ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

দুই বছর ভাঙা সেতু দিয়ে ঝুঁকিতে পারাপার

প্রকাশনার সময়: ০৮ মে ২০২৩, ২১:১০

নড়াইল ও মাগুরা জেলার সংযোগ সড়কের অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি সেতু লোহাগড়া উপজেলার লাহুড়িয়ার ঝামারঘোপ খালের উপর নির্মিত ঝামারঘোপ সেতু। যা দুই বছর আগে সেতুর মাঝখানে ভেঙে যায়। কোনো ধরনের সংস্কার না করায় ভাঙা সেতু দিয়ে প্রতিদিনই আতঙ্ক এবং ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে হাজারো মানুষ। যেকোন সময় সেতুটি ধসে পড়ে প্রাণহানি ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কয়েক বছর ধরে সেতুর একপ্রান্তে অর্ধেক জায়গাজুড়ে ধসে যেতে থাকে। ধীরে ধীরে পুরো জায়গায় গর্ত হয়ে ভিতরের রড বের হয়ে পড়ে। দুই বছর আগে একটি ট্রাক চলতে গিয়ে হেলে পড়ে সেতুটি। এরপর স্থানীয়রা গর্ত হওয়া স্থানে কয়েকটি কাঠের বড় তক্তা দিয়ে ইজিবাইক, ভ্যান আর কৃষিপণ্য ঘোড়ার গাড়িতে পারাপার করছেন। নসিমন আর ভটভটি চললে কাঁপতে খাকে সেতুটি, তবুও বাধ্য হয়েই চলছে পারাপার।

সেতুর তলদেশের অবস্থা আরও ভয়াবহ। ইটের উপর দাঁড়িয়ে থাকা সেতুর নিচের দুটো গার্ডার এর একটি ধসে একদিকে হেলে পড়েছে। পিলারের ইটগুলো খুলে পড়ছে।

স্থানীয় কৃষক রহমত আলী জানান, এপাশের জমির ধান কেটে ঘোড়ারগাড়ি করে বাড়িতে নিতে হয়। প্রতিদিনই ছোট খাট দুর্ঘটনা ঘটে। ভয় লাগে কখন জানি ব্রিজ ভেঙে নিচে পড়ে যাই, তবুও যেতে হয়।

খলিশাখালি গ্রামের ব্যবসায়ী আকবর মৃধা বলেন, এ ব্রিজ ভাঙা থাকায় আমাদের মিঠাপুর হাটে যেতে গেলে নোহাটা ঘুরে ৮ কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিয়ে যেতে হয়। আমাদের এই দুর্দশা দেখার যেন কেউ নেই।

স্থানীয় যুবক ইসলাম বলেন, আমরা নিজেরাই চলাচলের জন্য কাঠ দিয়েছি। চেয়ারম্যান আর এলাকার বড় নেতাদের জানানো হয়েছে। কেউ কোনো খেয়ালই করেন না এদিকে। আমাদের কোনো নেতা আছে বলে মনে হয় না।

ঝামারঘোপ গ্রামের খলিশাখালী প্রাইমারি স্কুলের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র বিল্টু দাস জানায়, আমরা ভয়ে ভয়ে ব্রিজ পার হয়ে স্কুলে যাই। অনেক সময় ভ্যানও যেতে চায় না তাই হেঁটেই যেতে হয়।

জন প্রতিনিধিরা খোঁজ রাখেন না এমন প্রশ্নের জবাবে লোহাগড়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সিকদার হান্নান রুনু বলেন, এটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। আমরা সকলকে জানিয়েছি। সরকারি কাজ তো কচ্ছপের গতিতে চলে।

স্থানীয় সরকার বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০০১ সালে স্থানীয় সরকার বিভাগের উদ্যোগে ঝামারঘোপ খালের উপর নির্মিত হয় ১৩ মিটার দৈর্ঘের ছোট্ট এ সেতু। স্থানীয় উপজেলা প্রকৌশলী বিভাগ ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি ঘুরে দেখে ছবি তুলে বিভিন্ন দপ্তরে পাঠিয়েছেন।

সেতুর ঝুঁকির কথা স্বীকার করে এলজিইডি লোহাগড়া উপজেলা প্রকৌশলী কাজী আবু সাঈদ মো. জসীম বলেন, আমরা বন্ধ করে দিতে চেয়েছিলাম কিন্ত চেয়ারম্যানসহ স্থানীয়দের চাহিদায় ধান মৌসুম পর্যন্ত রাখা হবে। প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে, নতুন ব্রিজ হতে সময় লাগবে।

নয়াশতাব্দী/এসআর/এফআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ