নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে সনমান্দী ইউনিয়নে অলিপুরা থেকে সনমান্দী প্রায় ৩ কিলোমিটার খাল খননে হাজারো কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাজালেরকান্দি, কান্দাপাড়া, মারবদী, বৈদ্যারকান্দি, ছনকান্দা, কাফাইয়াকান্দা, বাবুরকান্দি, গোপেরবাগ, সনমান্দী, মহেশ্বরদী, খৈতারগাঁ, ফতেহপুর দড়িকান্দির আট শতাধিক কৃষক ১ হাজার বিঘা জমি চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। তবে পানি দেওয়ার বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় জমি চাষের পর ফাল্গুন-চৈত্র মাসের শেষের দিকে বৃষ্টির জন্য কৃষকদের অপেক্ষা করতে হয়। আবার বৈশাখে ঝড়-বৃষ্টিতে তাদের কষ্টার্জিত ফসল বাড়িতে নিতেও অনেক সমস্যা দেখা দেয়।
দীর্ঘ দিন ধরে তাদের এমন দুর্ভোগ দেখে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা ও সনমান্দী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহিদ হাসান জিন্নাহর সহযোগিতায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ক্ষুদ্রাকার পানি সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের (২য় পর্যায়) খাল খনন করা হয়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ক্ষুদ্রাকার পানি সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের (২য় পর্যায়) এলজিইডির আওতায় অলিপুরা খাল পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লি. এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে খাল খননের কাজ করা হয়।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখন আর জমিতে পানি দেওয়ার জন্য বৃষ্টির অপেক্ষা করতে হবে না। খাল খননের ফলে খালে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি থাকবে। ফলে কৃষকরা সহজেই জমিতে পানি দিতে পারবেন।
সনমান্দী গ্রামের কৃষক মো. স্বপন মিয়া বলেন, খাল খননের মাধ্যমে আমাদের জমিতে এখন পানি দিতে কোনো সমস্যা হবে না।
ছনকান্দা গ্রামের কৃষক আফাজউদ্দিন বলেন, খাল খনন প্রকল্পের কারণে এখন আর জমিতে পানির অভাব হবে না। দু’পাড়ে রাস্তা হওয়ার কারণে পাতাটেঙ্গা (বিল) থেকে ধান আনতে অসুবিধা হবে না। এখন ট্রলির মাধ্যমেও ধান আনতে পারব।
অলিপুরা খাল পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির কোষাধ্যক্ষ আনিসুর রহমান রাসেল বলেন, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ক্ষুদ্রাকার পানি সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের (২য় পর্যায়) এলজিইডির প্রায় ৫৪ লাখ টাকায় অলিপুরা থেকে সনমান্দীর খাল খনন করা হয়।
সোনারগাঁও উপজেলা প্রকৌশলী আরজুরুল হক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সনমান্দীসহ আশপাশে প্রায় ২০ গ্রামের কৃষকরা পানির অভাবে দুশ্চিন্তায় থাকতো। ধান বের হওয়ার সময় পানির অভাবে অধিকাংশ ধানেই চিটা হতো। এ বিষয়ে গ্রামের লোকজন আমাদের কাছে সহযোগিতা চেয়েছিল। খাল খননের মাধ্যমে এলাকার দীর্ঘদিনের এ সমস্যা দূর হয়ে যাবে। উপকৃত হবে দু’পাড়ের ৩০ হাজার মানুষ।
সনমান্দী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহিদ হাসান জিন্নাহ বলেন, সনমান্দী ও আশপাশের গ্রামের কৃষকদের পানির সমস্যা ছিল বছরের পর বছর ধরে। আমি দ্বিতীয়বার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পরে কৃষকদের কথা চিন্তা করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ক্ষুদ্রাকার পানি সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের (২য় পর্যায়) এলজিইডির মাধ্যমে প্রকল্প দাখিল করে খাল খনন করতে পারায় কৃষকদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ করতে সক্ষম হয়েছি।
নয়া শতাব্দী/এসআর/আরআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ