বহুল প্রত্যাশিত কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচনের ভোট শান্তিপূর্ণভাবে গ্রহণ চলছে। আজ সোমবার সকাল ৮ টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। চলবে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত।
এবারের নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) এর মাধ্যমে ভোট গ্রহণ হচ্ছে। সকাল ৮টা থেকে প্রতিটি কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি লক্ষণীয়। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
এ নির্বাচনে মূল লড়াই হচ্ছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী (আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত) মাসেদুল হক ওরফে রাশেদের মধ্যে। নির্বাচনে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর দলীয় কোনও মেয়র প্রার্থী নেই।
মাঠে থাকা পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে অপর তিন মেয়র প্রার্থী হলেন- জগদীশ বড়ুয়া (হেলমেট প্রতীক), জোসনা হক (মোবাইল ফোন প্রতীক) ও মো. জাহেদুর রহমান (হাতপাখা প্রতীক)। জোসনা হক (নারিকেল প্রতীক) মাসেদুল হক রাসেদের স্ত্রী।
সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে ১২টি ওয়ার্ডে ৩ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটসহ দায়িত্বে রয়েছে ১৫ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ৭ প্লাটুন বিজিবি, ১২টি র্যাব টিম ও ৭৯০ জন পুলিশ।
এদিকে নির্বাচন উপলক্ষ্যে পৌর এলাকায় বহিরাগতদের প্রবেশ ঠেকাতে যাত্রীবাহী যানবাহন চলাচলের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে নির্বাচন অফিস থেকে। তাই গাড়ি চলাচল না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকরা।
সরেজমিনে, কক্সবাজারের বাস টার্মিনাল, কলাতলী, সুগন্ধা ও হলিডে মোড়ে ফুটপাত দিয়ে পর্যটকদের হাতে লাকেজ নিয়ে হাঁটতে দেখা গেছে। পর্যটকদের অনেকেই বলছেন, নির্বাচনের কথা জানা না থাকাই তারা বিপাকে পড়েছেন।
ঢাকার মিরপুর থেকে আসা পর্যটক রবিন মিয়া বলেন, ‘আজ কক্সবাজারে নির্বাচন তা জানা ছিল না। যেহেতু সময় পেয়েছি তাই ঘুরতে এসেছি। কিন্তু সকালে বাস থেকে নেমে দেখি লোকাল কোনো গাড়ি চলছে না। তাই কোনো উপায় না পেয়ে হেঁটে হেঁটে হোটেলে যাচ্ছি।’
কুমিল্লার হাফিজুল ইসলাস রুবাইদ বলেন, ‘কক্সবাজারে নির্বাচন হবে সেটা জানতাম, কিন্তু এভাবে গাড়ি চলাচল করতে দেবে না তা বুঝতে পারিনি। এখানে এসে গাড়ি না পেয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছি। একটা রিকশাও পাচ্ছি না।’
কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্টহাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেলিম নেওয়াজ বলেন, ‘সপ্তাহিক ছুটির দিন শেষে কক্সবাজারে অবস্থানরত বেশিরভাগ পর্যটক রোববার চলে গেছেন। যে সব পর্যটকরা এখনো কক্সবাজারে রয়েছেন তাদের কষ্টটা আমরা বুঝতে পারছি। তারপরও নির্বাচনী নিয়ম-কানুনের জন্য পর্যটকদের এই সাময়িক সমস্যার জন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক থাকবে।’
কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম জানান, পর্যটকরা থাকবে সাগরপাড়ে। রাস্তায় পর্যটকদের কাজ নেই।
৪৩টি কেন্দ্রে ২৪৫টি কক্ষ রয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্র ও কক্ষ সিসিটিভি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত থাকবে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা এসএম শাহাদাত হোসেন।
তিনি বলেন, ‘অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সকল প্রস্তুতি শেষ করে শান্তিপূর্ণভাবে চলছে ভোট গ্রহণ। যেহেতু ইভিএমে ভোট গ্রহণ চলছে তাই প্রতিটি কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসারদের বলা আছে নির্বাচন শেষ হলে কেন্দ্রেই যেন ফলাফল প্রকাশ করা হয়। বিগত দিনেও কক্সবাজারে ইভিএমে সুষ্ঠুভাবে ভোট সম্পন্ন হয়েছে এবারও একটি সুষ্ঠু, সুন্দর এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে পারবো বলে মনে করি।’
পৌরসভার ১২টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার ৯৫ হাজার ৩৮৬ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৫০ হাজার ১৮৪ জন ও নারী ভোটার ৪৫ হাজার ২০২ জন।
নয়াশতাব্দী/এমটি
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ