ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

রামুতে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহারের চাল মুদি দোকানে

প্রকাশনার সময়: ১৯ এপ্রিল ২০২৩, ১১:৪৪

কক্সবাজারের রামুর কাউয়ারখোপ বাজারের একটি মুদি দোকান থেকে ৪ বস্তা সরকারি চাল জব্দ করা হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে দেয়া ভিজিএফ’র চাল চুরি করে এনে মুদি দোকানে বিক্রি করা হচ্ছিল।

মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) উপজেলার কাউয়ারখোপ বাজারের ইউনিয়ন পরিষদের সাথে লাগোয়া হাসান এন্টারপ্রাইজ নামের একটি দোকান থেকে চালগুলো জব্দ করা হয়।

অভিযোগ উঠেছে, ইউপি চেয়ারম্যান শামশুল আলমের সহযোগিতায় সরকারি চাউলগুলো বিক্রি করেছেন দফাদার ছৈয়দ আলম। এছাড়া সরকারি অধিকাংশ বরাদ্দের চাল প্রকৃত উপকার ভোগীদের না দিয়ে বিভিন্নভাবে বিক্রি হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে চেয়ারম্যান শামশুল আলম ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে।

খবরটি জানাজানি হয়ে গেলে মঙ্গলবার বিকেলে বিষয়টি নজরে আসে রামু উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও ফাহমিদা মুস্তফার। পরে তিনি চালগুলো উদ্ধার করেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, গভীর রাতে বিক্রির উদ্দেশ্যে আরও ৪০ বস্তা চাউল পরিষদের গোডাউনে মজুত করে রেখেছিলেন। অথচ হতদরিদ্র অনেককে চাউল শেষ হয়েছে জানিয়ে খালি হাতে ফিরিয়ে দিয়েছেন দফাদার ও প্যানেল চেয়ারম্যান কায়েস উদ্দিন।

দোকান মালিকের ছেলে হাসান বলেন, গত রবিবার সকালে কাউয়ারখোপ ইউনিয়ন পরিষদের দফাদার ছৈয়দ আলম এসে এই ৪ বস্তা চাউল ৭ হাজার ২ টাকায় বিক্রি করেছেন তার কাছে।

স্থানীয়রা জানান, কিছু অসাধু লোক ইউপি চেয়ারম্যান ও দফাদারের সঙ্গে যোগসাজশের মাধ্যমে রাতে ওই চাল ইউনিয়ন পরিষদে গুদামজাত না করে সরিয়ে ফেলে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেন দফাদার ছৈয়দ আলম ও ইউপি চেয়ারম্যান শামশুল আলম।

ইউপি ইউপি চেয়ারম্যান শামশুল আলম বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা। আমি বিভিন্ন কারণে পরিষদেও যাচ্ছি না কয়েকমাস ধরে। তার দাবি, তার পরিষদের গোডাউনে যাবতীয় চাল মজুত রয়েছে। তাহলে মুদির দোকানে সরকারি চাউল এলো কীভাবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোনো সদোত্তর দিতে পারেননি।

জানা যায়, হাসান এন্টারপ্রাইজ নামের একটি দোকানে সরকারি প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার (ভিজিএফ) চাল রয়েছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে ইউএনও ফাহমিদা মুস্তফা চাউলগুলো জব্দ করতে পাঠান অফিস সহায়ক জনি বড়ুয়াকে। তিনি ওই দোকান থেকে সরকারি স্টিকার যুক্ত ৪ বস্তা চাল জব্দ করে নিয়ে যান।

জনি বড়ুয়া বলেন, ইউএনও স্যারের নির্দেশনায় ওই দোকান থেকে ৪ বস্তা সরকারি চাউল জব্দ করে উপজেলায় নিয়ে আসা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার একাধিক দরিদ্র উপকারভোগী অভিযোগ করে বলেন, চেয়ারম্যান ও দাফাদার এভাবে সরকারি অনেক পণ্যই গোপনে বিক্রি করে থাকেন। তার প্রমাণ এই ঘটনা।

তারা আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার হিসেবে ১০ কেজি চাল সঠিকভাবে বিতরণ করার কথা। কিন্তু বাজারের দোকানের এসব চাল পাওয়ার বিষয়টি রহস্যজনক। অনেক দারিদ্র উপকারভোগীকে চাল শেষ হওয়ার কথা বলে তারা খালি হাতে ফিরিয়ে দিয়েছে। এখন এসব বস্তাবন্দি চাল এই দোকানের গোডাউনে আসল কীভাবে? নিয়মানুযায়ী সরকার ঘোষিত এসব চাল নির্ধারিত লোকজনকে দেওয়ার কথা ছিল। তাদের রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে কেউ কিছু বলতে পারে না।

এবিষয়ে রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহমিদা মুস্তফার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

নয়া শতাব্দী/আরআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ