ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুতের জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হলো দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া

প্রকাশনার সময়: ১৩ এপ্রিল ২০২৩, ১৫:৪৬

বঙ্গোপসাগর বেষ্টিত কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া বিদ্যুতের জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে এই দ্বীপে প্রথমবারের মতো বিদ্যুৎ পৌঁছাল। এর মধ্যে দিয়ে স্বাধীনতার ৫২ বছর পর বুধবার রাত থেকে দ্বীপটির মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পেতে শুরু করেছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে বিদ্যুৎ সংযোগের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক।

প্রকল্পটির পরিচালক ও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. ফারুক আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বুধবার রাত থেকে দ্বীপটিতে জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ পৌঁছে গেছে। প্রাথমিকভাবে দেড় হাজার গ্রাহককে এ সুবিধা সরবরাহ করা হয়েছে। দ্বীপটিতে ১৯৮০ সালে জেনারেটরের মাধ্যমে সান্ধ্যকালীন কয়েক ঘণ্টার জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা ছিল। ওই দেড় হাজার গ্রাহককে প্রাথমিকভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। নতুন করে গ্রাহকদের আবেদন করতে বলা হয়েছে। আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০ হাজার গ্রাহককে পর্যায়ক্রমে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করা হবে।

তিনি বলেন, প্রকল্পের অধীনে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুতের জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে কুতুবদিয়া। কুতুবদিয়ায় বিদ্যুৎ নিতে সাগরতলে দুই লেনে গেছে দীর্ঘ ছয় কিলোমিটার ক্যাবল। সেখানে ১২ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন উপকেন্দ্র, ৭২০ কিলোমিটার সঞ্চালন বিতরণ স্থাপন হয়েছে।

এছাড়া প্রকল্পটির আওতায় নোয়াখালীর হাতিয়া দ্বীপে তিনটি সাবস্টেশন নির্মাণ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। হাতিয়া থেকে ১১ কেভি সাবমেরিন লাইনের মাধ্যমে নিঝুম দ্বীপে বিদ্যুৎ নেওয়া হবে।

ফারুক আহমেদ বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে যারা এ ধরনের প্রকল্পের কথা চিন্তাও করেনি, তা প্রধানমন্ত্রী বাস্তবায়ন করলেন। প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতায় এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হয়েছে। কুতুবদিয়ায় সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগ দ্বীপবাসীর জন্য একটি স্বপ্নপূরণ। তাই কুতুবদিয়াবাসীর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই।

২১৫ দশমিক ৮০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ায় বর্তমানে দেড় লাখের অধিক মানুষের বসবাস। ছয়টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এ উপজেলায় ১৯৮০ সালে জেনারেটরের মাধ্যমে সান্ধ্যকালীন কয়েক ঘণ্টার জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের পর তা বন্ধ হয়ে যায়।

পরে স্বল্প পরিসরে জেনারেটরের মাধ্যমে উপজেলা সদর ও তার নিকটের এলাকায় সন্ধ্যার পর কয়েক ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু রাখে পিডিবি। ২০০৮ সালে কুতুবদিয়ায় বায়ু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হলেও তা কার্যত কাজে আসেনি।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালে দেশের শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনতে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে সরকার। ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘হাতিয়া দ্বীপ, নিঝুম দ্বীপ ও কুতুবদিয়া দ্বীপ শতভাগ নির্ভরযোগ্য ও টেকসই বিদ্যুতায়ন’ প্রকল্পটির মেয়াদকাল ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের আগেই দ্বীপটিতে পৌঁছে গেল জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুৎ।

নয়া শতাব্দী/আরআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ