সরকার। আওয়ামী লীগ একদলীয় সরকার কায়েম করে বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘মিথ্যা মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে বন্দি করে রেখেছে। আমরা অবিলম্বে এই সরকারের পদত্যাগ দাবি করছি। এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। দেশের মানুষের গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিতে হবে। ভোটার অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। অন্যথায় এ দেশের তরুণ সমাজ তাদের ভোটার অধিকার ফিরিয়ে নিতে এই স্বৈরাচার সরকারকে পদত্যাগ করেই রাজপথ ছাড়বে।

তিনি আরও বলেন, ‘মহাবিপর্যয়ে পড়েছে বাংলাদেশ। দেশের অর্থনৈতিক সংকট কেটে যাওয়ার কোনো লক্ষণ নেই। বরং সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে। সামষ্টিক অর্থনীতির প্রায় সবকয়টি সূচকই আরও দুর্বল ও প্রকট হয়ে উঠেছে। অসহনীয় মূল্যস্ফীতি, নজিরবিহীন ডলার সংকট, ডলারের বিনিময়ে টাকার অভূতপূর্ব অবমূল্যায়ন, ব্যাংকিং ও আর্থিক অব্যবস্থাপনা, অপরিণামদর্শী ভ্রান্তনীতি, অদক্ষ ও দলকানা নীতি বৈষম্য, সর্বগ্রাসী দুর্নীতি, বিদেশে অর্থপাচার, ঋণ প্রাপ্তির অপর্যাপ্ততা, সুশাসনের অভাব, সামাজিক—রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক আয় বৈষম্য এবং সর্বোপরি গণতন্ত্রহীনতা বর্তমান অর্থনৈতিক নৈরাজ্যের মূল কারণ। পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার কঠিন শর্তে আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ নিচ্ছে। বলতে গেলে সরকার এখন ব্যাংক থেকে ধার করে এবং আইএমএফের ঋণের ওপর ভর করেই চলছে।’

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাসেম বক্কর বলেন, ‘আগামী নির্বাচন নিয়ে সরকার আবার নতুন চক্রান্ত শুরু করেছে। তারা শুধু নির্বাচনী ব্যবস্থা ধ্বংস করেনি, দুর্নীতি, লুটপাটের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকেও ধ্বংস করে দিয়েছে। সরকার বিদ্যুৎ নিয়ে যে ঢাকঢোল পিটিয়েছে, সেটা এখন কোথায়? আজ সারাদেশ অন্ধকারে নিমজ্জিত। এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বিএনপি আন্দোলন করছে। এতেই সরকার আতঙ্কিত হয়ে নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। কিন্তু যতই চক্রান্তের জাল ফেলা হোক না কেন, এই অবৈধ সরকারের পতন ঠেকানো যাবে না। মামলা দিয়ে, সাজা দিয়ে, চক্রান্ত করে জনগণকে দাবিয়ে রাখা যাবে না। নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা দিয়ে আওয়ামী লীগকে বিদায় নিতে হবেই।’

বিএনপির বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ভিপি হারুন বলেন, ‘অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকতে গিয়ে আওয়ামী লীগ এখন আর আওয়ামী লীগ নেই। তারা এখন রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করতে গিয়েই তাদের আজ এ অবস্থা। বিচার বিভাগ থেকে শুরু করে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সমস্ত রাষ্ট্রযন্ত্র তারা দলীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে কল্পনাও করা যায় না লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীর নামে রাজনৈতিক মামলা হয়। কিন্তু এই ফ্যাসিবাদী সরকার সেই কল্পনাকেও হার মানিয়েছে।’

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান বলেন, ‘জনগণ নিজের ভোট নিজে দিতে পারছে না। দেশের গণতন্ত্রের জন্য প্রয়োজন একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। আজকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে গোটা জাতি ঐক্যবদ্ধ। নতুন প্রজন্ম তাদের ভোটার অধিকার ফিরে পেতে চায়। তাই তারা মাঠে নেমেছে। বেকার তরুণরা তাদের চাকরি চায়। এদেশের মানুষ বাঁচার মত বাঁচতে চায়। দেশের এই সংকটময় অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য এবং মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য দলমত নির্বিশেষে দেশ বাঁচাতে তারুণ্যের সমাবেশ সফল করতে তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে।

এ উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির সহ শ্রমবিষয়ক সম্পাদক এএম নাজিম উদ্দিন, এসএম সাইফুল আলম, এডভোকেট আবদুস সাত্তার, ইয়াসিন চৌধুরী লিটন, নাজিমুর রহমান, শাহআলম, কাজী বেলাল, জাহাঙ্গীর আলম দুলাল, কামরুল ইসলাম প্রমুখ।

নয়াশতাব্দী/এমটি

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ