ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিআইডব্লিউটিএ কর্মচারী ইউনিয়নের দ্বি-বার্ষিক সাধারণ সভা ২২ জুন

প্রকাশনার সময়: ১১ জুন ২০২৩, ১৮:০৯

বিআইডব্লিউটিএ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের (নিবন্ধন নং ২১৭৬) নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের লক্ষ্যে সংগঠনটির দ্বি-বার্ষিক সাধারণ সভা ডাকা হয়েছে। আগামী ২২ জুন রাজধানী ঢাকার পুরানা পল্টনের কালভার্ট সড়ক সংলগ্ন প্রীতম জামান টাওয়ারের তৃতীয় তলায় এ সভা অনুষ্ঠিত হবে।

সভায় নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন, আয়-ব্যয়ের হিসাব পর্যালোচনা ও সাংগঠনিক গুরুত্বপূর্ণ কিছু সিদ্ধান্ত অনুমোদনসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে বলে শ্রম অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে। সভায় একজন প্রতিনিধি পাঠানোর জন্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে চিঠি দিয়ে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এ দিকে সাধারণ সভাকে সামনে রেখে শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সকল শাখা কমিটি বিলুপ্ত করার বিষয়ে প্রশাসনিক সহায়তা চেয়ে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যানকে গত ৮ জুন আলাদা চিঠি দেয়া হয়েছে। শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান বরাবর লেখা দুটি চিঠিতেই স্বাক্ষর করেছেন সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব কুমার দাস।

সংগঠনের ব্যাংক হিসেবে লেনদেন সংক্রান্ত বিষয়ে ব্যবস্থাগ্রহণের জন্য এসআইবিএল ব্যাংকের মতিঝিলস্থ ফরেন এক্সচেঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপককে চিঠির অনুলিপি দেয়া হয়েছে। এছাড়া আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে চিঠির অনুলিপি দেয়া হয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের মতিঝিল ও পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ২০১৬ সালে শ্রম অধিদপ্তরে নিবন্ধিত হওয়ার পর থেকে সংগঠনটি বিআইডব্লিউটিএর শ্রমিক কর্মচারীদের পক্ষে কালেক্টিভ বার্গেইনিং এজেন্টের (সিবিএ) দায়িত্ব পালন করে আসছে। শ্রম নীতিমালা ও সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, প্রতি দুই বছর পর দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভা ও নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব গঠনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে গত সাড়ে সাত বছরে নির্বাচন কিংবা প্রকাশ্যে কোনো সাধারণ সভাও হয়নি।

অন্যদিকে, শ্রম আইনে কোনো সরকারি সংস্থায় সিবিএর দায়িত্বপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্ব গঠনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। প্রতি দুই বছর পর এই নির্বাচন হবে এবং এতে ওই সংস্থায় ক্রিয়াশীল ও শ্রম অধিদপ্তরে নিবন্ধিত সংগঠনগুলো অংশগ্রহণ করবে। কিন্তু বিআইডব্লিউটিএতে কোনো নির্বাচন ছাড়াই সিবিএর দায়িত্ব পালন করছে বিআইডব্লিউটিএ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, সংগঠনটির নেতারা গত প্রায় আট বছর ধরে বিভিন্নভাবে শ্রম আইন ও সংশ্লিষ্ট বিধিমালা ভঙ্গ করে আসছেন। তারা মেয়াদোত্তির্ণ কমিটির মাধ্যমে মূল সংগঠন চালাচ্ছেন। কমিটির কোনো সদস্য অবসরে কিংবা মারা গেলে শুন্য পদে নিজেদের পছন্দের একজনকে বসিয়ে দিচ্ছেন। আবার কোনো সদস্য কখনো বড় নেতাদের বিরাগভাজন হলে তাকে সংগঠন থেকে বহিস্কার করছেন এবং সেই শুন্য পদেও বসাচ্ছেন পছন্দের আরেকজনকে।

বিধিমালায় বলা আছে, শ্রম অধিদপ্তররের অনুমতি সাপেক্ষে সংস্থার একজন প্রতিনিধির উপস্থিতিতে শুন্য পদ পূরণের প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। কিন্তু সংগঠনের নেতারা কোনো আইন বা বিধিবিধানের তোয়াক্কাই করছেন না। এছাড়া সংগঠনটির বর্তমান নেতৃত্ব দীর্ঘদিন নির্বাচন ছাড়াই বিআইডব্লিউটিএতে সিবিএর দায়িত্ব পালন করে আসছেন। অথচ এসব সিবিএ নেতার অনেকেই বিভিন্ন সময়ে শ্রম আইন ও শ্রম বিধিমালা লঙ্ঘন করে অধিক গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো দখল করেছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিআইডব্লিউটিএর বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারী বলেন, সিবিএ নেতাদের দাপটে সংস্থার সাধারণ কর্মচারীরা অতিষ্ঠ। তাদের মাঝে এ নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ ও হতাশা রয়েছে। কিন্তু মেয়াত্তির্ণ সিবিএ নেতাদের ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পান না।

জানতে চাইলে সংগঠনের নানা অনিয়ম ও নির্বাচন ছাড়া প্রায় আট বছর সিবিএর দায়িত্ব পালনের কথা স্বীকার করেন বিআইডব্লিউটিএ শ্রমিক কর্মচারি ইউনিয়নের (নিবন্ধন নং ২১৭৬) ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব কুমার দাস। তবে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে তিনি বলেন, এতোদিন আমি সংগঠনের ১ নং যুগ্ম সম্পাদক থাকায় নির্বাহী কর্তৃত্ব ছিলো সাধারণ সম্পাদকের হাতে। তিনি চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ায় এখন আমি ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক। এ দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েই ২২ জুন সাধারণ সভা ডেকেছি।

সঞ্জীব কুমার দাস আরো বলেন, দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভার আগেই সংগঠনের শাখা কমিটিগুলো বিলুপ্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং এ বিষয়ে শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান মহোদয়কে অবহিত করে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক সহায়তা চেয়েছি। সংগঠনের নাম ব্যবহার করে কেউ ভবিষ্যতে বেআইনি কাজ করতে পারবে না বলেও মন্তব্য করেন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক।

নয়াশতাব্দী/জেডএম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ