ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

মোখার প্রভাবে সেন্টমার্টিনে বৃষ্টির সঙ্গে দমকা হাওয়া বেড়েছে

প্রকাশনার সময়: ১৪ মে ২০২৩, ১১:১৭ | আপডেট: ১৪ মে ২০২৩, ১১:১৯

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে সেন্টমার্টিন দ্বীপে বৃষ্টির সঙ্গে দমকা হাওয়া বাড়তে শুরু করেছে। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪ থেকে ৬ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হচ্ছে সেন্টমার্টিনের নিন্ম এলাকাগুলো।

রোববার (১৪ মে) সকাল থেকে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ কত কিলোমিটার পর্যন্ত উঠছে তা বলতে না পারলেও বর্তমান পরিস্থিতি ভালো নয় বলে জানিয়েছেন সেখানকার স্থানীয়রা। সকাল থেকে দ্বীপটিতে বৃষ্টির সঙ্গে দমকা হাওয়া বইতে দেখা গেছে প্রতিবেদকের হাতে আসা কয়েকটি ভিডিওতে।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, মধ্যরাত থেকে হালকা বাতাস ও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল। সকালে দমকা হাওয়া বইতে শুরু করেছে। সেইসঙ্গে বৃষ্টিও বেড়েছে। সাগর উত্তাল রয়েছে। জোয়ারের পানিও বেড়েছে।

এই ঝড়ের কারণে গতকাল শনিবার সেন্টমার্টিনের যেসব বাসিন্দা আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছিলেন, তারা এখনো সেখানে রয়েছেন বলে জানান চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান।

তিনি আরও বলেন, দ্বীপের অধিকাংশ বাসিন্দাই আশ্রয়কেন্দ্রগুলোয় অবস্থান নিয়েছেন। গতকাল বিকেল থেকেই বিভিন্ন এলাকার নারী-পুরুষ ও শিশুরা দল বেঁধে তিনটি আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়াও ৩৭টি হোটেল, রিসোর্ট ও বহুতল ভবনে আশ্রয় নিতে শুরু করেন। আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা ব্যক্তিরা বিপদ থেকে মুক্তির জন্য সারা রাত দোয়া প্রার্থনা করেছেন।

সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা আব্দুল মালেক রোববার (১৪ মে) সকালে দেওয়া তার ফেইসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, বাতাসের তীব্রতা বেড়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে পর্যাপ্ত ওয়াশরুম ও পানি না থাকার কারণে ঝুঁকি নিয়ে সকালে নিজ নিজ ঘরে ফিরে যাচ্ছে অনেকেই। জোয়ারের পানি প্রায় ৪/৫ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। সকাল থেকে সাগর প্রচণ্ড উত্তাল। সাথে হালকা ও হঠাৎ হঠাৎ ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বাতাসের গতি উত্তর-পূর্ব দিক থেকে এসে মাঝেমাঝে দিক পরিবর্তন হচ্ছে। বিদ্যুৎ না থাকার কারণে অনেকের মোবাইল ফোন বন্ধ হয়ে গেছে। মহাবিপদ সংকেত ১০ থেকে এখনও ১১ তে রয়ে গেছে। সবার কথা একটাই, মন থেকে আতঙ্ক দূর হচ্ছে না। তিনি সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন।

জানা গেছে, শক্তিশালী এই ঘূর্ণিঝড়ে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে সেন্টমার্টিন দ্বীপটি।

এই ঝড় নিয়ে উৎকণ্ঠার এক রাত পার করেছেন সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দারা। দ্বীপের বিভিন্ন গ্রাম থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নেওয়া লোকজন আতঙ্কে সময় পার করছেন। সেন্টমার্টিন হাসপাতালে আশ্রয় নেওয়া আলী আহমদ বলেন, দ্বীপের মানুষের ভাগ্যে কী আছে, আল্লাহ ছাড়া কেউ বলতে পারে না। শুধু আমি নই, আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা কেউ রাতে ঘুমাতে পারেননি। সবাই জেগে জেগে রাত পার করেছেন।

আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য মতে, অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ১৯০ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়া আকারে ২১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে।

এর আগে শনিবার (১৩ মে) কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে জানিয়েছেন, ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন ও আামেরিকার পূর্বাভাস মডেল দুইটি নির্দেশ করছে, মোখা স্থলভাগের প্রথম যে স্থানটিতে আঘাত করবে তা হলো সেন্টমার্টিন।

আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে সেন্টমার্টিন দ্বীপ। অধিদফতরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান বলেন, টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। সেন্টমার্টিন অনেক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে, যেহেতু এটা টেকনাফের দক্ষিণে পড়েছে। এদিক দিয়েই ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র অতিক্রম করবে। এ এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা তাই সবচেয়ে বেশি। কক্সবাজার পুরো জেলাই আসলে ঝুঁকি বা ক্ষয়ক্ষতির আওতায় থাকবে।

নয়া শতাব্দী/আরআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ