নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার সনমান্দি ইউনিয়নের সনমান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে অলিপুরা বাজার পর্যন্ত সড়কের কাজ নিয়ে অবহেলা তৈরি হয়েছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের। দরপত্র অনুযায়ী সড়কটির পাকা করার কাজ শেষ করার কথা ছিল ২ বছর আগে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কাজ হয়েছে মাত্র চার ভাগের এক ভাগ। এর মধ্যে সড়কটির বিভিন্ন জায়গায় তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। ফলে যানবাহন চলাচলে সড়কটি একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
তথ্য বলছে, সড়কের খোঁজ খবর নিচ্ছে না ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এতে ভোগান্তির শেষ নেই ১০ গ্রামের অন্তত ২৭ হাজার বাসিন্দার।
জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অধীন বৃহত্তর ঢাকা গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প-৩ এর অধীন সড়কটি পাকা করার কাজ চলছে। এলজিইডির নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী দরপত্র আহ্বান করেন ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর। ২০২১ সালের ২৫ মার্চ কাজ শেষ করার সময় বেঁধে দেওয়া হয়। কাজটির প্রাক্কলন ব্যয় ধরা হয় ২ কোটি ৯৯ লাখ ৯২ হাজার টাকা। কাজটির কার্যাদেশ দেওয়া হয় এস সরকার এন্টারপ্রাইজ' নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে।
সূত্রে জানা যায়, কার্যাদেশ অনুযায়ী কাজটি শেষ করার বেঁধে দেওয়া সময়ের ২ বছরের বেশি অতিবাহিত হয়েছে। অথচ পুরো কাজের মাত্র ৩০ শতাংশ শেষ হয়েছে। ইতোমধ্যে ঠিকাদার প্রথম চলতি বিল উঠিয়ে নিয়েছেন।
সনমান্দি অলিপুরা সড়কে সরেজমিন দেখা যায়, সড়কটিতে কোনো যানবাহন চলছে না। বড় বড় গর্তের কারণে চলার সুযোগও নেই।
স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, সড়কটি নির্মাণে ধীরগতি চলছে। কাজটি ফেলে ঠিকাদার চলে গেছেন।পশ্চিম সনমান্দি গ্রামের আব্দুল মালেক মেম্বার বলেন, ‘২ বছর আগেই এ সড়কের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ ফেলে চলে গেছে। এ ছাড়া সড়কটি নির্মাণে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের সামগ্রী।’
এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী আরজুরুল হক বলেন, ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে একাধিকবার লিখিতভাবে নোটিশ দেওয়া হলেও কাজ সম্পন্ন করেনি।’
দৈনিক নয়া শতাব্দী পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের লাইসেন্স এক বছরের জন্য বাতিল করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) লাইসেন্স বাতিলের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রকৌশলী শেখ তাইজুল ইসলাম তুহিন। এর আগেই রাস্তার কাজ স্থগিত করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রকৌশলী অধিদপ্তর।
তিনি বলেন, ‘উপজেলার অলিপুরা থেকে সনমান্দী প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণের কাজে অবহেলা ও সময়মতো শেষ না করার কারণে এস সরকার এন্টারপ্রাইজ নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স এক বছরের জন্য বাতিল করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘কাজে অবহেলা ও সময়মতো কাজ শেষ না করা হলে ওই সকল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে এখন থেকে বিভিন্ন মেয়াদে লাইসেন্স বাতিল করা হবে।’
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মাহাবুব হোসেন রন্টু বলেন, ‘লাইসেন্স বাতিলের চিঠি এখনও পাইনি। এর আগেও একবার জয়েন্ট চুক্তিতে কাজ করার সময় পার্টনারের অসঙ্গতিপূর্ণ কাগজপত্র দাখিল করায় এক বছরের জন্য লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছিল। পরে কাগজপত্র দাখিল করে সঠিক করে নেই।’
নয়াশতাব্দী/এমটি
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ